আমজনতার প্রাপ্তি শূন্য: মোদী সরকারের বাজেটের সমালোচনায় বিরোধীরা
ভারতের ২০২২-২৩ অর্থবছরের বাজেট ঘোষণা করেছেন কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারমন। তার টানা দেড় ঘণ্টার বাজেট ভাষণে উত্তর মেলেনি অনেক প্রশ্নের। বিরোধীদের অভিযোগ, এই বাজেটে সাধারণ মানুষের প্রাপ্তি পুরোপুরি শূন্য। নেই সঠিক দিশাও। এ নিয়ে মোদী সরকারের সমালোচনায় সরব হয়েছেন রাহুল গান্ধী, মমতা ব্যানার্জীর মতো নেতারা।
নির্মলা সীতারমনের বাজেট ঘোষণা শেষ হওয়ার পরপরই তীব্র প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জী। টুইটারে এ বাজেটকে ‘শূন্য, ফাঁপা’ বলে অভিযোগ করেছেন তিনি।
BUDGET HAS ZERO FOR COMMON PEOPLE, WHO ARE GETTING CRUSHED BY UNEMPLOYMENT & INFLATION. GOVT IS LOST IN BIG WORDS SIGNIFYING NOTHING - A PEGASUS SPIN BUDGET
— Mamata Banerjee (@MamataOfficial) February 1, 2022
মমতার মতে, এ বাজেটে বেকারত্ব আর মূল্যবৃদ্ধির চাপে পিষ্ট সাধারণ মানুষের জন্য কিছু নেই। সরকারের বড় বড় কথা পুরোটাই অন্তঃসারশূন্য। তৃণমূল সুপ্রিমোর অভিযোগ, এই বাজেট মূলত পেগাসাস কেলেঙ্কারি থেকে মানুষের নজর ঘোরানোর চেষ্টা।
একই বক্তব্য রাহুল গান্ধীরও। মোদী সরকারের দ্বিতীয় মেয়াদের চতুর্থ বাজেটকে ‘শূন্য’ উল্লেখ করে তিনি অভিযোগ করেছেন, এতে বেতনভুক্ত শ্রেণি, মধ্যবিত্ত, দরিদ্র, বঞ্চিত, তরুণ প্রজন্ম, কৃষক, ক্ষুদ্র উদ্যোক্তাদের জন্য কিছু নেই।
M0di G0vernment’s Zer0 Sum Budget!
— Rahul Gandhi (@RahulGandhi) February 1, 2022
Nothing for
- Salaried class
- Middle class
- The poor & deprived
- Youth
- Farmers
- MSMEs
কংগ্রেস নেতা শশী থারুরের মতে, এবারের বাজেট অত্যন্ত হতাশাব্যঞ্জক। বাজেট ঘোষণায় গ্রামীণ কর্মসংস্থান, প্রতিরক্ষা বা জনসাধারণের জন্য জরুরি অন্য কোনো বিষয়ে অগ্রাধিকারের উল্লেখ নেই।
তৃণমূলের রাজ্যসভার সদস্য ডেরেক ও ব্রায়েন অভিযোগ করেছেন, কৃষক, মধ্যবিত্ত, দিনমজুর, বেকারদের কথা মোটেও ভাবেনি মোদী সরকার। তাই এবারের বাজেটে তাদের জন্য কোনো ঘোষণা নেই।
২০২২-২৩ অর্থবছরের বাজেট ভারতের সাধারণ মানুষের জন্য আদতেই কিছুটা হতাশার। আশা করা হয়েছিল, করোনা সংকটের কারণে আয়করে ছাড় দেওয়া হবে। কিন্তু সেই আশা পূরণ হয়নি। যদিও করপোরেট করে ছাড় ঘোষণা করা হয়েছে। নতুন কর্মসংস্থানের বড় লক্ষ্যও ঘোষণা করেছেন নির্মলা সীতারমন। আগামী পাঁচ বছরে ৬০ লাখ নতুন চাকরি সৃষ্টির কথা বলা হয়েছে বাজেটে।
Extremely disappointing, a damp squib! There seems to be absolutely nothing in this Budget. It's an astonishingly disappointing Budget. When you listen to the speech, no mention of MGNREGA, of Defence, of any other urgent priorities facing the public: Congress MP Shashi Tharoor pic.twitter.com/9g2cg6nz0T
— ANI (@ANI) February 1, 2022
২০২২-২৩ অর্থবছরের বাজেটে মূলত যোগাযোগ খাতের উন্নয়নে অগ্রাধিকার দিচ্ছে ভারত। এ বর্ষে ‘প্রধানমন্ত্রী গতিশক্তি’ কর্মসূচির আওতায় সড়ক, রেল, বিমানবন্দর, বন্দর, গণপরিবহন, জলপথের ব্যাপক উন্নয়নের লক্ষ্য নির্ধারণ করেছে ভারত সরকার।
বাজেট ঘোষণায় ভারতীয় অর্থমন্ত্রী ঘোষণা দিয়েছেন, নতুন অর্থবছরে চারটি মাল্টিমোডাল ন্যাশনাল পার্ক তৈরির চুক্তি হবে। ‘ওয়ান প্রোডাক্ট ওয়ান রেলস্টেশন’ পদ্ধতি জনপ্রিয় করে তোলা হবে। ৪০০টি নতুন বন্দে ভারত ট্রেন চালু হবে।
তিনি জানান, ২০২২-২৩ অর্থবছরে কৃষি, রাসায়নিক, ওষুধে এতদিন দিয়ে আসা অন্তত ৩৫০টি শুল্কছাড় প্রত্যাহার করা হচ্ছে। মূলধনী পণ্যের ওপর রেয়াতি শুল্কও পর্যায়ক্রমে প্রত্যাহার করা হবে। প্রাথমিকভাবে এর হার ৭ দশমিক ৫ শতাংশ ধরা হচ্ছে।
স্থানীয়ভাবে ইলেক্ট্রনিক পণ্য উৎপাদনে শুল্কছাড় দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে ভারত। ক্যামেরা-হেডফোনের মতো মোবাইল ফোন যন্ত্রাংশ উৎপাদনে এই সুবিধা পাওয়া যাবে।
ক্ষুদ্র ও মধ্যম ব্যবসার সুবিধার্থে স্টিল স্ক্র্যাপ আমদানিতে শুল্কছাড়ের মেয়াদ আরও এক বছর বাড়ানো হয়েছে। স্টেইনলেস স্টিল, ফ্ল্যাট পণ্য ও হাই স্টিল বারে আমদানি শুল্ক পুরোপুরি তুলে নেওয়া হচ্ছে।
এবারের বাজেটে কাটিং ও পলিশ করা বিভিন্ন রত্ন এবং হীরার আমদানি শুল্ক কমিয়ে পাঁচ শতাংশ করা হয়েছে। এই খাতকে উৎসাহিত করতে হীরার ওপর আমদানি শুল্ক শূন্যে নামিয়ে আনার পরিকল্পনা রয়েছে বলে জানিয়েছেন কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী।
সূত্র: দ্য ইকোনমিক টাইমস
কেএএ/এএসএম