মিয়ানমারে অভ্যুত্থান-মহামারিতে চাকরি হারিয়েছেন ১৬ লাখ
করোনা মহামারি ও সামরিক অভ্যুত্থানের ফলে গত বছর মিয়ানমারে চাকরি হারিয়েছেন ১৬ লাখ মানুষ। আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থা (আইএলও) শুক্রবার (২৮ জানুয়ারি) এ তথ্য জানিয়েছে। কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল-জাজিরার এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়।
অভ্যুত্থানের মাধ্যমে মিয়ানমারের ক্ষমতা দখল করে সামরিক বাহিনী। এরপরই দেশটির কৃষি, অবকাঠামো, তৈরি পোশাক, ট্যুরিজম ও হসপিটালিটিখাত সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়। এতে ২৭ থেকে ৩১ শতাংশ চাকরি কমে যায় দেশটিতে।
জাতিসংঘের সংস্থাটি জানায়, চলমান সশস্ত্র সংঘাত, সহিংসতা ও অনিরাপত্তার কারণে সবচেয়ে বেশি নেতিবাচক প্রভাব পড়েছে গ্রামীণ কৃষকের ওপর। দেশটিতে বেড়েছে বাস্তুচ্যুতের সংখ্যা, কমেছে জীবিকা।
কাজের সময় ও চাকরি কমে যাওয়ায় অসামাঞ্জস্যভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে নারীরা। জানা গেছে, গার্মেন্টস, পর্যটনসহ সেবাখাতে যারা চাকরি হারিয়েছেন তাদের অধিকাংশই নারী।
আইএলও জানায়, সামরিক অভ্যুত্থানের এক বছর পার হয়ে গেলেও মিয়ানমারের শ্রমবাজার এখনো ভঙুর অবস্থায় রয়েছে।
মিয়ানমারে নিযুক্ত আইএলওর কর্মকর্তা ডংলিন লি বলেন, সামরিক অভ্যুত্থান ও করোনা মহামারিতে লাখ লাখ শ্রমিক ভয়াবহ পরিস্থিতির মধ্যে পড়েছে। দিন দিন দেশটিতে শ্রমবাজারের পরিস্থিতি খারাপের দিকে যাচ্ছে। এ অবস্থা চলতে থাকলে মিয়ানমারজুড়ে দারিদ্র্যতা ও অনিরাপত্তা আরও বাড়বে বলেও জানান তিনি।
গত বছরের ১ ফেব্রুয়ারি অভ্যুত্থানের মাধ্যমে গণতান্ত্রিক সরকারকে উৎখাত করে ক্ষমতা দখল করে নেয় মিয়ানমারের সামরিক বাহিনী। তবে দেশটির সিংহভাগ জনগণ বিষয়টি মেনে নেয়নি। রাস্তায় বিক্ষোভ, সরকারি কাজকর্ম বয়কটসহ সশস্ত্র বিদ্রোহের মাধ্যমে জান্তার বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানাচ্ছে তারা। স্থানীয় মনিটরিং গ্রুপগুলো বলছে, মিয়ানমারে সেনা অভ্যুত্থানের পর সহিংসতায় এ পর্যন্ত ১৩শর বেশি মানুষ নিহত হয়েছেন।
এদিকে, দেশটির গণতান্ত্রিক নেত্রী অং সান সূচি ১১ মাস ধরে কারাবন্দি রয়েছেন। তার বিরুদ্ধে দুর্নীতি ও জালিয়াতির অভিযোগ আনা হয়েছে। তার বিরুদ্ধে মিয়ানমারের আদালতে চলছে বিচার কার্যক্রম। এরই মধ্যে কয়েকটি মামলায় তাকে দেওয়া হয়েছে বিভিন্ন মেয়াদে সাজা।
এমএসএম/এমএস