মিয়ানমারে সহিংস ঘটনার পর সেভ দ্য চিলড্রেনের দুই কর্মী নিখোঁজ

আন্তর্জাতিক ডেস্ক
আন্তর্জাতিক ডেস্ক আন্তর্জাতিক ডেস্ক
প্রকাশিত: ০৯:৩৩ এএম, ২৬ ডিসেম্বর ২০২১

মিয়ানমারে যুক্তরাজ্যভিত্তিক একটি আর্ন্তজাতিক বেসরকারি সংস্থা, সেভ দ্য চিলড্রেনের দুই কর্মী নিখোঁজ হওয়ার খবর পাওয়া গেছে। দেশটিতে দ্বন্দ্ব সংঘাতে বিধ্বস্ত কায়া রাজ্যে জান্তা সরকারের নিরাপত্তা বাহিনীর বিরুদ্ধে নারী ও শিশুসহ ৩০ জনকে পুড়িয়ে মারার অভিযোগ আসার পরপরই সংস্থাটি তাদের কর্মী নিখোঁজের এ খবর জানালো।

সেভ দ্য চিলড্রেন এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, মিয়ানমারের পূর্বাঞ্চলের একটি রাজ্যে সহিংসতায় নারী-শিশুসহ নিহত হয়েছেন অন্তত ৩৫ জন। একই সময়ে তাদের দুইজন কর্মীকে ‘‘আটক’’ করা হয়েছিল। কিন্তু এখন তাদের খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না। তারা ‘‘নিশ্চিত হতে পেরেছে যে তাদের ব্যক্তিগত গাড়িতে হামলা করা হয়েছে এবং পুড়িয়ে দেওয়া হয়েছে”। এ ঘটনার পর বিভিন্ন এলাকায় তাদের কার্যক্রম স্থগিত করা হয়েছে। 

সেভ দ্য চিলড্রেন-এর প্রধান নির্বাহী ইনগার অ্যাশিং এই হামলার নিন্দা জানিয়ে বলেছেন, আন্তর্জাতিক মানবাধিকার লঙ্ঘন করা হয়েছে। তিনি আরও বলেন, নিরীহ বেসামরিক নাগরিক এবং আমাদের কর্মীদের বিরুদ্ধে চালানো সহিংসতায় আমরা আতঙ্কিত।

মিয়ানমারের রাষ্ট্রীয় সংবাদমাধ্যম সেনাবাহিনীর বরাত দিয়ে বলেছে, সেনাবাহিনী ওই গ্রামে বিরোধী সশস্ত্র বাহিনীর বেশ কয়েকজন ‘অস্ত্রধারী সন্ত্রাসী’কে গুলি করে হত্যা করেছে। এতে আরও বলা হয়, অস্ত্রধারীরা সাতটি গাড়িতে ছিলেন এবং সামরিক বাহিনীর নির্দেশের পরও তারা থামেননি।

কারেনি ন্যাশনালিটিজ ডিফেন্স ফোর্স হচ্ছে সামরিক জান্তা বিরোধিতাকারী বেশ কয়েকটি বেসামরিক মিলিশিয়ার মধ্যে অন্যতম। ফোর্সটির দাবি নিহতরা তাদের দলের সদস্য নয়। বরং সাধারণ মানুষ। তাদের একজন কমান্ডার নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, এমন হত্যাকাণ্ডে আমরা হতবাক। কারণ মরদেহগুলো শিশু, নারী ও বৃদ্ধদের।

শনিবার সামাজিক মাধ্যমে ওই নৃসংশ ঘটনার ছবি ছড়িয়ে পড়ে। পিপলস ডিফেন্স ফোর্সেসের (পিডিএফ) এক স্থানীয় সদস্য জানান, শনিবার সকালে তারা যখন এলাকা ঘুরে দেখেন, দেখতে পান যে, দুটি ট্রাক জ্বালিয়ে দেওয়া হয়েছে। সেখানে চারজনের মরদেহ পাওয়া যায়। তিনি আরও জানান, আমরা ২৭ জনের মরদেহ পেয়েছি।

গত ১ ফেব্রুয়ারি অভ্যুত্থানের মাধ্যমে গণতান্ত্রিক সরকারকে উৎখাত করে ক্ষমতা দখল করে নেয় মিয়ানমারের সামরিক বাহিনী। তবে দেশটির সিংহভাগ জনগণ বিষয়টি মেনে নেয়নি। রাস্তায় বিক্ষোভ, সরকারি কাজকর্ম বয়কটসহ সশস্ত্র বিদ্রোহের মাধ্যমে জান্তার বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানাচ্ছে তারা। স্থানীয় মনিটরিং গ্রুপগুলো বলছে, মিয়ানমারে সেনা অভূত্থানের পর সহিংসতায় এ পর্যন্ত ১৩শর বেশি মানুষ নিহত হয়েছেন।

এদিকে, দেশটির গণতান্ত্রিক নেত্রী অং সান সূচি ১১ মাস ধরে কারাবন্দি রয়েছেন। তার বিরুদ্ধে দুনীর্তি ও জালিয়াতির অভিযোগ আনা হয়েছে। এরই পরিপ্রেক্ষিতে তার বিরুদ্ধে মিয়ানমারের আদালতে চলছে বিচার কার্যক্রম।

সূত্র: আল-জাজিরা

এসএনআর/এমএস

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।