করোনা আক্রান্ত বিজেপি নেতাদের মমতার ফোন
ভারতের পশ্চিমবঙ্গের বিরোধী রাজনীতিকরা প্রায়ই অভিযোগ করেন যে, রাজ্য সরকার এবং মমতা ব্যানার্জী তাদের প্রতি ‘অমানবিক’। বিরোধীদের যে কোনো মিটিং, মিছিল, সভা সরকারপক্ষ প্রায় জোর করেই বন্ধ করে দেয়। তাদের অভিযোগ পশ্চিমবঙ্গ সরকার মোটেও ‘মানবিক’ নয়, বঙ্গ রাজনীতি থেকে মানবিক কথাটি উঠেই গেছে। পশ্চিমবঙ্গে বিজেপির ছোট থেকে বড় নেতা প্রত্যেকেই এসব বিষয়ে মমতা ব্যানার্জীর সরকার এবং তার ওপর ক্ষুব্ধ।
কিন্তু বিজেপিরই অতি পরিচিত মুখ নারায়ণ চট্টোপাধ্যায়ের ধারণা আজ থেকে বদলে যাচ্ছে। সম্প্রতি তিনি করোনায় আক্রান্ত হয়ে হোম আইসোলেশনে আছেন। এর মধ্যেই হঠাৎ করেই তার কাছে মুখ্যমন্ত্রীর শুভেচ্ছা বার্তা, ফলমূল এবং হেলথ ড্রিঙ্কস পাঠানো হয়। প্রতিদিনই কলকাতায় যারা করোনায় আক্রান্ত হচ্ছেন তাদের কাছে মুখ্যমন্ত্রীর পক্ষ থেকে পৌঁছে যাচ্ছে হেলথ ড্রিঙ্কস, ফল এবং ফুলসহ শুভেচ্ছা বার্তা। এই শুভেচ্ছা বার্তা পেয়ে সবাই বেশ খুশি।
কোভিড পরিস্থিতিতে মুখ্যমন্ত্রী রাজনীতিতে কোনো ভেদাভেদ দেখছেন না। তিনি যেমন সবার কাছে মানবিক এই মানবিকতাই ধরা পড়ছে প্রতিটি করোনা রোগীর কাছে। বিজেপি নেতা নারায়ন চট্টোপাধ্যায়ের ক্ষেত্রে তার ব্যতিক্রম ঘটেনি। হোম আইসোলেশনে থাকা অবস্থায় তিনিও মুখ্যমন্ত্রীর শুভেচ্ছা বার্তা পেয়েছেন।
গত বিধানসভা নির্বাচন থেকে শুরু করে কর্পোরেশন নির্বাচনে দলের মিটিং, মিছিল, সমাবেশে সংবাদমাধ্যমের কাছে পরিচিত মুখ নারায়ন চট্টোপাধ্যায়। বিভিন্ন সময় দলের মিটিং, মিছিলে সামনের সারিতেই দেখা যায় তাকে। ভিন রাজ্যে গেরুয়া জয় বা যে কোনো অনুষ্ঠানে তিনি লাড্ডু বিতরণ করেন।
করোনায় আক্রান্ত এই নেতা জানিয়েছেন, এখনও বিজেপির অনেক নেতাই তার খোঁজ খবর নেননি। কিন্তু মুখ্যমন্ত্রীর তরফ থেকে শুভেচ্ছা বার্তা এসেছে। তিনি বলেন, রাজনৈতিক জীবনে এ এক অন্য তৃপ্তি, অন্য এক পাওয়া। সামাজিক মাধ্যমে তিনি নিজেই এসব কথা জানিয়েছেন। তিনি লিখেছেন, আমাকে এবং আমার পরিবারকে এই উপহার ও শুভেচ্ছা বার্তার জন্য মুখ্যমন্ত্রীকে অসংখ্য ধন্যবাদ।
এবার নিশ্চয়ই বিজেপির পক্ষ থেকে মুখ্যমন্ত্রীর মানবিকতা নিয়ে আর কোনো প্রশ্ন উঠবে না। এদিকে সোমবার সকালে করোনা আক্রান্ত বিজেপির রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদারের কাছেও ফোন দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা। সুকান্ত মজুমদারের সঙ্গে বেশ কিছুক্ষণ কথা বলে তার শারীরিক অবস্থার খোঁজ খবর নিয়েছেন তিনি।
রাজ্য সভাপতি গতকাল রাতেই অসুস্থ হয়ে পড়েন। এরপর পরীক্ষা করা হলে তার কোভিড সংক্রমণ ধরা পড়ে। তার অক্সিজেনের মাত্রা হঠাৎ করেই কমে যাওয়ায় তাকে দক্ষিণ কলকাতার একটি বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়। বর্তমানে তার অবস্থা স্থিতিশীল আছে।
টিটিএন/এএসএম