করোনায় গন্ধ পাওয়ার অনুভূতি ফেরাতে পারে ভিটামিন-এ
করোনাভাইরাসের কারণে অনেকেরই স্বাদ, গন্ধের অনুভূতি হারিয়ে যায়। অনেকের ক্ষেত্রে এই সমস্যায় দীর্ঘদিন ভুগতে হচ্ছে। এ থেকে পরিত্রানের উপায় খুঁজে বের করার চেষ্টা করে যাচ্ছেন বিজ্ঞানীরা। সম্প্রতি নাকে ভিটামিন-এ’র ড্রপ ব্যবহারের মাধ্যমে এক্ষেত্রে সুফল পাওয়া গেছে। যুক্তরাজ্যের গবেষকরা বলছেন, নাকে ভিটামিন-এ’র ড্রপ ব্যবহারের মাধ্যমে গন্ধের অনুভূতি হয়তো ফিরে পাওয়া সম্ভব।
ইস্ট অ্যাগলিয়া বিশ্ববিদ্যালয় ১২ সপ্তাহের একটি ট্রায়াল চালিয়েছে। অল্প কিছু স্বেচ্ছাসেবীর ওপর এই ট্রিটমেন্ট চালানো হয়েছে। কিন্তু ওই দলের সবাইকে পঁচা ডিম এবং গোলাপের গন্ধ শুঁকতে দেওয়া হয়েছিল।
সে সময় ব্রেনে স্ক্যান করে দেখা হয়েছে যে ভিটামিন ক্ষতিগ্রস্থ ঘ্রাণ শক্তি বা গন্ধ বুঝতে পারার নার্ভগুলোকে ঠিক করতে পারছে কিনা। কোভিডের কারণে ঘ্রাণ হারিয়ে ফেলা বা এক জিনিসের ভিন্ন ঘ্রাণ পাওয়ার ঘটনা খুবই সাধারণ। তবে অন্যান্য ভাইরাসজনিত রোগ যেমন ফ্লুর কারণেও ঘ্রাণ বা গন্ধের অনুভূতি হারিয়ে যায়।
কিন্তু অধিকাংশ লোকজনই কয়েক সপ্তাহের মধ্যেই এই অনুভূতি ফিরে পায়। আবার কোভিড পরবর্তী সময়ে অনেকের ক্ষেত্রেই এই সমস্যা দীর্ঘদিন ধরে চলতে থাকে।
২৯ বছর বয়সী লিনা আলনাদি লন্ডনের বাসিন্দা। কোভিডের পর তাকে ভয়াবহ অভিজ্ঞতার মুখোমুখি হতে হচ্ছে। তিনি প্রতিটি জিনিসের ভিন্ন কোনো গন্ধ বা ঘ্রাণ পাচ্ছেন। অনেক কিছুর গন্ধই তার কাছে বদলে গেছে।
ট্যাপের পানিতে তিনি ভয়ঙ্কর গন্ধ পান। আমরা সাধারণত জলাভূমি বা নর্দমা থেকে যেমন গন্ধ পাই তিনি ট্যাপের পানিতে সে ধরনের গন্ধ পান। ধনিয়ার মধ্যে তিনি ডিওডোরেন্টের গন্ধ পান। তার খুব প্রিয় খাবার ডিমে তিনি পান রাবারের গন্ধ। এর ফলে তার সুন্দর দিনগুলো ভয়াবহ হয়ে উঠছে।
তিনি বলেন, এমন সব উদ্ভট গন্ধের অনুভূতির কারণে আমি এখন অনেক খাবার খেতেই পারি না। আমি সত্যিই খুব হতাশ হয়ে পড়েছি। গোসল করা বা দাঁত ব্রাশ করার মতো সাধারণ জিনিসগুলো তার এই অনুভূতির কারণে অপ্রীতিকর হয়ে উঠেছে।
তবে এই অবস্থা থেকে বাঁচার জন্য নিজে কিছু টিপস খুঁজে বের করেছেন লিনা। তিনি বলেন, খাবারে লেবু বা মরিচ নিয়ে নিলেই এর গন্ধ কিছুটা ভালো হয়ে যায়।
ইউইএ’এস নরউইচ মেডিকেল স্কুল অ্যান্ড জেমস প্যাগেট ইউনিভার্সিটি হসপিটালস এনএইচএস ট্রাস্টের প্রধান গবেষক অধ্যাপক কার্ষ ফিলপট বলেন, রোগীদের মস্তিষ্কের যে অংশ গন্ধের অনুভূতি পেতে সহায়তা করে সেগুলো ভিটামিন-এ ড্রপের কারণে বাড়ছে কিনা সে বিষয়টি আমরা খুঁজে বের করার চেষ্টা করছি।
টিটিএন/জেআইএম