জার্মানির সঙ্গে ইউক্রেনের সম্পর্কে ‘ফাটল’

আন্তর্জাতিক ডেস্ক
আন্তর্জাতিক ডেস্ক আন্তর্জাতিক ডেস্ক
প্রকাশিত: ০৬:২১ পিএম, ১৪ এপ্রিল ২০২২

রাশিয়ার সঙ্গে যুদ্ধের মধ্যেই ইউরোপীয় মিত্র জার্মানির সঙ্গে কূটনৈতিক সংঘাতে জড়িয়েছে ইউক্রেন। জার্মান প্রেসিডেন্টের সম্ভাব্য কিয়েভ সফর বাতিল হওয়ায় দুই দেশের কূটনৈতিক মহলে যে অস্বস্তি সৃষ্টি হয়েছে, তাতে জার্মান চ্যান্সেলর শলৎসের ইউক্রেনে যাওয়ার সম্ভাবনাও ক্ষীণ হয়ে পড়ছে। রুশ হামলার মুখে ইউক্রেনীয়রা যখন সামরিক, অর্থনৈতিক ও নৈতিক সহায়তার জন্য পশ্চিমাদের ওপর পুরোপুরি নির্ভরশীল, ঠিক তখন জার্মানির মতো বৃহৎ প্রতিবেশীর সঙ্গে কূটনৈতিক সংঘাত কতটা কাম্য, তা নিয়ে জোর বিতর্ক শুরু হয়েছে। খবর ডয়েচে ভেলের।

সম্প্রতি জার্মান প্রেসিডেন্ট ফ্রাংক ভাল্টার স্টেইনমেয়ার কিয়েভ সফরে যাওয়ার আগ্রহপ্রকাশ করেছিলেন। কিন্তু পরে ইউক্রেন থেকে আমন্ত্রণ জানানো হয়নি জানিয়ে সেখানে তিনি নিজেকে ‘অবাঞ্ছিত’ বলে দাবি করেন। ফলে পোল্যান্ড ও বাল্টিক অঞ্চলের তিন দেশের রাষ্ট্রপ্রধানের সঙ্গে কিয়েভে যাওয়া হয়নি স্টেইনমেয়ারের।

রাষ্ট্রপ্রধানের প্রতি এমন ‘অবজ্ঞায়’ দলমত নির্বিশেষে জার্মানির রাজনৈতিক মহলে তীব্র প্রতিক্রিয়া দেখা গেছে। চ্যান্সেলর শলৎস বিষয়টিকে ‘বিরক্তিকর' বলে বর্ণনা করেছেন। তার মতে, স্টেইনমেয়ার কিয়েভ সফরে আগ্রহী ছিলেন। তাকে সেখানে স্বাগত জানালেই ভালো হতো। এ ঘটনার পর শলৎসের কিয়েভ সফর অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে।

জার্মান পররাষ্ট্রমন্ত্রী আনালেনা বেয়ারবকও জার্মান প্রেসিডেন্টের কিয়েভ সফর বাতিল হওয়ার বিষয়টি ভালো চোখে দেখছেন না। ভাইস চ্যান্সেলর রোব্যার্ট হাবেক বলেছেন, জার্মান প্রেসিডেন্ট মানেই জার্মানি। ভলোদিমির জেলেনস্কি তাকে আমন্ত্রণ না জানিয়ে কার্যত জার্মানিকেই অবাঞ্ছিত চিহ্নিত করেছেন।

জার্মানির সঙ্গে ইউক্রেনের সম্পর্কে ‘ফাটল’

ব্যাপক বিতর্কের মুখে শেষপর্যন্ত পরিস্থিতি সামাল দেওয়ার চেষ্টা করেছেন ইউক্রেনীয় প্রেসিডেন্ট জেলেনস্কি। তিনি দাবি করেছেন, বার্লিন থেকে জার্মান প্রেসিডেন্টের কিয়েভ সফর সম্পর্কে কোনো বার্তা তারা পাননি। গত বুধবার পোল্যান্ড, লাটভিয়া, লিথুয়ানিয়া ও এস্তোনিয়ার প্রেসিডেন্টদের স্বাগত জানানোর পর এক সংবাদ সম্মেলনে এই মন্তব্য করেন জেলেনস্কি। পোল্যান্ড অবশ্য জানিয়েছে, এই যৌথ সফর তারা আয়োজন করেছিল।

জার্মানি থেকে প্রত্যাশা অনুযায়ী যথেষ্ট সহায়তা না পাওয়ার বিষয়ে জেলেনস্কি প্রশাসন বহুবার হতাশা ও ক্ষোভ প্রকাশ করেছে। তাছাড়া রাশিয়ার প্রতি জার্মানি ‘অতি নরম’ মনোভাব দেখানোরও অভিযোগ তুলেছে ইউক্রেন। কিয়েভ সরকারের মতে, রাশিয়ার আগ্রাসনের মুখে ইউক্রেনীয় সেনাবাহিনীর জন্য যথেষ্ট পরিমাণে অস্ত্র ও সামরিক সরঞ্জাম সরবরাহ করছে না জার্মানি।

এমন অবস্থায় জার্মান প্রেসিডেন্টের মতো আলংকারিক পদমর্যাদার প্রতিনিধির বদলে সরকারপ্রধান হিসেবে জার্মান চ্যান্সেলরের কিয়েভ সফরে যাওয়া উচিত বলে ইঙ্গিত দিয়েছে ইউক্রেন সরকার। সেক্ষেত্রে শলৎস খালি হাতে নয়, বরং যথেষ্ট সহায়তা সঙ্গে নিয়ে যাবেন বলে আশা করছে কিয়েভ প্রশাসন।

কেএএ/জেআইএম

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।