পূর্ব ইউক্রেনের দুই অঞ্চলকে রাশিয়ার স্বীকৃতির পর উত্তেজনা চরমে

আন্তর্জাতিক ডেস্ক
আন্তর্জাতিক ডেস্ক আন্তর্জাতিক ডেস্ক
প্রকাশিত: ১১:৪১ এএম, ২২ ফেব্রুয়ারি ২০২২

অডিও শুনুন

পূর্ব ইউক্রেনের রুশপন্থী বিদ্রোহীদের দুটি অঞ্চল দোনেৎস্ক ও লুহানস্ককে স্বাধীন রাষ্ট্রের স্বীকৃতি দিয়েছেন রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। পূর্ব ইউক্রেনের এ দুটি অঞ্চলকে স্বীকৃতি দেওয়া এবং সেখানে ‘শান্তি’ বজায় রাখার জন্য সৈন্য মোতায়েন করবে রাশিয়া, এমন ঘোষণার পর ইউক্রেন নিয়ে উত্তেজনা আরও বেড়েছে।

পূর্ব ইউক্রেনে সেনা পাঠানোর নির্দেশও দিয়েছেন রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। সেনা পাঠানোর নির্দেশের কয়েক ঘণ্টা আগে রুশপন্থী বিচ্ছিন্নতাবাদীদের নিয়ন্ত্রিত ওই অঞ্চলকে স্বাধীন রাষ্ট্রের স্বীকৃতি দেন তিনি।

স্থানীয় সময় সোমবার (২১ ফেব্রুয়ারি) রাতে টেলিভিশনে দেওয়া এক ভাষণে পুতিন ইউক্রেনকে রাশিয়ার ইতিহাসের একটি অবিচ্ছেদ্য অংশ হিসেবে ঘোষণা করেন। তিনি বলেন, পূর্ব ইউক্রেন এক সময় রাশিয়ার ভূমি ছিল। রাশিয়ার জনগণ তার এই সিদ্ধান্তকে সমর্থন জানাবে বলেও আত্মবিশ্বাসী তিনি।

ইউক্রেনের পূর্বাঞ্চলে কয়েক দিন ধরে রুশপন্থী বিচ্ছিন্নতাবাদী ও ইউক্রেনীয় সেনাদের মধ্যে সংঘাতের মধ্যে পুতিনের এ ঘোষণাকে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ হিসেবে দেখা হচ্ছে। বলা চলে, পশ্চিমা হুমকি আর হুঁশিয়ারি অপেক্ষা করেই এমন সিদ্ধান্ত নিয়েছেন পুতিন।

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র বলছে যে রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের ঘোষণাটি ‘ইউক্রেনের সার্বভৌমত্ব এবং আঞ্চলিক অখণ্ডতার অপ্রীতিকর লঙ্ঘন’।

পূর্ব ইউক্রেনের দুই অঞ্চলকে রাশিয়ার স্বীকৃতির পর উত্তেজনা চরমে

ক্রেমলিনের তরফে জানানো হয়েছে, পুতিন জার্মানি ও ফ্রান্সের নেতাদের ফোনকলে এই সিদ্ধান্তের কথা জানিয়েছেন। পরে ডিক্রিতে সই করে তিনি রাষ্ট্রীয় টেলিভিশনে ভাষণ দেন।

পুতিনের স্বাক্ষরিত ডিক্রি সেদিন থেকেই কার্যকর হলেও সেনা মোতায়েনের বিষয়ে বিস্তারিত কিছু এখনো জানায়নি মস্কো।

২০১৪ সালে রাশিয়া ইউক্রেনে হামলা চালিয়ে ক্রিমিয়া দখলের পর থেকে দোনেৎস্ক এবং লুহানস্ক নিয়ন্ত্রণের জন্য বিচ্ছিন্নতাবাদিরা লড়াই চালিয়ে আসছে। গত ৬ বছরে কিয়েভ সেনাদের সঙ্গে লড়াইয়ে ১৪ হাজারের বেশি মানুষের প্রাণ গেছে অঞ্চল দুটিতে।

পুতিনের ঘোষণার পর ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি এক ভাষণে বলেছেন, ইউক্রেন মোটেই ভীতসন্ত্রস্ত নয়। ইউক্রেন শান্তি চায়, তবে নিজেদের ভূমি ছেড়ে দিয়ে নয়।

এদিকে, বিষয়টি নিয়ে জরুরি বৈঠকে বসে জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদ। নিরাপত্তা পরিষদের সদস্য কয়েকটি দেশের প্রতিনিধিদের বক্তব্যের পর ৯০ মিনিট পর মুলতবি ঘোষণা করা হয় বৈঠক।

বৈঠকে ইউক্রেন ইস্যুতে সব পক্ষকেই সংযমী হওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদের চীনা প্রতিনিধি ঝ্যাং জুন। তবে ওই দুই অঞ্চলকে স্বীকৃতি দেওয়ার ঘটনায় মস্কোর নিন্দা জানাননি তিনি। তিনি আরও বলেছেন, বেইজিং ইউক্রেনের বর্তমান পরিস্থিতির উন্নয়নের দিকে গুরুত্ব দিচ্ছে। ঝ্যাং জুন ইউক্রেনের এ পরিস্থিতিকে ‘জটিল’ বলেও উল্লেখ করেন।

এদিকে, রাশিয়ার এমন পদক্ষেপের পর যুক্তরাষ্ট্র নতুন করে নিষেধাজ্ঞা আনতে যাচ্ছে বলে আন্তর্জাতিক বিভিন্ন গণমাধ্যম সূত্রে জানা গেছে।

সূত্র: আল-জাজিরা, রয়টার্স, বিবিসি

এসএনআর/জেআইএম

টাইমলাইন  

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।