যানবাহন সংকটে ভোগান্তিতে মুসল্লিরা
এবারের বিশ্ব ইজতেমার দ্বিতীয় পর্বে উত্তরাঞ্চলের মুসল্লিই ছিল বেশি। তবে আখেরি মোনাজাত বলে কথা। নির্ধারিত জেলার মুসল্লিরা বাদে রাজধানীর নানা প্রান্ত থেকে আসা মুসল্লিরাও ফজরের নামাজ শেষে ছুটতে থাকেন ইজতেমা ময়দানের দিকে। অধিকাংশ যাত্রীকেই খিলক্ষেত এলাকা থেকে হেঁটেই রওনা দিতে হয়েছে তুরাগ তীরে।
ইজতেমায় উত্তরাঞ্চলের মুসল্লিরা তুরাগ তীরে এসেছিলেন লঞ্চ, বাস টার্মিনাল, ট্রেন স্টেশনগুলোতে। তবে আখেরি মোনজাত শেষে তাদের পড়তে হয় যানবাহন ভোগান্তিতে। বাড়ি ফেরার তাড়া নিয়ে ভিড় করছেন বিভিন্ন বাসস্ট্যান্ড ও টার্মিনালগুলোতে। তবে কাছের মুসল্লিরা পায়ে হেঁটেই রওনা হোন। অনেককে ভ্যান, রিকশা, অটোরিকশা, পিকআপ, ট্রাকে করে গন্তব্যের উদ্দেশ্যে রওনা হতেও দেখা গেছে।
মুসলিম উম্মার শান্তি সমৃদ্ধি কামনায় সকাল ১১টা ৪ মিনিটে এবারের ৫১তম বিশ্ব ইজতেমা আখেরি মোনাজাত শুরু হয়। শেষ হয় ১১ টা ৩২ মিনিটে। মোনজাত পরিচালনা করেন তাবলীগ জামাতের শীর্ষ আলেমদের একজন ভারতের মাওলানা মোহাম্মদ সাদ।
উত্তরার বিমানবন্দর এলাকা থেকে শুরু করে আব্দুল্লাহপুর, টঙ্গীর প্রধান সড়কসহ ইজতেমা ময়দানের আশপাশ এলাকায় লাখো মুসল্লি যে যেভাবে পেড়েছে মোনজাতে শরিক হয়েছে। মুসল্লিরা ঢাকা-ময়মনসিংহ বিশ্ব রোডের আব্দুল্লাহপুর থকে টঙ্গী ছাড়িয়ে প্রায় দুই কিলোমিটার রাস্তায় বসে অংশ নিয়েছেন মোনজাতে।
তবে আখেরি মোনাজাত শেষে রাস্তায় যানবাহন না পেয়ে ভোগান্তিতে পড়তে হয় মুসল্লিদের। সঙ্গে থাকা ব্যাগ-গাট্টি কাঁধে নিয়ে রওনা হন গন্তব্যের উদ্দেশ্যে। যানবাহন না পেয়ে ইজতেমা প্রাঙ্গণ থেকে বেশির ভাগ মুসল্লি হেঁটেই ছুটছেন গন্তব্যে।
ইজতেমায় আসা ফজলুল হক বলছেন, আসছি রংপুর থেকে। গাড়ি পার্কিং করেছি উত্তরার আত্মীয়ের বাসায়। কিন্তু এখন ইজতেমা ময়দান থেকে উত্তরা পর্যন্ত যাওয়াই অনেক কষ্টকর। যানবাহন নেই। কোনো যানবাহন এতো দূর আসতে দেয়া হয়নি। পায়ে হেঁটে ব্যাগ কাঁধে নিয়ে যাওয়া ছাড়া উপায় নেই।
তবে সান্তাহার থেকে আসা মুসল্লি ইমতিয়াজ হোসেন বলেন, ট্রেনে এসেছি, ট্রেনেই যাবো। জানি ট্রেনে বসার কেন দাড়ানোর জায়গাও হবে না। কিছু করার নেই। আল্লাহ গুনাহ মাফ করলেই বেশি খুশি হবো আমি। গুনাহ মাফের আশাতেই আখেরি মোনাজাত পর্যন্ত এখানে থাকা।
নিরাপত্তার স্বার্থে ও জনভোগান্তি দূর করতে দুই পর্বে আয়োজন করা হয় এবারের বিশ্ব ইজতেমা। প্রথম পর্ব চলে ৮, ৯ ও ১০ জানুয়ারি। এতে অংশ নেন দক্ষিণাঞ্চলের ১৬টি জেলা। দ্বিতীয় পর্বে ১৫ জানুয়ারি শুরু হয়। আজ আখেরি মোনাজাতের মধ্য দেয় শেষ হয় উত্তরাঞ্চলের ১৬টি জেলার মুসল্লিদের ইজতেমা। পুরো প্যান্ডেলকে ২৯টি খিত্তায় ভাগ করা হয়। নিরাপত্তা ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় ৬ হাজার র্যাব ও পোশাকধারী পুলিশের পাশাপাশি কাজ করে সাদা পোশাকের কয়েক হাজার গোয়েন্দা সদস্য।
জেইউ/জেডএইচ/এমএস