নানা আয়োজনে কমরেড অমল সেনের মৃত্যুবার্ষিকী পালিত
কাকডাকা ভোরে জেগে ওঠে গোটা বাকড়ী এলাকা। প্রচণ্ড কুয়াশা আর কনকনে শীতকে উপেক্ষা করেই তেভাগা আন্দোলনের অন্যতম পুরোধা কমরেড অমল সেনের সমাধির সামনে তার অনুসারী ও ভক্তরা লাল পতাকা হাতে সমবেত হতে থাকেন। মুহূর্তের মধ্যে ফুলে ফুলে ছেয়ে যায় কমরেডের সমাধি। সারা দিনই লেগে ছিল অমল সেনের অনুরাগীদের এমন ভিড়।
রোববার বিকেল তিনটায় দিনব্যাপী নানা আয়োজনের মধ্য দিয়ে নড়াইল-যশোরের সীমান্তবর্তী বাকড়ী মাধ্যমিক বিদ্যালয় চত্বরে বরেণ্য নেতা অমল সেনের ১৩তম মৃত্যুবার্ষিকী উদযাপন করা হয়।
অমল সেন স্মৃতিরক্ষা পরিষদ এ উপলক্ষে দুই দিনব্যাপী মেলার আয়োজন করে। শিশুদের চিত্রাংকন প্রতিযোগিতা, আবৃতি, গণসঙ্গীত, গণনাটক, গণসংগ্রাম ভিত্তিক চলচ্চিত্র প্রদশর্নী, আলোচনা সভা, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান, চিত্র প্রদর্শনীর আয়োজন করা হয়।
বিভিন্ন সড়কের দু’পাশে কাস্তে-হাতুড়ি খচিত লাল পতাকা, স্থানীয় মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের স্কাউটস ও শিক্ষার্থীদের নেতার সমাধিতে লাল সালাম প্রদর্শনসহ জাতীয় নেতৃবৃন্দের সরব উপস্থিতি ছিল স্মরণীয় ঘটনা। বেশ কয়েকটি তোড়ণও নির্মাণ করা হয়।
বিকেল তিনটায় সরলা সিংহ মঞ্চে ইকবাল কবির জাহিদের সভাপতিত্বে প্রধান অতিথির বক্তব্য দেন বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক ফজলে হোসেন বাদশা এমপি।
বিশেষ অতিথি ছিলেন, নড়াইল-২ আসনের এমপি শেখ হাফিজুর রহমান, সাতক্ষীরা-১ আসনের এমপি মোস্তফা লুৎফুল্লাহ, ওয়ার্কার্স পার্টির পলিট ব্যুরোর সদস্য বিমল বিশ্বাস, আনিচুর রহমান মল্লিক, হাফিজুর রহমান ভূঁইয়া, সিপিবির প্রেসিডিয়াম সদস্য রুহিন হোসেন প্রিন্স, বাসদ নেতা রাজেকুজ্জামান রতন, গণতন্ত্রী পার্টি নেতা ডা. শহীদুল্লাহ, ন্যাপ নেতা এনামুল হক, জাসদের রবিউল ইসলাম ও কমিউনিস্ট পার্টির ডা. অসিত বরণ রায় প্রমুখ।
আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে ফজলে হোসেন বাদশা বলেন, বিপ্লবীর মৃত্যু নেই। জীবিত অমল সেনের চেয়ে মৃত অমল সেন অনেক শক্তিশালী। তার নীতি আদর্শই এ কথা একদিন প্রমাণ করে দেবে। অমল সেনের লালিত স্বপ্ন কৃষক-শ্রমিক, শ্রমজীবী, খেটে খাওয়া মানুষের ন্যায্য অধিকার প্রতিষ্ঠা আজো হয়নি।
বিমল বিশ্বাস বলেন, দেশ আজ সাম্প্রদায়িতা, লুটপাটতন্ত্র ও সাম্রাজ্যবাদের হাতে বন্দি। এ থেকে মুক্তি পেতে দুর্বৃত্তায়িত রাজনীতির বিপরীতে আদর্শবাদী রাজনীতিকে অগ্রসর করতে হবে।
সিপিবির প্রেসিডিয়াম সদস্য রুহিন হাসান বলেন, শোষনহীন সমাজ ব্যবস্থা আজো কায়েম হয়নি। তিনি বলেন, এই এখান এলাকার মানুষ একদিন অমল সেনের স্বপ্ন পূরণের পীঠস্থান হয়ে উঠবে।
হাফিজুল নিলু/এমএএস/আরআইপি