শপথ নিলেন মালয়েশিয়ার নতুন প্রধানমন্ত্রী ইসমাইল
মালয়েশিয়ার নবম প্রধানমন্ত্রী হিসেবে শপথ নিয়েছেন ইসমাইল সাবরি ইয়াকুব। ফলে দেশটিতে দীর্ঘদিন ধরে চলা রাজনৈতিক অস্থিরতার অবসান ঘটল। শনিবার দেশটির রাজা নতুন প্রধানমন্ত্রীকে শপথবাক্য পাঠ করান।
গত সোমবার (১৬ আগস্ট) মুহিউদ্দিন ইয়াসিন পদত্যাগ করার পর তার স্থলাভিষিক্ত হলেন ইসমাইল সাবরি।
এর আগে মুহিউদ্দিন ইয়াসিনের মন্ত্রিপরিষদে সিনিয়র সুরক্ষামন্ত্রী থেকে উপ-প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করেছেন ইসমাইল সাবরি। ২০০৮ সালে তিনি আবদুল্লাহ আহমদ বাদাবীর অধীনে যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রী নিযুক্ত হন এবং এক বছর পরে নাজিব রাজাকের অধীনে তাকে অভ্যন্তরীণ বাণিজ্য, সমবায় এবং ভোগবাদ মন্ত্রী করা হয়।
২০১৫ সালে গ্রামীণ ও আঞ্চলিক উন্নয়ন মন্ত্রী হিসেবে নিয়োগ পাওয়ার আগে ২০১৩ সালে তাকে কৃষি ও কৃষিভিত্তিক শিল্পমন্ত্রী করা হয়েছিল। চলতি সপ্তাহে মুহিদ্দিন ইয়াসিনের সরকার ভেঙে পড়ে। তারপর থেকেই নতুন প্রধানমন্ত্রী হিসেবে ইসমাইল সাবরির নাম শোনা যাচ্ছিল।
গত চার বছরেরও কম সময়ে এ নিয়ে তিনবার মালয়েশিয়ায় প্রধানমন্ত্রী বদল হলো। দেশটিতে গত কয়েক বছর ধরেই রাজনৈতিক অস্থিরতা বিরাজ করছে। ১৭ মাসের ক্ষমতায় দেশে করোনা সংক্রমণ বৃদ্ধি এবং অর্থনৈতিক মন্দার কারণে দেশের রাজনীতিতে বিশৃঙ্খল পরিস্থিতি তৈরি হওয়ায় ক্ষমতা ছাড়তে বাধ্য হন মুহিদ্দিন ইয়াসিন।
২০২০ সালে মালয়েশিয়ার পার্লামেন্ট দেওয়ান রাকাইয়েতের সদস্যদের ভোটে জিতে দেশের প্রধানমন্ত্রীর পদে আসীন হয়েছিলেন মুহিউদ্দিন ইয়াসিন। তবে তার পক্ষে ও বিপক্ষে পড়া ভোটের ব্যবধান অল্প থাকায় নিজের পদ ধরে রাখতে সারাক্ষণ চাপে ছিলেন তিনি।
সম্প্রতি সেই চাপ আরও বেড়ে যায়। তার দলের কয়েকজন আইনপ্রণেতা ইউনাইটেড মালয়স ন্যাশনাল অরগানাইজেশনে যোগ দেন। এছাড়া করোনা মহামারি মোকাবিলায় ব্যর্থতা, স্বেচ্ছাচারিতা, মহামারি পরিস্থিতিতে অর্থনীতি পুনর্গঠনে সঠিক নির্দেশনা দিতে না পারা এবং অযৌক্তিকভাবে রাজাকে দেশজুড়ে জরুরি অবস্থা ঘোষণার পরামর্শ দেওয়ার অভিযোগ রয়েছে মুহিউদ্দিন ইয়াসিনের বিরুদ্ধে।
এছাড়া জুলাই মাসের শেষের দিকে তার পদত্যাগের দাবিতে মালয়েশিয়ায় বিক্ষোভ শুরু হয়। এর জের ধরে গত ৪ আগস্ট এক টেলিভিশন ভাষণে মুহিউদ্দিন ইয়াসিন ঘোষণা করেন, পার্লামেন্টের সদস্যরা তাকে দেশের প্রধানমন্ত্রী হিসেবে মেনে নিতে প্রস্তুত কীনা তা যাচাই করতে আগামী সেপ্টেম্বরে দেওয়ান রাকাইতে আস্থাভোট চান তিনি। কিন্তু আস্থা ভোটের কথা থাকলেও তার আগেই পদত্যাগ করেন মুহিউদ্দিন ইয়াসিন।
টিটিএন/এমকেএইচ