প্রতিরক্ষা খাতে ব্যয় বাড়াচ্ছে চীন
সার্বভৌমত্ব, নিরাপত্তা ও উন্নয়নের স্বার্থে চীন সরকার এবছর প্রতিরক্ষা খাতে ব্যয় বাড়ালো ৭ দশমিক ১ শতাংশ, যা দেশটির জিডিপির আকারের চেয়ে বেশি। চীনের প্রধানমন্ত্রী লি কেকিয়াং দেশটির লিবারেশন আর্মিকে সামরিক প্রশিক্ষণ এবং যুদ্ধের প্রস্তুতি বাড়ানোর প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন।
স্থানীয় সময় শনিবার (৫ মার্চ) প্রকাশিত জাতীয় বাজেট থেকে জানা যায় প্রতিরক্ষা খাতে ব্যয় ধরা হয়েছে ১ দশমিক ৪৫ ট্রিলিয়ন ইউয়ান (২২৯ দশমিক ৪৭ বিলিয়ন ডলার)। ২০১৯ সালেও প্রতিরক্ষা ব্যয় সাড়ে সাত শতাংশ বাড়ানোর প্রস্তাব দেওয়া হয়েছিল চীন সরকারের তরফে। এরপর থেকে ক্রমাগতভাবে তা বাড়ানো হয়েছে। গতবছর দেশটির প্রতিরক্ষা খাতে ব্যয় ধরা হয়েছিল ৬ দশমিক ৮ শতাংশ।
চীনের প্রতিবেশী দেশগুলো এবং ওয়াশিংটন তার সামরিক বাহিনীকে কতটা আক্রমনাত্মকভাবে তৈরি করবে তার ব্যারোমিটার ঘনিষ্ঠভাবে পর্যবেক্ষণ করছে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
আবাসন খাতে মন্দাসহ নানাবিধ কারণে দ্বিতীয় বৃহত্তম অর্থনীতির দেশটিতে ২০২২-এ জিডিপি বাড়ার লক্ষ্যমাত্রা ৫ দশমিক ৫ শতাংশ ধার্য করা হয়েছে। গত এক দশকের মধ্যে যা সর্বনিম্ন। বেইজিংয়ের ‘গ্রেট হল অব দ্য পিপল’-এ জাতীয় আইনসভার বার্ষিক অধিবেশনে বাজেট পেশের সময় প্রতিরক্ষা খাতের বিষয়টি স্পষ্ট করেন প্রধানমন্ত্রী লি।
চীনের প্রধানমন্ত্রী তার ভাষণে বলেন, এ বছর সরকার সেনাবাহিনীর সরঞ্জাম সরবরাহ এবং সম্পদ ব্যবস্থাপনায় আধুনিকীকরণের জন্য দ্রুত অগ্রসর হবে। জাতীয় প্রতিরক্ষা খাতকে আরও সমৃদ্ধ করতে নতুন নতুন প্রযুক্তি ও উদ্ভাবনকে কাজে লাগানোর কথাও বলেন তিনি।
কূটনীতিক ও বিদেশি বিশেষজ্ঞদের অনেকেই মনে করেন যে বাজেটে সামরিক ব্যয়ের জন্য শুধু একটি গতানুগতিক পরিসংখ্যান দেওয়া হয়েছে। তারা আরও ধারণা করেন, বেইজিং প্রকৃত তথ্য কমই প্রকাশ করে।
যদিও ২০২২ সালে চীনের প্রতিরক্ষা বাজেট প্রস্তাবিত মার্কিন ব্যয়ের এক তৃতীয়াংশেরও কম। গত মাসে রয়টার্সের এক প্রতিবেদনে বলা হয়, আগামী অর্থবছরে যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিরক্ষা ব্যয় ৭৭০ বিলিয়ন ডলার করতে কংগ্রেসকে আহ্বান জানাবেন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন।
সীমান্ত সংক্রান্ত বিভিন্ন ইস্যুতে চীনের কিছুটা উদ্বেগ রয়েছে। বিশেষ করে দেশটির আধা-স্বায়ত্তশাসিত অঞ্চল তাইওয়ানের সঙ্গে এবং দক্ষিণ চীন সাগরে নৌ আধিপত্যকে ঘিরে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে দ্বন্দ্ব। এছাড়া ভারতের সঙ্গে সীমান্ত উত্তেজনা তো রয়েছেই। ধারণা করা হচ্ছে এসব কারণেই চীন হয়তো প্রতিরক্ষা খাতে ব্যয় বাড়াচ্ছে।
সূত্র: নিক্কেই এশিয়া
এসএনআর/এএসএম