এসআই রফিককে কারণ দর্শানোর নির্দেশ


প্রকাশিত: ০১:৩২ পিএম, ০৪ জানুয়ারি ২০১৬

নারায়ণগঞ্জের সিদ্ধিরগঞ্জের জালকুড়ির গৃহবধূর রহস্যজনক মৃত্যুর ঘটনায় দায়েরকৃত মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা এসআই রফিকুল ইসলামকে কারণ দর্শানোর নোটিশ দিয়েছে আদালত। নারায়ণগঞ্জ সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট চাঁদনী রূপম এ নির্দেশ দিয়েছেন।

আগামী ২৫ জানুয়ারি এসআই রফিককে স্ব-শরীরে আদালতে হাজির হয়ে কারণ দর্শাতে বলা হয়েছে। এছাড়া এসআই রফিকের চাকরির যোগ্যতা রয়েছে কিনা ? সে বিষয়েও জানতে চেয়েছেন আদালত।

আদালত সূত্রে জানা যায়, গত বছরের ১৮ মে সিদ্ধিরগঞ্জের জালকুড়ি মাইজপাড়া মাদবর বাজার এলাকায় থেকে গৃহবধূ উম্মে সালমার ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ।

গৃহবধূ মৃত্যুর বিষয়টি রহস্যজনক হলেও সিদ্ধিরগঞ্জ থানা পুলিশের এসআই রফিকুল ইসলাম বিবাদী পক্ষের দ্বারা প্রভাবিত হয়ে বাদীপক্ষকে ভুল বুঝিয়ে আত্মহত্যার প্ররোচনার মামলা দায়ের করান বলে অভিযোগ বাদীপক্ষের। ঘটনার তিন মাস পরে গত ৩১ আগস্ট হত্যা মামলা দায়েরের উদ্দেশ্যে নারায়ণগঞ্জের চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে পিটিশন (৮১/২০১৫) দাখিল করেন মৃতের মা ছালেহা বেগম। এতে উল্লেখ করা হয়, স্বামীর ভাগ্নির পরকীয়া প্রেমের কথা ফাঁস করে দেয়ায় উম্মে সালমাকে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করা হয়েছে।

পিটিশন মামলার আসামিরা হলেন, নিহতের স্বামী সাবেক নৌ-বাহিনীর সদস্য আবু তালেব, স্বামীর বড় বোন নাসিমা বেগম, ভগ্নিপতি রুহুল আমিন, ভাগ্নি রাত্রী বেগম, শাশুড়ি জবেদা বেগম, রেখা বেগম ও ফারুক মিয়া।

১৫ সেপ্টেম্বর চার্জশিটের বিরুদ্ধে নারাজি দেন বাদী নিহতের বোন শারমিন সুলতানা। এরপর আদালতের নির্দেশে মামলাটি তদন্ত শুরু করে ডিবি পুলিশ। তবে মামলা দায়েরের পর থেকে মৃত সালমার পরিবারকে নানাভাবে ভয়-ভীতি দেখানো হচ্ছে। সম্প্রতি তাদের বিরুদ্ধে এলাকায় সমাবেশ করে অভিযুক্তদের পরিবার ও তার স্বজনরা। এ সময় তারা মামলার বাদীপক্ষকে এলাকা ছাড়া করারও হুমকি দেন।

আদালত সূত্র জানায়, মামলাটির তৎকালীন তদন্তকারী কর্মকর্তা এসআই মো. রফিকুল ইসলাম গত ১৭ অক্টোবর একটি তদন্ত প্রতিবেদন আদালতে দাখিল করেন। তিনি প্রতিবেদনে উল্লেখ করেন, তদন্তকালে মামলায় উল্লেখিত ঘটনার কোনো সত্যতা পাওয়া যায়নি।

এদিকে, গত ২২ ডিসেম্বর নারায়ণগঞ্জ সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট চাঁদনী রূপমের আদালতে পিটিশনের শুনানি অনুষ্ঠিত হয়। শুনানি শেষে আদেশে আদালত উল্লেখ করেন, এই মামলার ঘটনার বিষয়ে তদন্ত করার আদেশ আদালত তৎকালীন  তদন্তকারী কর্মকর্তাকে দেয়নি। তবুও উপযাচক হয়ে ঘটনার বিষয়ে তদন্ত করে রিপোর্ট প্রদান করার আগ্রহ কেন তার তা আদালতের বোধগম্য নয়। আদেশের অনুলিপি সিদ্ধিরগঞ্জ থানার ওসিকে প্রদান করা হয়েছিল।

ওই আদেশ পড়ে বোঝার যোগ্যতা তদন্তকারী কর্মকর্তার না থাকলে এসআই পদে চাকরি করার যোগ্যতা তার আছে কিনা ? তাতে আদালতের সন্দেহ আছে। এই মামলার বিষয়ে অপ্রয়োজনীয় মন্তব্য করায় আইনের লঙ্ঘন হয়েছে। এই মামলাকে ক্ষতিগ্রস্ত করার মনোভাব তদন্তকারী কর্মকর্তা কেন দেখাবেন তা আদালতের নিকট বোধগম্য নয়। তাই আগামী ২৫ জানুয়ারি আদালতে স্ব-শরীরে উপস্থিত হয়ে এসআই মো. রফিকুল ইসলামকে প্রতিবেদন বিষয়ে ব্যাখ্যা করার নির্দেশ দেয়া হল।

আর এ ব্যর্থতার বিরুদ্ধে সরাসরি আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। আদেশের অনুলিপি সিদ্ধিরগঞ্জ থানার ওসি ও এসআই রফিকুল ইসলাম বরাবরে প্রেরণেরও নির্দেশ দিয়েছেন আদালত।

এ বিষয়ে সিদ্ধিরগঞ্জ থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. সরাফতউল্লাহ জাগো নিউজকে জানান, তিনি এখনো আদালতের আদেশের কপি হাতে পাননি।

শাহাদাত হোসেন/এআরএ/পিআর

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।