বরিশালে বধ্যভূমি সংলগ্ন জলাধার ভরাট বন্ধে স্থগিতাদেশ
মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতিবিজরিত বরিশাল নগরীর কীর্তনখোলার নদীর তীরে ত্রিশ গোডাউন বধ্যভূমি সংলগ্ন এলাকায় জলাধার ভরাট করে খাদ্য বিভাগের বিশেষ পণ্যাগার (সাইলো) নির্মাণ কার্যক্রমের ওপর ৬ মাসের স্থগিতাদেশ দিয়েছেন উচ্চাদালত। একই সঙ্গে পুকুর ভরাট বন্ধে বিবাদীদের নিস্ত্রিয়তা কেন অবৈধ ঘোষণা করা হবে না এবং পুকুরটি সংরক্ষণের জন্য কেন নির্দেশ দেয়া হবে না তা জানতে রুল জারি করা হয়েছে। চার সপ্তাহের মধ্যে বিবাদীদের রুলের জবাব দিতে বলা হয়েছে।
রিট আবেদনে বিবাদী করা হয়েছে এলজিআরডি, ভূমি ও খাদ্য সচিব, বরিশাল সিটি কর্পোরেশনের মেয়র, পরিবেশ অধিদফতরের মহাপরিচালক, বরিশাল বিভাগীয় পরিবেশ অধিদফতরের পরিচালক, বরিশাল জেলা প্রশাসক, পুলিশ সুপার, মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনার ও কোতোয়ালী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে।
মঙ্গলবার দুপুরে রিটের শুনানি শেষে উচ্চাদালত এই নির্দেশ দেন। এদিকে সোমবার অনুষ্ঠিত বেসরকারি বিমান পরিবহন ও পর্যটন এবং নৌ পরিবহন মন্ত্রাণালয়ের এক যৌথ সভায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বরিশালে সাইলো নির্মাণের জন্য জলাধার ভরাট না করার জন্য নির্দেশ দিয়েছেন।
বরিশালে বধ্যভূমি সংলগ্ন জলাধার ভরাট করে সাইলো নির্মাণের কার্যক্রমের ওপর স্থগিতাদেশ চেয়ে সোমবার হাইকোর্টে রিট করেন হিউম্যান রাইটস অ্যান্ড পিচ ফর বাংলাদেশ (এইচআরপিডি) এর পক্ষে আসাদুজামান সিদ্দিকী।
তার আইনজীবী অ্যাডভোকেট মনজিল মোর্শেদ জাগো নিউজকে জানান, রিটের শুনানিতে তিনি আদালতে বলেছেন, সংবিধান ও জলাধার সংরক্ষণ আইন-২০০০ অনুসারে পুকুর ভরাট নিষিদ্ধ। তথাপি বরিশালে বধ্যভূমি সংলগ্ন পুকুরটি ভরাট করা হলে বধ্যভূমির ভাবগাম্ভীর্য বিপন্ন হবে। অথচ আইন ভঙ্গ করে পুকুর ভরাট করা হলেও সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ আইনি কোনো ব্যবস্থা নেয়নি।
অ্যাডভোকেট মনজিল মোর্শেদ জানান, মঙ্গলবার শুনানি শেষে আদালত পুকুর ভরাটের ওপর ছয় মাসের স্থিতাবস্থা বজায় রাখার নির্দেশ দিয়েছেন। একই সঙ্গে পুকুর ভরাট বন্ধে বিবাদীদের নিস্ত্রিয়তা কেন অবৈধ ঘোষণা করা হবে না এবং পুকুরটি সংরক্ষণের জন্য কেন নির্দেশ দেয়া হবে না তা জানতে রুল জারি করেছেন। রাষ্ট্রপক্ষে রিটের শুনানিতে অংশগ্রহণ করেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল অ্যাডভোকেট মোফারফ হোসেন সাজু।
উল্লেখ্য, ত্রিশ গোডাউন সংলগ্ন বধ্যভূমি এলাকায় জলাধার ভরাট করে খাদ্য বিভাগের সাইলো নির্মাণের প্রতিবাদে বরিশালে বিভিন্ন সামাজিক-সাংস্কৃতিক সংগঠন ‘বধ্যভূমি সংরক্ষণ কমিটি’র ব্যানারে আন্দোলন করছে। এ অবস্থায় গত ৩ জানুয়ারি খাদ্যমন্ত্রী অ্যাডভোকেট কামরুল ইসলাম বরিশাল সফর করে সাইলো জন্য নির্ধারিত জলাধার থেকে এক একর জমি বাদ দিয়ে সাইলো নির্মাণ এবং বধ্যভূমি সংরক্ষণের প্রস্তাব দিলে আন্দোলনকারীরা ওই প্রস্তাব প্রত্যাখান করে কঠোর আন্দোলনের হুশিয়ারি দেন।
সাইফ আমীন/বিএ