যেখানে বন্দি ছিলেন, সেই কারাগারের আজ পাহারাদার তারা

আন্তর্জাতিক ডেস্ক
আন্তর্জাতিক ডেস্ক আন্তর্জাতিক ডেস্ক
প্রকাশিত: ০৬:২০ পিএম, ১৫ সেপ্টেম্বর ২০২১
ছবি: সংগৃহীত

একসময় কাবুলের প্রধান কারাগারটি ছিল বন্দিতে ঠাসা। পশ্চিমাসমর্থিত আফগান সরকারের হাতে গ্রেফতার হাজার হাজার তালেবান যোদ্ধাকে আটকে রাখা হয়েছিল সেখানে। কিন্তু আজ দিন বদলেছে, বদলে গেছে দৃশ্যপট। যে তালেবান সদস্যদের আটকে রাখা হতো কারাগারটিতে, আজ তারাই হয়ে উঠেছেন সেখানকার পাহারাদার, সেখানকার নিরাপত্তারক্ষী।

গত ২০ বছর যুক্তরাষ্ট্রের তাবেদারিতে চলা আফগানিস্তানের পরিস্থিতি তালেবান ক্ষমতা দখলের পর কত দ্রুত বদলে যাচ্ছে, এটি যেন তারই প্রতিচ্ছবি। কাবুলের নিয়ন্ত্রণ নেওয়ার পরপরই শহরটির পূর্ব উপকণ্ঠে অবস্থিত পুল-ই-চরখি কারাগারে বন্দি সবাইকে মুক্ত করে দেয় তালেবান। তার আগেই পালিয়ে যায় সেখানকার সরকারি নিরাপত্তারক্ষীরা। বর্তমানে কারাগাটি চালাচ্ছে কয়েক ডজন সশস্ত্র তালেবান যোদ্ধা।

jagonews24

ছবি: সংগৃহীত

পুল-ই-চরখি কারাগারে বন্দি নির্যাতনের সুদীর্ঘ ইতিহাস রয়েছে। সেখানে বহু মানুষের মৃত্যুদণ্ড কার্যকর হয়েছে। খুঁজে পাওয়া গেছে সত্তর-আশির দশকে সোভিয়েত-সমর্থিত আফগান সরকারের সময়ে খোড়া গণকবর ও টর্চার সেল। পশ্চিমাসমর্থিত সরকারের অধীনেও কারাগারটির অবস্থা ছিল শোচনীয়। পাঁচ হাজার বন্দির জন্য তৈরি হলেও সেখানে কখনো কখনো ১০ হাজারের বেশি মানুষকে রাখা হয়েছে, যাদের মধ্যে ছিলেন বহু তালেবান যোদ্ধাও।

সম্প্রতি কাবুলের কারাগারটি পরিদর্শনে গিয়েছিলেন এক তালেবান কমান্ডার। এসময় তিনি ঘুরেফিরে দেখেছেন খালি পড়ে থাকা সারি সারি সেল, বিশাল হলগুলো। সঙ্গীদের দেখিয়েছেন, তাকে কোথায় আটকে রাখা হয়েছিল।

jagonews24

ছবি: সংগৃহীত

নামপ্রকাশে অনিচ্ছুক ওই তালেবান কমান্ডার জানান, প্রায় ১০ বছর আগে কুনার প্রদেশ থেকে তাকে গ্রেফতার করা হয়। পরে হাত-চোখ বেঁধে নিয়ে আসা হয় কাবুলের পুল-ই-চরখি কারাগারে। তিনি বলেন, ওই দিনগুলোর কথা মনে পড়লে আমি আজও আতঙ্কবোধ করি।

তালেবান কমান্ডার জানান, কারাগারটিতে বন্দিদের ওপর নির্মম নির্যাতন চালানো হতো। সেখানে টানা ১৪ মাস বন্দি ছিলেন তিনি, পরে মুক্তি দেওয়া হয়। কমান্ডার বলেন, সেগুলো আমার জীবনের সবচেয়ে অন্ধকার দিন। আর এখন সবচেয়ে আনন্দ হচ্ছে যে, আমি মুক্ত এবং নির্ভয়ে এখানে আসতে পেরেছি।

সূত্র: আল জাজিরা

কেএএ/এএসএম

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।