আফগানিস্তান সংকট কি আরও প্রকট হচ্ছে?
আন্তর্জাতিক ডেস্ক আন্তর্জাতিক ডেস্ক
প্রকাশিত: ১২:৪৯ পিএম, ২৭ আগস্ট ২০২১
আফগানিস্তানের কাবুলে হামিদ কারজাই বিমানবন্দরে সন্ত্রাসী গোষ্ঠী ইসলামিক স্টেটের (আইএস) বোমা হামলায় নিহতের সংখ্যা বেড়ে ৯০ জনে দাঁড়িয়েছে। আহত হয়েছেন আরও দেড় শতাধিক মানুষ। হতাহতের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। খবর বিবিসির।
আগেই এমন হামলার আশঙ্কা প্রকাশ করেছিল যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, অস্ট্রেলিয়াসহ বেশ কয়েকটি দেশ। আইএস হামলা চালাতে পারে বলে সতর্কতাও দিয়েছিল তারা।
বোমা হামলায় আফগান নাগরিক, মার্কিন সেনা, এমনকি তালেবান সদস্যও নিহত হয়েছেন। ফলে ১৫ আগস্ট অনেকটা রক্তপাতহীন লড়াইয়ের মধ্য দিয়ে তালেবান ক্ষমতা গ্রহণ করলেও পরিস্থিতি এখনো স্বাভাবিক হয়নি। তালেবান ক্ষমতা দখলের পর তারা সরকার গঠনের প্রক্রিয়া শুরু করার পরপরই এমন হামলার ঘটনা ঘটল।
এদিকে, আফগানিস্তান থেকে দূতাবাস কর্মী, নিজ দেশের নাগরিকসহ দোভাষীদের সরিয়ে নিতে কাজ করছে যুক্তরাষ্ট্রসহ বিভিন্ন দেশ। আগামী ৩১ আগস্টের মধ্যে প্রত্যাহার শেষ করতে চেয়েছিলেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন। তালেবানের সঙ্গে সময়সীমা বাড়ানোর আলোচনাও হয় যুক্তরাষ্ট্রের প্রশাসনের। এখনো বিমানবন্দরে অপেক্ষায় দেশত্যাগে ইচ্ছুক লোকজন।
তালেবান ক্ষমতা দখলের পর থেকেই থমথমে পরিস্থিতি বিরাজ করছে গোটা দেশে। রাজধানী কাবুলেও অনেকটা সুনসান নীরবতা। এর মাঝে বোমা হামলার পর চরম নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন আফগানরা। অনেকে অভিযোগ করছেন, যুক্তরাষ্ট্রসহ বিভিন্ন দেশের নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যরা সেখানে থাকা সত্ত্বেও কীভাবে সন্ত্রাসীরা বোমা হামলা চালালো?
অবশ্য ঘটনার কয়েক ঘণ্টা পর হোয়াইট হাউজে ব্রিফিংকালে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন হামলাকারীদের খুঁজে বের করার প্রত্যয় ব্যক্ত করেছেন। তিনি বলেছেন, যুক্তরাষ্ট্র সন্ত্রাসীদের কাছে হার মানবে না। আমরা তোমাদের ক্ষমা করবো না। আমরা (এ ঘটনা) ভুলে যাবো না। আমরা তোমাদের খুঁজে বের করবোই এবং তোমাদের এর মূল্য দিতে হবে।
দেশটিতে আনুষ্ঠানিকভাবে নতুন সরকার এখনো ঘোষণা করেনি তালেবান। তবে এরই মধ্যে কয়েকজন মন্ত্রী নিয়োগ দিয়েছে তারা। আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতিও দেখভাল করছে তারা। আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলো সচল করার লক্ষ্যে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের গভর্নরও নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। দুই সপ্তাহ ধরে সব ধরনের আর্থিক প্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকায় মুখ থুবড়ে পড়েছে দেশটির অর্থনীতি।
দেশের বিভিন্ন বিষয়ে দ্রুত সিদ্ধান্তগ্রহণ, একইসঙ্গে আগের শাসনকালের কালিমা মোছার জন্য সাধারণ মানুষকে আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমগুলোর মাধ্যমে বারবার প্রতিশ্রুতি দিচ্ছে তালেবান। কিন্তু প্রশ্ন উঠছে নিরাপত্তার বিষয়টি নিয়ে।
আফগান নাগরিকরা বলছেন, সামনের দিনগুলোতে কী হবে, ভবিষ্যৎই বা কোন দিকে যাচ্ছে তার কিছুই ঠাহর করতে পারছেন না তারা। অনেকে অনুতাপের সুরে বলছেন, আফগানিস্তানের পরিস্থিতি কি কখনোই শান্তিপূর্ণ হবে না?
এসএনআর/এইচএ/জিকেএস