স্লোভেনিয়ায় করোনার চতুর্থ ঢেউ
মধ্য ইউরোপের দেশ স্লোভেনিয়াতে নতুন করে বৃদ্ধি পাচ্ছে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা। দেশটির স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের প্রকাশিত সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী গত চব্বিশ ঘণ্টায় এক হাজার ৯৩ জনের করোনাভাইরাস শনাক্ত হয়েছে। যা গত এপ্রিলের পর সর্বোচ্চ। এছাড়াও প্রাণঘাতী করোনাভাইরাসের সংক্রমণে গত চব্বিশ ঘণ্টায় স্লোভেনিয়াতে মৃত্যুবরণ করেছেন তিনজন। শনাক্তের হার ২০ শতাংশ ছাড়িয়েছে যা দেশটির সাধারণ মানুষের মধ্যে উদ্বেগ সৃষ্টি করেছে।
শুধু স্লোভেনিয়া নয় উত্তর মেসিডোনিয়া, অস্ট্রিয়া, সুইজারল্যান্ড, সার্বিয়া, রোমানিয়া, বুলগেরিয়া, ক্রোয়েশিয়াসহ ইউরোপের অনেক দেশে গ্রীষ্মের বিদায়ের সঙ্গে সঙ্গে ক্রমশ বাড়ছে নতুন করে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা। বিশেষজ্ঞদের মতে, ইউরোপের বিভিন্ন দেশে এরই মধ্যে করোনা ভাইরাসের চতুর্থ ঢেউ শুরু হয়েছে এবং যদি নীতি-নির্ধারকেরা প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ না করেন তাহলে চতুর্থ ঢেউয়ে ইউরোপের বিভিন্ন দেশে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা হবে অতীতের সব ঢেউয়ের তুলনায় অনেক বেশি।
মূলত করোনার নতুন ভ্যারিয়েন্ট ডেল্টার বিস্তারের কারণে ইউরোপে করোনার আরও একটি ওয়েভ আসতে শুরু করেছে বলে বিশেষজ্ঞরা মত দিয়েছেন। তবে অর্থনৈতিক বিপর্যয় ও জনজীবনের স্থবিরতার কথা ভেবে এ মুহূর্তে ইউরোপের কোনো দেশ লকডাউনের পথে হাঁটছে না। বরং এখন পর্যন্ত যারা ভ্যাকসিন নেননি, তাদের দ্রুত ভ্যাকসিনের আওতায় আনার জন্য ইউরোপের দেশগুলো বিভিন্ন ধরণের পদক্ষেপের কথা জানিয়েছে।
তবে কারিগরি সীমাবদ্ধতা ও পর্যাপ্ত টিকার সরবরাহ না থাকায় দক্ষিণ-পূর্ব ইউরোপের অনেক দেশ এখনো আশানুরূপভাবে টিকাদান কার্যক্রম শুরু করতে পারেনি। ইউরোপের অন্যান্য অঞ্চলের তুলনায় দক্ষিণ-পূর্ব ইউরোপের দেশগুলো অর্থনৈতিক ও অবকাঠামোগত দিক থেকে অনেক পিছিয়ে। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পরবর্তী সময় থেকে শুরু করে আশির দশকের শেষ পর্যন্ত ইউরোপের এ সব দেশে কমিউনিজমভিত্তিক শাসন ব্যবস্থার প্রচলন ছিল।
বিশ লাখ জনসংখ্যার দেশ স্লোভেনিয়াতে এখন পর্যন্ত মোট দুই লাখ ৭৩ হাজার ৫২৯ জনের শরীরে করোনাভাইরাস শনাক্ত হয়েছে এবং দেশটিতে মোট মৃত্যুবরণ করেছেন চার হাজার ৪৬২ জন।
গণটিকা কার্যক্রম জোরদার করতে সরকার দেশটিতে অবস্থিত একমাত্র আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর ইয়োজে পুচনিক ইন্টারন্যাশনাল এয়ারপোর্টে ভ্যাকসিন বুথ চালু করেছে। সোমবার, বুধবার ও শুক্রবার সপ্তাহে এ তিনদিন যে কোনো নাগরিক সরাসরি এয়ারপোর্টে গিয়ে কোনো ধরণের রেজিস্ট্রেশন ছাড়া শুধু পরিচয়পত্র দেখিয়ে জনসন অ্যান্ড জনসন উদ্ভাবিত টিকা গ্রহণ করতে পারবেন।
এমএসএম/এমএস