৭১’র প্রেতাত্মারাই তাণ্ডব চালিয়েছিল : মোকতাদির চৌধুরী
১৯৭১ সালে যেসব রাজাকার-আলবদররা ধ্বংসযজ্ঞ চালিয়েছিল তাদের প্রেতাত্মারাই গত মঙ্গলবার ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় ধ্বংসযজ্ঞ চালিয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি ও ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর-৩ আসনের সংসদ সদস্য র.আ.ম উবায়দুল মোকতাদির চৌধুরী।
শুক্রবার বিকেলে শহরের আলাউদ্দিন খাঁ পৌর-মিলনায়তনে জেলা শিল্পকলা একাডেমি আয়োজিত এক সম্মাননা প্রদান অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ মন্তব্য করেন।
মোকতাদির চৌধুরী বলেন, বেজন্মা ও রাজাকার ছাড়া মুক্তিযোদ্ধা সংসদের কেউ হামলা চালাতে পারে না। যারা বাংলাদেশের সংস্কৃতি-কৃষ্টির বিরুদ্ধে এবং যারা এখনো পাকিস্তানি ভাবাদর্শ লালন-পালন করে আমরা তাদেরকে ধিক্কার জানাই।
তিনি বলেন, অস্বীকার করার কোনো উপায় নেই গত মঙ্গলবার যখন মাদ্রাসা ছাত্ররা তাণ্ডব চালাচ্ছিল তখন জেলা প্রশাসনের কর্তাব্যক্তিরা তাদের প্রতি নমনীয় ছিলেন। যাদের মধ্যে ন্যূনতম কোনো মনুষত্ববোধ নেই তাদের প্রতি কিসের নমনীয়তা। তিনি ভিডিও ফুজেট দেখে দোষীদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নিতে সরকারের প্রতি দাবি জানান।
এসময় মাদ্রাসা কর্তৃপক্ষকে নিজেরাই একটি তদন্ত কমিটি করে কারা এ তাণ্ডবের ঘটনায় জড়িত তাদেরকে চিহ্নিত করে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণেরও দাবি জানান সাংসদ মোকতাদির চৌধুরী।
জেলা প্রশাসক ও শিল্পকলা একাডেমির সভাপতি ড. মুহাম্মদ মোশাররফ হোসেনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন, জেলার ভারপ্রাপ্ত পুলিশ সুপার এম.এ মাসুদ, ব্রাহ্মণবাড়িয়া পৌরসভার মেয়র মো. হেলাল উদ্দিন, জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আল মামুন সরকার।
অনুষ্ঠানে স্ব-স্ব ক্ষেত্রে বিশেষ অবদানের জন্য জেলার পাঁচ গুণী শিল্পীকে সম্মাননা প্রদান করা হয়। সম্মাননা প্রাপ্তরা হলেন, আলোকচিত্রে মানিক লাল ভৌমিক, সঙ্গীতে সন্ধ্যা রাণী রায়, যন্ত্র সঙ্গীতে মো. শামছুদ্দিন খান, লোক সংস্কৃতিতে দুর্গা চরণ দাস ও যাত্রা শিল্পে চন্দ্রা রাণী দাস। সম্মানাপ্রাপ্ত প্রত্যেক শিল্পীকে প্রধান অতিথি মেডেল, সনদপত্র ও ১০ হাজার টাকার চেক তুলে দেন। পরে আলোচনা শেষে সম্মাননাপ্রাপ্ত শিল্পী ও স্থানীয় শিল্পীদের পরিবেশনায় অনুষ্ঠিত হয় মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান।
উল্লেখ্য, মাসুদুর রহমান নামে এক মাদ্রাসা ছাত্রের মৃত্যুর ঘটনাকে কেন্দ্র করে গত মঙ্গলবার দিনভর ব্রাহ্মণবাড়িয়া রেলওয়ে স্টেশন, সুর সম্রাট উস্তাদ আলাউদ্দিন খাঁ সঙ্গীতাঙ্গণ ও বেশ কয়েকটি সাংস্কৃতিক সংগঠনের কার্যালয়সহ শহরের বিভিন্ন স্থাপনায় হামলা চালিয়ে ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ করেন বিক্ষুব্ধ মাদ্রাসা ছাত্ররা। তবে শুক্রবার সকালে মাদ্রাসা কর্তৃপক্ষ এক সংবাদ সম্মেলনে হামলার ঘটনায় মাদ্রাসা ছাত্ররা জড়িত নন বলে দাবি করেন।
আজিজুল আলম সঞ্চয়/এমএএস/এমএস