অর্থ সংকটে অন্ধকারে শ্রীলঙ্কা
নানা সংকটে ভেঙে পড়েছে শ্রীলঙ্কার অর্থনৈতিক ব্যবস্থা। তীব্র সংকট দেখা দিয়েছে বৈদেশিক মুদ্রার অর্থাৎ ডলারের। এমন পরিস্থিতিতে দেশটির আমদানি প্রায় বন্ধ হয়ে যাচ্ছে। বেড়ে আকাশচুম্বী হয়েছে তেলসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসের দাম। এরই মধ্যে স্টেশনগুলোতে ফুরিয়ে গেছে তেল। লোডশেডিংয়ের কারণে নেমে এসেছে অন্ধকার। বুধবার (৩০ মার্চ) ব্লুমবার্গের এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়।
জানা গেছে, শ্রীলঙ্কার সরকার দৈনিক লোডশেডিংয়ের সময় বাড়িয়ে ১০ ঘণ্টা করেছে। অন্যদিকে তেল শোধনকারীরা নাগরিকদের লাইনে দাঁড়াতে নিষেধ করেছে। কারণ জ্বালানি স্টেশনগুলোতে কোনো তেল নেই।
এদিকে দেশটির সরকারি হাসপাতালগুলোতেও নেই কোনো জীবন রক্ষাকারী প্রয়োজনীয় ওষুধ। মানে করা হচ্ছে বৈদেশিক মুদ্রা অর্থাৎ ডলারের ঘাটতির কারণেই মানবিক সংকট দ্রুত ত্বরান্বিত হচ্ছে।
শ্রীলঙ্কার পাবলিক ইউটিলিটি কমিশনের চেয়ারম্যান জনাকা রত্নায়েকে বলেন, এটা খুবই খারাপ দিন। লোডশেডিং সাত ঘণ্টা থেকে বাড়িয়ে দশ ঘণ্টা করায় মঙ্গলবার কলম্বোতে তিনি সাংবাদিকদের এ কথা বলেন।
দেশটির সিলন পেট্রোলিয়াম করপোরেশন বুধবার ও বৃহস্পতিবার নাগরিকদের তেল স্টেশনে লাইন না ধরতে অনুরোধ জানিয়েছে। জাহাজ থেকে ৩৭ হাজার মেট্রিক টন জ্বালানি খালাস করতে না পারায় দেশটির সবচেয়ে বড় তেল শোধনকারী কোম্পানিটি এ অনুরোধ জানায়।
অন্যদিকে এএফপিকে দেওয়া সাক্ষাতকারে দেশটির ডাক্তার ও স্বাস্থ্যকর্মীরা গুরুত্বপূর্ণ ওষুধ ও ক্যামিক্যালের ঘাটতির কথা জানান। এসব পণ্য দক্ষিণ এশিয়ার দ্বীপ রাষ্ট্রটি মূলত আমদানি করে থাকে।
জানা গেছে, গত বছরের ডিসেম্বরে শ্রীলঙ্কার বাণিজ্য ঘাটতি দ্বিগুণ হয়ে এক দশমিক এক বিলিয়ন ডলারে দাঁড়ায়। গত মাসে দেশটির বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভের পরিমাণ ছিল দুই দশমিক তিন বিলিয়ন ডলার। তাছাড়া জুলাইয়ে বন্ড পরিশোধে ব্যয় হয় এক বিলিয়ন ডলার। এরই মধ্যে দেশটির কর্তৃপক্ষ সংকট মোকাবিলায় স্থানীয় মু্দ্রার অবমূল্যায়ন, আমদানি কমানো ও সুদের হার বাড়ানোর মতো পদক্ষেপ নিয়েছে।
দেশটির শেয়ারবাজারের প্রধানসূচক পাঁচ শতাংশ কমার পর লেন-দেন দ্বিতীয় দিনের মতো বন্ধ রয়েছে। শ্রীলঙ্কার নাগরিকরা বলছেন, ১৯৪৮ সালে স্বাধীনতার পর এমন বিপর্যয়ের মুখে পড়েনি দেশটির অর্থনীতি।
এমএসএম/এমএস