কাজাখস্তানে বিক্ষোভ-সহিংসতা, এক সপ্তাহে আটক প্রায় ৬ হাজার
কাজাখস্তানে গত এক সপ্তাহ ধরে চলা বিক্ষোভে এখন পর্যন্ত পাঁচ হাজার ৮শ জনকে আটক করেছে পুলিশ। দেশটির প্রেসিডেন্টের কার্যালয় থেকে এ তথ্য জানানো হয়েছে। জ্বালানি তেলের দাম বেড়ে যাওয়ায় পর কাজাখস্তানজুড়ে ব্যাপক সহিংস বিক্ষোভ হয়। এরপর রাশিয়ান জোট দেশটির বিক্ষোভ দমনে সৈন্য পাঠায়। রোববার (৯ জানুয়ারি) আরব নিউজের এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়।
দেশটির প্রেসিডেন্ট কাসিম-জোমার্ট টোকায়েভের কার্যালয় জানায়, বিভিন্ন আদেশের কারণে দেশ স্থিতিশীল হয়েছে। পাশাপাশি কর্তৃপক্ষ বিক্ষোভকারীদের দখলে থাকা প্রশাসনিক ভবনগুলোরও নিয়ন্ত্রণ নিয়েছে। বিক্ষোভের সময় বেশ কয়েকটি সরকারি ভবনে আগুন দেওয়া হয়েছিল। রাশিয়ার গণমাধ্যমের এক প্রতিবেদনে বলা হয়, কাজাখস্তানের আলমাতি এলাকায় রোববারও বিক্ষিপ্তভাবে গুলির শব্দ শোনা গেছে।
গত সপ্তাহে আলমাতি বিমানবন্দরের নিয়ন্ত্রণে নিয়েছিল বিক্ষোভকারীরা। তারপর থেকেই বিমানবন্দরটি বন্ধ ছিল। এখন এটি সরকারের দখলে এসেছে। তাই এর কার্যক্রম সোমবার থেকে আবারও শুরু হবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
জ্বালানি তেলের দাম বৃদ্ধির জেরে সরকারের পতন চেয়ে দেশজুড়ে ব্যাপক বিক্ষোভ-প্রতিবাদকে কেন্দ্র করে প্রধানমন্ত্রীসহ পুরো মন্ত্রিসভাকে বরখাস্ত করেন দেশটির প্রেসিডেন্ট। কিন্তু তারপরেও পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনা সম্ভব হয়নি। এদিকে দেশটিতে রুশ নেতৃত্বাধীন সেনাবাহিনীর উপস্থিতি নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে যুক্তরাষ্ট্র।
বিক্ষোভ-সহিংসতায় এখন পর্যন্ত অনেক মানুষ প্রাণ হারিয়েছে। মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিনকেন বলছেন, যুক্তরাষ্ট্র বিশ্বাস করে যে, কাজাখস্তান সরকার নিজেই পরিস্থিতি শান্ত করতে সক্ষম। তিনি সাংবাদিকদের বলেন, কেন বিদেশি সেনা মোতায়েন করা হচ্ছে সে বিষয়টি পরিষ্কার নয়।
কাজাখস্তানের সাম্প্রতিক সহিংসতায় কয়েক ডজন মানুষ নিহত ও বহুসংখ্যক দোকানপাট ও ঘরবাড়ি আগুনে জ্বালিয়ে দেওয়া হয়। ১৯৯০ সালের দিকে সোভিয়েত ইউনিয়ন থেকে স্বাধীনতা লাভের পর কাজাখস্তান এই প্রথম এমন ভয়াবহ সহিংসতার তিক্ত অভিজ্ঞতা অর্জন করলো।
কাজাখস্তান হচ্ছে তেল ও ইউরেনিয়াম উৎপাদনকারী একটি গুরুত্বপূর্ণ দেশ। দেশটির সরকার দাবি করছে, বর্তমানে যে সহিংসতা চলছে তার পেছনে বিদেশি শক্তির হাত রয়েছে। দেশের নিরাপত্তা ও ভৌগোলিক অখণ্ডতা নস্যাৎ করার জন্য প্রশিক্ষিত ও সংঘবদ্ধ সশস্ত্র চক্রকে ব্যবহার করা হচ্ছে বলেও অভিযোগ দেশটির সরকারের। এদিকে চলমান সহিংসতায় নিরাপত্তা বাহিনীর অন্তত ১৮ সদস্য নিহত হয়েছেন।
এমএসএম/টিটিএন/জেআইএম