ক্রিকেটারদের প্রশ্ন মাশরাফির উত্তর


প্রকাশিত: ০৯:৪২ এএম, ১৮ জানুয়ারি ২০১৬

বাংলাদেশ জাতীয় ক্রিকেট দলের রঙিন জার্সির অধিনায়ক মাশরাফি বিন মর্তুজার আত্মজীবনী মূলক বইয়ের মোড়ক উন্মোচন করা হয় সোমবার। এই মোড়ক উন্মোচন অনুষ্ঠানে বসেছিল বাংলাদেশ দলের জাতীয় ক্রিকেটারদের মিলন মেলা। এ সময় নিজের জীবন নিয়ে নানা কথা বলেন অধিনায়ক। এছাড়াও তার জীবনের কিছু ঘটনা নিয়ে কথা বলেন তামিম, রিয়াদ, সুজন, হাতুরুসিংহেসহ অনেকেই। অনুষ্ঠানের এক পর্যায়ে ছিল বিশেষ সংবাদ সম্মেলন। যেখানে ক্রিকেটাররা প্রশ্ন করবে আর মাশরাফি উত্তর দিবে। জাগোনিউজের পাঠকদের জন্য সেই প্রশ্নোত্তর পর্বটি পুরো তুলে ধরা হলো।

ইমরুল কায়েস : আপনার জীবন নিয়ে বই লিখলে তো আরও দুই তিনটা বই লিখা যাবে কিন্তু আমার প্রশ্ন হচ্ছে আপনার ক্রিকেট ক্যারিয়ার শেষে আপনার নিজের কোন ইচ্ছা আছে বই লেখার?

মাশরাফি : হ্যাঁ, ইচ্ছা আছে। অবশ্যই আছে। সেটা এখনও শুরু করিনি তবে আসবে।

তাসকিন আহমেদ : ভাই আপনি কি কখনো চিন্তা করছিলেন যে এই রকম একটা অবস্থানে আসতে পাড়বেন বা আপনাকে নিয়ে বই লেখা হবে?

মাশরাফি : হেই হিরো। তোমাকে নিয়ে আরও বড় বই লেখা হবে ইনশাল্লাহ।

মারিও ভিল্লাভারায়েন : জীবনের এতগুলো কঠিন অধ্যায় পার করার পর সবাইকে একটু বলেন কিভাবে সেই মুহূর্তগুলো কাটিয়েছেন? কিভাবে আবার ক্রিকেটে ফিরে আসলেন?

mashrafi
মাশরাফি : এটা খুব কঠিন ছিল। ২০০৬ সালের আগে বাংলাদেশে কোন জিম ছিল না, অন্য সুবিধাও ছিল না। আমি প্রথম ইনজুরিতে পারি ২০০১ সালে, এটা খুব কঠিন ছিল। তখন এতো ফিজিও ছিল না, ট্রেনার ছিল না। আমি অস্ট্রেলিয়াতে অপারেশন করানোর পর বাংলাদেশে সব কাজ আমাকেই করতে হয়েছে। আমি নিজেও জানিনা কিভাবে তা করেছি। এরপর আমি ২০০৩ সালে আবার মাঠে ফিরি কিন্তু দুটি সিরিজ পরেই আবার ইনজুরিতে পরি। এরপর আমি আবার অস্ট্রেলিয়ায় যাই। সেবার দুটি অপারেশন হয়। এরপর আমি দেশে ফিরে আবারো নিজেই সব করি। কিন্তু আমি কিছুটা ভাগ্যবান ছিলাম ২০০৩ সালের পর থেকে ২০০৮ পর্যন্ত আমি স্বাধীনভাবে খেলতে পেরেছি, মানে কোন শরীরের উপর সংগ্রাম করতে হয়নি। ২০০৮ আমার জন্য জীবন অনেক বেশি কঠিন হয়ে যায়। সেবার আমি দুইবার ইনজুরিতে পরি। এরপর একই ঘটনা ঘটে ২০১১ সালে। সে ঘটনা আমি কোন দিনও ভুলতে পারবনা। বাংলাদেশে বিশ্বকাপ মিস করেছি। এর কিছুদিন পর আমি ভাবতে থাকি আমি বিশ্রাম নিব নাকি চালিয়ে যাব। এরপর শুনি যে আমাকে বাংলাদেশের হয়ে খেলতে বলা হয়েছে। এরপর আমি আবার জেগে উঠি। এই দুই মাস আমার জীবনে কোন আশাই ছিল না। আমার স্ত্রী তখন ক্লিনিক্যালি ডেথ ছিল। আর তখনি আমার মেয়ের জন্ম হয়। আমার জীবন তখন খুবই কঠিন হয়ে যায়। তখন আমি ক্রিকেট ছেড়ে দিতে চেয়েছিলাম তখন আমার পরিবারকে সময় দেওয়াও প্রয়োজন ছিল। এর দুই মাস পর আমি বুঝতে পারলাম ক্রিকেট ছাড়া আমি বাঁচতে পারবো না। এর পরের দিন সকালে আমি ঘুম থেকে উঠেই সোজা মাঠে যাই এবং খেলা শুরু করে দেই। তখন থেকেই আমি খেলছি এবং এখনও খেলে যাচ্ছি। আমি শুধু নবীনদের একটা কথা বলতে চাই, আমি কোন সুপারস্টার না তার পড়েও বলছি। আমি দেখেছি যদি তোমার বাংলাদেশের হয়ে খেলার সাহস থাকে তাহলে তোমার কঠিন সময় পার করার সাহস থাকতে হবে। কারণ খারাপ সময় আসতেই পারে তোমাকে তা থেকে হেরে গেলে চলবে না।

তামিম ইকবাল : আমি একটা জিনিস জানতে চাই আপনি তো অধিনায়ক। আপনাকে যখন আপনার দলের বাঁহাতি ওপেনার যে সবচেয়ে ভদ্র ছেলে বলেছিল আজকের জিম এগারোটার জায়গায় বারোটায় দিতে, যাতে আমি একটু ঘুমাইতে পারি। আমাকে বলছে না। আমি বললাম প্লিজ। তারপরও বললো না, কখনো, এগারোটায়। কোচ আপনি কি শুনছেন? এখন ১১টা ২২ বাজে। আপনি এখনও এখানে কেন?

মাশরাফি : আমার মনে হয় তুমি এই মুহূর্তগুলো উপভোগ করছ।

মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ : সোহেল ভাইকে নিয়ে যদি একটা গল্প বলতেন?

মাশরাফি : একটা ঘটনা বলি। একদিন মিরপুর স্টেডিয়ামে আমি গোসল করবো তো সোহেল ভাইকে বললাম, শ্যাম্পু নাই তো, আনতে ভুলে গেছি। সে বললো, ও ভাই ছেমপু। এরপর থেকেই খেলা শেষে আমরা বলি সোহেল ভাই ছেমপু দিয়ে গুছল না করলে ছমছ্যা হবে।  

আরটি/এমআর/আরআইপি

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।