আশা জাগিয়ে শেষ হল বর্ণিল বিচ কার্নিভাল


প্রকাশিত: ১১:৩৫ পিএম, ০২ জানুয়ারি ২০১৬

বিশ্বের দীর্ঘতম কক্সবাজার সমুদ্র সৈকতে উৎসবে দিন কাটিয়েছে পর্যটকরা। সমুদ্র সৈকতে দিনব্যাপী নানা আয়োজন উপভোগ করে লাখো পর্যটক ছিল উৎসবে উচ্ছ্বসিত। সরকার ঘোষিত পর্যটন বর্ষ উপলক্ষে সৈকতের বালিয়াড়িতে আয়োজিত মেগা বিচ কার্নিভালকে কেন্দ্র করে চলে এ উচ্ছ্বাস। এছাড়া স্থানীয় সংস্কৃতি ও ঐতিহ্যের উপস্থাপনায় কার্নিভাল পরিণত হয় এক অন্যন্য উৎসবে। উদ্বোধনীতে প্রতিবছর আয়োজনের ঘোষণা ও উদ্দীপনায় সব বয়স ও শ্রেণির মানুষের উপস্থিতি আশা জাগিয়ে শনিবার সন্ধ্যায় শেষ হল মেগা বিচ কার্নিভাল।

প্রধানমন্ত্রীর ঘোষণা অনুযায়ী পর্যটন বর্ষকে সামনে রেখে ৩১ ডিসেম্বর কক্সবাজার সমুদ্র সৈকতে শুরু হয় ৩ দিনের প্রথম মেগা বিচ কার্নিভাল। বৃহস্পতিবার সকাল ১০টায় রাজসিক র্যালি ও স্মরণকালের নানা আয়োজনের মাধ্যমে শুভ সূচনা হয় অনুষ্ঠানের। পরে উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের পূর্বে বায়তুশ শরফ জব্বারিয়া একাডেমির শিক্ষার্থীদের শতভাগ বাঙ্গালীয়ানার পরিবেশনা দর্শকের মন কাড়ে। ওই প্রদর্শনীতে প্রতীকি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও ৭ মার্চের ভাষণের প্রতীকী বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে দেখে উপস্থিত অতিথিসহ পর্যটকরা অভিভূত হন।

এছাড়া তিন দিনের কার্নিভালে সৈকতের আকাশ বর্ণিল করেছে নানা রঙ্গের ঘুড়ি, বেলুন ও ফানুস। এসবের রংয়ে রঙ্গিন সৈকত পর্যটকদের দৃষ্টি কাড়ে। তিনদিন ধরে বালিয়াড়িতে অনুষ্ঠিত হয়েছে বিভিন্ন ধরনের খেলাধুলাও। টানা তিনদিনের এই কার্নিভালে মঞ্চ কাঁপিয়েছেন দেশের খ্যাতনামা শিল্পীরা। নগর বাউল জেমস, এলআরবি’র আইয়ুব বাচ্চু, বাঁশির জাদুকর বারি সিদ্দিকী, অগ্নিকন্যা মিলা, আঁখি আলমগীর, জলের গান ও চিরকুট ব্যান্ডের মত শিল্পীদের সূরের মূর্ছনায় মুখরিত হয়ে উঠেছিল সমুদ্র সৈকতের ঢেউয়ের গর্জন। কার্নিভাল আয়োজন নিয়ে সন্তুষ্ট পর্যটন সংশ্লিষ্টরা।

কক্সবাজার ট্যুর অপারেটর অ্যাসোসিয়েশন (টুয়াক) সভাপতি রেজাউল করিম বলেন, পর্যটন ব্যবসায়ীরা চান এ কার্নিভাল প্রতিবছর আয়োজন হউক। কারণ এই কার্নিভালের মাধ্যমে কক্সবাজারের পর্যটন আরো বহুদূর এগিয়ে যাবে। পাশাপাশি পর্যটকের উপস্থিতি বৃদ্ধি পেলে সরকারের রাজস্ব আয়ও বৃদ্ধি পাবে।

টানা তিন দিনের এই আয়োজনে নিশ্চিদ্র নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করে ট্যুরিস্ট ও জেলা পুলিশ। শান্তিপূর্ণ পরিবেশে মেগা বীচ কার্নিভাল সম্পন্ন হওয়ায় পর্যটক ও স্থানীয়দের ধন্যবাদ জানান জেলা পুলিশ সুপার শ্যামল কুমার নাথ।

কক্সবাজার জেলা প্রশাসক মো. আলী হোসেন বলেন, প্রথমবারের মত এতবড় একটি আয়োজন সফলভাবে সম্পন্ন করতে পেরে আমরা নিজেদের ধন্য মনে করি। আগামীতেও এই আয়োজন সবার সহযোগিতায় আরো সফলভাবে করতে উদ্যোগ নেয়া হবে বলে উল্লেখ করেন তিনি।

তবে এই কার্নিভাল নিয়ে কিছুটা অসন্তোষ বিরাজ করছে পর্যটকদের মধ্যে। শাহজালাল মনির, ইউনুস খান, নিহাদ আজিমসহ কার্নিভাল দেখতে আসা অসংখ্য পর্যটকদের মতে, যেসব আয়োজন উপস্থাপন করার কথা প্রচার করা হয়েছিল তার প্রত্যাশিত তেমন কিছু হয়নি। কার্নিভালে পর্যটকরা পেয়েছে মাত্র শিল্পীদের গানের কনসার্ট। তারপরও এই আয়োজন অব্যাহত রাখার দাবি পর্যটক ও স্থানীয়দের।

উল্লেখ্য, বাংলাদেশ ট্যুরিজম বোর্ড, পর্যটন কর্পোরেশন, বিচ ম্যানেজমেন্ট কমিটি ও জেলা প্রশাসনের আয়োজনে কক্সবাজার সৈকতে প্রথমবারের তিন দিনব্যাপী মেগা বিচ কার্নিভাল অনুষ্ঠিত হয়।
 
জেডএইচ

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।