বেসামরিক নাগরিকদের সরিয়ে নিতে সম্মত রাশিয়া-ইউক্রেন
অডিও শুনুন
চলমান যুদ্ধের মধ্যেই দ্বিতীয় দফায় বৈঠক করেছে রাশিয়া ও ইউক্রেন। বৈঠকে যুদ্ধবিরতির কোনো ঘোষণা না এলেও বেসামরিক নাগরিকদের নিরাপদে সরিয়ে নিতে ‘মানবিক করিডোর’ নির্মাণে সম্মত হয়েছে দুই দেশ। পাশাপাশি একটি শান্তিপূর্ণ সমাধানের জন্য আগামীতে উভয়পক্ষ আবারও বসবে।
স্থানীয় সময় বৃহস্পতিবার (৩ মার্চ) বেলারুশে বৈঠক শেষে টুইটারে এ কথা জানান ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কির উপদেষ্টা মিখাইলো পোদোলিয়াক।
তিনি বলেন, দ্বিতীয় দফার বৈঠক শেষ হয়েছে। দুর্ভাগ্য যে, এবারও ইউক্রেনের স্বার্থে আশানুরূপ কোনো ফল পাওয়া যায়নি। তবে বেসামরিক লোকদের সরিয়ে নিতে যৌথভাবে ‘মানবিক করিডোর’ খুলে দিতে সম্মত হয়েছে উভয়পক্ষ। একই সঙ্গে যুদ্ধবিধ্বস্ত এলাকায় আটকেপড়া মানুষের জন্য ওষুধ ও খাবার সরবরাহের বিষয়টি নিশ্চিতে সম্মত হয়েছে।
রাশিয়া-ইউক্রেন প্রতিনিধি দলের বৈঠক/ছবি: রয়টার্স, ম্যাক্সিম গুচেক, বেলটা
এদিকে ‘মানবিক করিডোর’র বিষয়টি নিশ্চিত করেন রাশিয়ার প্রধান আলোচক ভলোদিমির মেডিনস্কিও। তিনি দ্বিতীয় দফার বৈঠককে ‘উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি’ হিসেবে উল্লেখ করেন।
রুশ প্রেসিডেন্ট পুতিনও একই কথা জানান। তিনি বলেন, রুশ বাহিনী বেসামরিক নাগরিকদের যুদ্ধের এলাকা ত্যাগ করতে ‘নিরাপদ করিডোরে’র প্রস্তাব দিয়েছে।
তবে পুতিন অভিযোগ করেন, বেসামরিক নাগরিকদের নিরাপদ স্থানে যেতে বাধা দিচ্ছে ইউক্রেনের জাতীয়তাবাদী দল। পুতিনের এই দাবির সত্যতা যাচাই করা যায়নি।
এর আগে ২৮ ফেব্রুয়ারি বেলারুশের গোমেল অঞ্চলে রাশিয়া-ইউক্রেনের প্রথম বৈঠক হয়। সেখানে দুই দেশের প্রতিনিধিদলের সঙ্গে উপস্থিত ছিলেন বেলারুশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ভ্লাদিমির মাকেই। তখন প্রায় দীর্ঘ পাঁচ ঘণ্টা ধরে আলোচনা চলে। কিন্তু কোনো ধরনের চুক্তি বা সিদ্ধান্ত ও সমঝোতা ছাড়াই বৈঠক শেষ হয়।
কিয়েভের কাছে একটি শহরে ক্ষেপণাস্ত্রের আঘাতে ধ্বংস আবাসিক ভবন/ছবি: রয়টার্স
২৪ ফেব্রুয়ারি ইউক্রেনে হামলা চালায় রাশিয়া। টানা কয়েকদিন ধরেই দুপক্ষের মধ্যে লড়াই চলছে। দেশটির বেশ কয়েকটি শহর দখলের দাবি করেছে রুশ সেনাবাহিনী। সবশেষ ইউক্রেনের দক্ষিণাঞ্চলের খেরসন শহর পুরোপুরি দখল করে রুশ সেনা।
এছাড়া ইউক্রেনের রাজধানী কিয়েভ, উত্তর-পূর্বাঞ্চলে খারকিভ, দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলে মারিওপোল এবং উত্তরাঞ্চলের চেরনিহিভ শহরে বিমান ও গোলা হামলা বাড়িয়েছে রাশিয়া।
ছবি: গেট্টি ইমেজ
এদিকে ইউক্রেন ছেড়ে এরই মধ্য পালিয়েছে ১০ লাখের বেশি নাগরিক। তাদের অধিকাংশই নারী ও শিশু।
ইউরোপীয় ইউনিয়ন জানিয়েছে, চলমান যুদ্ধে ৪০ লাখ নাগরিক ইউক্রেন ছাড়তে পারে। তবে তাদের আশ্রয় দিতেও ইউরোপ প্রস্তুত বলে জানানো হয়েছে। কিয়েভ ছেড়ে এসব নাগরিকরা ইউরোপের প্রতিবেশী দেশ পোল্যান্ড, রোমানিয়া, স্লোভাকিয়া, হাঙ্গেরি ও মলদোভায় প্রবেশ করছে। সূত্র: বিবিসি, আল জাজিরা
জেডএইচ/