যেসব দেশ রাশিয়ার তেলের ওপর নির্ভরশীল
ইউক্রেনে রাশিয়ার হামলার পর সবচেয়ে বেশি সংকট দেখা গেছে তেলের বাজারে। এসময় বিশ্ববাজারে লাফিয়ে বেড়ে যায় তেলের দাম। ৪০ শতাংশ বেড়ে ১৪ বছরের মধ্যে সর্বোচ্চ পর্যায়ে পৌঁছায়। যদিও এই গুরুত্বপূর্ণ পণ্যটির দাম এরই মধ্যে নিয়ন্ত্রণে এসেছে। তবে দাম বাড়ার অন্যতম কারণ হচ্ছে রাশিয়ান তেলের ওপর যুক্তরাষ্ট্রের নিষেধাজ্ঞা। কিন্তু বিশ্বের অনেক দেশই রাশিয়ান তেলের ওপর ব্যাপকভাবে নির্ভরশীল।
২০১৯ সালে সবচেয়ে বেশি ক্রুয়েড তেল রপ্তানি করে সৌদি আরব। দেশটির রপ্তানির পরিমাণ ছিল ১৪৫ বিলিয়ন ডলারের। ১২৩ বিলিয়ন ডলারের তেল রপ্তানি করে রাশিয়ার অবস্থান ছিল দ্বিতীয়। রপ্তানিতে তৃতীয় অবস্থানে রয়েছে ইরাক। দেশটির রপ্তানির পরিমাণ ছিল ৭৩ দশমিক ৮ বিলিয়ন ডলার। এরপরে রয়েছে কানাডা ও যুক্তরাষ্ট্রের অবস্থান। দেশ দুইটি রপ্তানি করেছে যথাক্রমে ৬৭ দশমিক আট বিলিয়ন ও ৬১ দশমিক ৯ বিলিয়ন ডলারের তেল।
জানা গেছে, রাশিয়া থেকে সবচেয়ে বেশি তেল আমদানি করে চীন। এসময় চীন রাশিয়ার মোট রপ্তানির এক চতুর্থাংশ বা ২৭ শতাংশ তেল কেনে। এর মূল্য ছিল ৩৪ বিলিয়ন ডলার। যদিও এটি চীনের মোট আমদানির মাত্র ১৬ শতাংশ।
একই বছর অর্থাৎ ২০১৯ সালে বিশ্বের ৪৮টি দেশ রাশিয়া থেকে ক্রুয়েড বা অপরিশোধিত তেল আমদানি করে। বেলারুশ, কিউবা, কুরাকাও, কাজাখস্তান, লাটভিয়া ও স্লোভাকিয়া রাশিয়ার তেলের ওপর সবচেয়ে বেশি নির্ভরশীল। এদেশগুলো ৯৯ শতাংশের বেশি তেল আমদানি করে রাশিয়া থেকে।
এছাড়া ফিনল্যান্ড রাশিয়া থেকে ৯০ শতাংশ তেল আমাদানি করে। ৮০ শতাংশ করে আমদানি করে আজারবাইজান ও লিথুনিয়া। হাঙ্গেরি করে ৭০ শতাংশ।
এদিকে বুলগেরিয়া, পোল্যান্ড ও সার্বিয়া তাদের তেলের ৬০ শতাংশ আমদানি করে রাশিয়া থেকে। অন্যদিকে চেক রিপাবলিক ও তুরস্ক আমদানি করে ৫০ শতাংশ তেল।
তেল উৎপাদনে বিশ্বের কেন্দ্রবিন্দুতে রয়েছে ওপেক। এটি তেল রপ্তানিকারক দেশগুলোর একটি সংগঠন। এটি ১৩টি দেশ নিয়ে ইরাকের রাজধানী বাগদাদে ১৯৬০ সালে প্রতিষ্ঠিত হয়। বিশ্বের ৮০ শতাংশ প্রাকৃতিক তেলের (প্রভেন ক্রুয়েড অয়েল) মজুত রয়েছে সংস্থাটির অন্তর্ভুক্ত দেশগুলোর কাছে।
তবে ওপেকের সদস্য না হয়েও যুক্তরাষ্ট্র ও রাশিয়ায় তেলের একটি বড় অংশ মজুত রয়েছে। বিশ্ব ক্রুয়েড অয়েলের ৪০ শতাংশ ও মোট পেট্রোলিয়ামের ৬০ শতাংশ উৎপাদন করে ওপেক। যুক্তরাষ্ট্রের জ্বালানি বিভাগ থেকে এ তথ্য পাওয়া গেছে।
২০১৯ সালে বিশ্বে দৈনিক প্রায় ১০ কোটি ব্যারেল তেলের প্রয়োজন হয়েছে। তবে বিশ্ব চাহিদার পাঁচ ভাগের এক ভাগই প্রয়োজন হয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের অর্থাৎ দেশটি দৈনিক দুই কোটি ব্যারেলের বেশি ব্যবহার করেছে। এর পরই রয়েছে চীন ও ভারত। দেশ দুটি যথাক্রমে দৈনিক এক কোটি তিন লাখের বেশি ও প্রায় ৫০ লাখ ব্যারেল তেল ব্যবহার করে।
এমএসএম/এএসএম