জমে উঠেছে সোনারগাঁও পৌরসভা নির্বাচন
জমে উঠেছে নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁও পৌরসভা নির্বাচন। পৌরসভার প্রতিটি ওয়ার্ডে এখন বিরাজ করছে নির্বাচনী আমেজ। প্রার্থী ও তাদের সর্মথকদের পদচারণায় মুখরিত পুরো নির্বাচনী এলাকা। ব্যানার পোস্টারে ছেঁয়ে গেছে পৌরসভার সব রাস্তা ঘাট। তবে মেয়র প্রার্থীদের নিয়ে একটু বেশি ভাবছেন রাজনৈতিক দলের নেতাসহ সাধারণ ভোটাররা। দলীয় প্রতীকে নির্বাচন হওয়ায় ভাবনাটা বেশি বলে অনেকে মনে করছেন। এবার এখানে মেয়র পদে লড়াই হবে ত্রিমুখী। বিএনপির মোশারফ, আওয়ামী লীগের ফজলে রাব্বি ও বিদ্রোহী প্রার্থী সাদেকুর রহমান সাদেকের মধ্যে লড়াই হবে।
এদিকে সোনারগাঁও পৌরসভার নির্বাচনে মেয়র পদে ত্রিমুখী লড়াইয়ের সম্ভবনা দেখা গেলেও আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী সাদেকুর রহমান সাদেক ও আওয়ামী লীগের প্রার্থী অ্যাডভোকেট ফজলে রাব্বীর মধ্যে চলছে প্রতিদ্বন্দ্বিতা। তারা একে অপরকে ঘায়েল করতে নানা ধরনের অপপ্রচার করে নিজেদের অবস্থান তৈরি করার চেষ্টা করছেন। তবে সাদেকুর রহমান গত নির্বাচনে বিএনপি-জামায়াতের প্রার্থী হয়ে নির্বাচন করে মেয়র হিসেবে নির্বাচিত হন। কিন্তু এবার নারায়ণগঞ্জ-৪ আসনের এমপি শামীম ওসমান ও সাংসদ লিয়াকত হোসেন খোকা সাদেকুর রহমানকে প্রাথমিক সমর্থন করলেও দলীয়ভাবে তিনি সমর্থন পাননি।
আওয়ামী লীগ থেকে মেয়র প্রার্থী হিসেবে ফজলে রাব্বিকে মনোনীত করা হয়। এরপর থেকে সাদেক আর রাব্বির মধ্যে শুরু হয় মল্লযুদ্ধ। তবে দুই প্রার্থীর মধ্যে বিরোধে ভোট কাটাকাটি নিয়ে যুদ্ধ শুরু হলেও বিএনপি মনোনীত মেয়র প্রার্থী মোশারফ হোসেন সুবিধা গ্রহণ করতে পারেন বলে সাধারণ ভোটাররা মনে করছে।
এদিকে ফজলে রাব্বিকে রাজাকারের সন্তান হিসেবে প্রচার করতে দেশের প্রভাবশালী একটি দৈনিক সংবাদপত্রে বিজ্ঞাপন দিয়েছিল আওয়ামী লীগের একটি পক্ষ। রাব্বিকে ঘায়েল করতে নানাভাবে উঠে পড়ে লেগেছে প্রভাবশালী ওই পক্ষ। আর তাদের প্রতিহত করতে নারায়ণগঞ্জের আড়াইহাজারের এমপি নজরুল ইসলাম বাবু মোকাবেলা করে চলছে। তবে সোনারগাও পৌরসভার নির্বাচনে সাদেক আর রাব্বির মধ্যে বিরোধ থাকায় সুবধা গ্রহণ করতে বিএনপির প্রার্থী কৌশলে প্রচারণা চালাচ্ছে। আর নির্বাচনে উভয় প্রার্থীরা ভোটারদের মন জয় করতে প্রচুর টাকা ব্যয় করছে বলে জানা গেছে।
এদিকে, ভোটারদের বাড়ি বাড়ি গিয়ে নিজেদের পক্ষে সর্মথন আদায়ে প্রার্থীরা চষে বেড়াচ্ছেন তাদের নির্বাচনী এলাকা। নানা প্রতিশ্রুতি নিয়ে হাজির হচ্ছেন ভোটারদের ঘরে ঘরে। পৌর নির্বাচনে আওয়ামী লীগ প্রার্থী অ্যাডভোকেট ফজলে রাব্বী ও বিএনপি প্রার্থী মোশারফ হোসেন ছাড়াও সমান তালে প্রচারণায় ব্যস্ত সময় কাটাচ্ছেন আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী (নিজে স্বতন্ত্র দাবি করেন) মেয়র প্রার্থী সাদেকুর রহমান। সোনারগাঁও পৌরসভা নির্বাচনে মেয়র পদে ৪ জন, কাউন্সিলর পদে ২৭ জন ও সংরক্ষিত মহিলা কাউন্সিলর পদে ৬ জন প্রার্থীসহ মোট ৩৭ জন নেমেছেন প্রতিদ্বন্দ্বিতায়।
নির্বাচনের দিন যতই ঘনিয়ে আসছে, পৌর এলাকার পাড়া-মহল্লায় ভোটারদের মধ্যে ততোই আনন্দ উৎসব বিরাজ করছে। পৌরসভার প্রতিটি ওয়ার্ড পোস্টার, ব্যানার ও ফেস্টুনে ছেঁয়ে গেছে। পৌরসভায় মেয়র পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন আওয়ামী লীগের মনোনীত প্রার্থী অ্যাডভোকেট ফজলে রাব্বি (নৌকা), বিএনপির মনোনীত প্রার্থী মো. মোশারফ হোসেন (ধানের শীষ), স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন বঞ্চিত বর্তমান মেয়র সাদেকুর রহমান (জগ) ও অ্যাডভোকেট জাহিদুল আজাদ নজরুল (নারিকেল গাছ)।
এছাড়া সাধারণ কাউন্সিলর পদে পৌরসভার ১ নং ওয়ার্ডে মো. আকতার হোসেন ভূইয়া (পাঞ্জাবী), মো. কাওছার মিয়া (ডালিম) ও মো. শাহাজালাল (উটপাখি)। ২ নম্বর ওয়ার্ডে নাঈম আহমেদ রিপন (টেবিল ল্যাম্প) মাইন উদ্দিন (পানির বোতল) মো. জাহাঙ্গীর আলম (পাঞ্জাবী) মো. শামীম মীর (উটপাখি) ও মো. আহসান জামিল ভূইয়া (ডালিম)। ৩ নং ওয়ার্ডে মো. মোতালেব মিয়া (পানির বোতল) মো. লায়ন মোশারফ হোসেন (উটপাখি)। ৪ নম্বর ওয়ার্ডে মো. আবুল হোসেন (ডালিম) মো. আলী আকবর (উটপাখি)। ৫ নং ওয়ার্ডে দুলাল মিয়া (পাঞ্জাবী) ও মো. সিরাজ মিয়া (উটপাখি)। ৬ নং ওয়ার্ডে মো. রফিকুল ইসলাম (ডালিম), মোহাম্মদ দ্বীন ইসলাম (উটপাখি) ও আব্দুর রউফ ভূঁইয়া (পাঞ্জাবী)। ৭ নং ওয়ার্ডে এম এ বাছেদ (পাঞ্জাবী), কাউসার আহম্মেদ (ব্ল্যাক বোর্ড), মো. নাছিম পাশা (ডালিম), মো. শাহাজাদা মিয়া (পানির বোতল) শামীম হোসেন (উটপাখি) ও হাসান জাহাঙ্গীর (ফাইল কেবিনেট)। ৮ নং ওয়ার্ডে ফারুক আহমেদ তপন (ডালিম) ও মোস্তফা কামাল শাহিন (উটপাখি)। ৯ নং ওয়ার্ডে মো. মনিরুজ্জামান মধু (পাঞ্জাবী) ও মো. হারুন অর রশিদ ফালান (উটপাখি)। সংরক্ষিত মহিলা কাউন্সিলর পদে ১, ২ ও ৩ নং ওয়ার্ডে নুরুন নাহার (কাঁচি) ও রোকসানা আক্তার (গ্যাসের চুলা)। ৪, ৫, ও ৬ নং ওয়ার্ডে আলেয়া আক্তার (কাঁচি) ও জাহেদা আক্তার মনি ( আঙুর ফল) ৭, ৮, ও ৯ নং ওয়ার্ডে পারভীন আক্তার (কাঁচি) ও রেহানা আক্তার (গ্যাসের চুলা) প্রতীকে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।
মো. শাহাদাত হোসেন/একে