বারাদারই হচ্ছেন আফগানিস্তানের নতুন সরকারপ্রধান: রয়টার্স

আন্তর্জাতিক ডেস্ক
আন্তর্জাতিক ডেস্ক আন্তর্জাতিক ডেস্ক
প্রকাশিত: ০৩:৪৬ পিএম, ০৩ সেপ্টেম্বর ২০২১
ফাইল ছবি

অডিও শুনুন

তালেবানের সহ-প্রতিষ্ঠাতা মোল্লা আব্দুল গানি বারাদারের নেতৃত্বেই গঠিত হচ্ছে আফগানিস্তানের নতুন সরকার। শুক্রবার (৩ সেপ্টেম্বর) জুমার নামাজের পর যেকোনো মুহূর্তে এই ঘোষণা আসার কথা। তালেবানের একাধিক সূত্রের বরাতে এ তথ্য নিশ্চিত করেছে বার্তা সংস্থা রয়টার্স।

জানা গেছে, তালেবানের রাজনৈতিক দপ্তরের প্রধান বারাদারের পাশাপাশি সংগঠনটির সহ-প্রতিষ্ঠাতা প্রয়াত মোল্লা ওমরের ছেলে মোল্লা মোহাম্মদ ইয়াকুব এবং শের মোহাম্মদ আব্বাস স্টানিকজাই থাকছেন নতুন সরকারের উচ্চ পদে।

বিজ্ঞাপন

তালেবানের এক সদস্য নাম না প্রকাশের শর্তে রয়টার্সকে বলেছেন, তিন নেতা এরই মধ্যে কাবুলে পৌঁছেছেন। সেখানে নতুন সরকার ঘোষণার চূড়ান্ত প্রস্তুতি চলছে।

আরেকটি সূত্র জানিয়েছে, তালেবানের শীর্ষ ধর্মীয় নেতা হায়বাতুল্লাহ আখুনজাদা দেশটির ধর্মীয় বিষয়াদি দেখভাল করবেন এবং ইসলামী কাঠামোর মধ্যে শাসনের ওপর মনোযোগ দেবেন।

বিজ্ঞাপন

বিজ্ঞাপন

কে এই আব্দুল গানি বারাদার?
যুক্তরাষ্ট্রের হামলার মুখে ২০০১ সালে তালেবানের অন্য নেতাদের সঙ্গে প্রথমে কাবুল, তারপর দেশ ছেড়ে পাকিস্তানে আশ্রয় নিয়েছিলেন বারাদার। এরপর পাকিস্তানে সন্ত্রাসবাদের মামলায় আট বছর তাকে কারাভোগ করতে হয়েছিল। শেষ পর্যন্ত দীর্ঘ ২০ বছরের নির্বাসিত জীবন আর কারাবাসের পর গত ১৭ আগস্ট বিজয়ীর বেশে দেশে ফেরেন তিনি।

আন্তর্জাতিক পুলিশ সংস্থা ইন্টারপোলের নথি অনুযায়ী, মোল্লা বারাদারের জন্ম আফগানিস্তানের উরুযগান প্রদেশের উইটমাক নামের একটি গ্রামে। তবে তিনি বড় হন আফগানিস্তানের দ্বিতীয় বৃহত্তম শহর কান্দাহারে। সেখানেই একটি মাদ্রাসায় পড়াশোনা করেছেন।

জাতিগত পশতুন বারাদার ১৯৭০ ও ৮০'র দশকে আফগানিস্তান থেকে সোভিয়েত সৈন্যদের তাড়াতে ১০ বছর যুদ্ধ করেন। এরপর আফগান গৃহযুদ্ধ চলার সময় মোল্লা মোহাম্মদ ওমরের নেতৃত্বে ১৯৯৪ সালে যে কয়েকজন পশতুন মুজাহিদীন তালেবান প্রতিষ্ঠা করেন, মোল্লা বারাদার ছিলেন তাদের মধ্যে অন্যতম।

বিজ্ঞাপন

বিজ্ঞাপন

মোল্লা ওমরের ডান হাত ছিলেন তিনি। জানা যায়, তাদের মধ্যে আত্মীয়তার সম্পর্কও ছিল। মোল্লা ওমরের বোনকে বিয়ে করেন বারাদার। ১৯৯৬ সালে যখন তালেবান কাবুল দখল করে, তখন সেই সরকারে বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ পদে ছিলেন মোল্লা বারাদার। ২০০১ সালে আমেরিকার হামলায় তালেবান ক্ষমতা হারানোর আগ পর্যন্ত তিনি ছিলেন সরকারের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়েরে উপমন্ত্রী।

আমেরিকানদের তাড়া খেয়ে অন্য অনেক তালেবান নেতার সাথে তিনিও পালিয়ে যান পাকিস্তানে। এরপর পাকিস্তান সেনা গোয়েন্দাদের আশ্রয়ের ভরসা থাকলেও আমেরিকানদের হাতে ধরা পড়া বা ড্রোন হামলার ভয়ে পালিয়ে বেড়াতে হয়েছে তাকে। আমেরিকানরা যে কয়জন তালেবান এবং আল-কায়েদা নেতাকে ধরার তালিকা করেছিল, সেই তালিকায় মোল্লা বারাদারের নামও ছিল।

করাচি থেকে দোহা
সন্ত্রাসের মামলায় আট বছর পাকিস্তানের কারাগারে ছিলেন মোল্লা বারাদার। ২০১৮ সালের অক্টোবরে তাকে মুক্তি দেওয়া হয়। তখন এমন খবর বেরিয়েছিল যে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প তার মুক্তি চেয়েছিলেন, কারণ আমেরিকা আফগানিস্তানে যুদ্ধ শেষ করার জন্য তালেবানের সঙ্গে মীমাংসায় বসার সিদ্ধান্ত নেয় এবং সে লক্ষ্যে ওই সংগঠনের একজন প্রভাবশালী নেতার খোঁজ করছিলেন।

বিজ্ঞাপন

জাগোনিউজের খবর পেতে ফলো করুন

২০১৯ সালে দোহায় গিয়ে তালেবানের পক্ষে আলোচনায় নেতৃত্ব নেন বারাদার। পরের বছর অর্থাৎ ২০২০ সালে ফেব্রুয়ারিতে আমেরিকার সাথে তালেবানের পক্ষে তিনিই চুক্তি স্বাক্ষর করেন। গত দুই বছরেরও বেশি সময় ধরে তালেবানের শীর্ষ নেতাদের মধ্যে মোল্লা বারাদারকেই সারাবিশ্বের মানুষ দেখেছে।

 কেএএ/এএসএম

টাইমলাইন  

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন jagofeature@gmail.com ঠিকানায়।