দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে নিহতদের গণকবরে মিললো বিয়ের আংটি-দুল

আন্তর্জাতিক ডেস্ক
আন্তর্জাতিক ডেস্ক আন্তর্জাতিক ডেস্ক
প্রকাশিত: ০৭:৫৬ পিএম, ২০ আগস্ট ২০২১

দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের মৃত্যু উপত্যকা হিসেবে পরিচিত পোল্যান্ডের উত্তরাঞ্চলের শহর চোজনিসের উপকণ্ঠে নতুন গণকবরের সন্ধান মিলেছে। প্রত্নতাত্ত্বিকরা বলছেন, হিটলারের নাৎসি বাহিনীর চরম নৃসংশতার নিদর্শন এটি। সেই গণকবর থেকে মিলেছে বিয়ের আংটি, দুল, পুরোনো দিনের কলম, সিগারেট কেস, চশমাসহ বিভিন্ন উপকরণ। খবর ডেইলি মেলের।

তিনটি গণকবর থেকে ব্যবহার্য জিনিস ছাড়াও উদ্ধার হয়েছে মানুষের হাড় আর দেহাবশেষ। যার ওজন প্রায় এক টন।

প্রায় পাঁচশো মানুষের দেহাবশেষ পাওয়ার এ ভয়াবহ ঘটনা পোমেরানিয়ান ক্রাইমের সঙ্গে সম্পৃক্ত, যেটি পোল্যান্ডের পোমেরানিয়া রাজ্যে সংঘটিত হয়।

 

১৯৩৯ সালের সেই যুদ্ধে কত মানুষ নিহত হয়েছেন তা এখনো অজানা। যদিও ধারণা করা হয় অ্যাডলফ হিটলারের নাৎসি বাহিনী সে সময় ৩৫ হাজার মানুষকে খুন করে এ অঞ্চলে।

মানুষের দেহাবশেষের সঙ্গে পাওয়া গেছে বিয়ের আংটি, কানের দুল আর ঘড়িও। মিলেছে পুরোনো দিনের কলম, সিগারেট কেস, চশমা, এমনকী পকেট বাইবেলও। মাটির নিচ থেকে উদ্ধার হয়েছে ২৫০টি বুলেটের খোসাসহ অন্য অস্ত্র। জানান গবেষকরা।

jagonews24

গবেষকরা গত বছর গণকবরটির সন্ধান পাওয়ার পর খনন করে ধীরে ধীরে এসব জিনিস উদ্ধার করতে সক্ষম হন।

পোলিশ একাডেমি অব সায়েন্সেসের প্রত্নতত্ত্ববিদসহ অন্য গবেষকরা প্রত্যক্ষদর্শীদের বিবরণ ও প্রযুক্তির সংমিশ্রণ ব্যবহারে মানবদেহের অবশিষ্টাংশগুলো খুঁজে পেয়েছেন।

দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের প্রথম দিকে স্থানীয় বুদ্ধিজীবীদের খুঁজে বের করে হত্যা করা হয়। সে সময় চোজনিসের কাছে অন্তত এক হাজার মানুষকে হত্যা করে জার্মান নাৎসি বাহিনী। একই সঙ্গে ৪০ বেসামরিক লোক, এক পুরোহিত এবং দুইশো মানসিক রোগীকেও হত্যা করা হয়। পোল্যান্ডের স্থানীয় ইহুদিদের ধরে ধরে এসব ছিল ধারাবাহিক হত্যাকাণ্ড।

jagonews24

১৯৪৫ সালে গণহারে হত্যা করা হয় এখানকার মানুষদের। বিজ্ঞানীদের ধারণা, এক হাজারের বেশি মানুষকে গণকবর দেওয়া হতে পারে এখানে।

প্রধান গবেষক ড. ডেবিড কোবিয়াল্কা এর আগে জানান, নিহতদের গুলি করেই মারা হয়। কোনো কোনো মরদেহ পুড়িয়ে ফেলা হয় প্রমাণ ধ্বংস করার জন্য। ঘটনাটি আড়াল করার চেষ্টা করা হলেও সেখানকার বাসিন্দারা এটি মনে রাখে এবং মৃত্যু উপত্যকা হিসেবে পরিচিতি পায় পরে। যুদ্ধের পর খনন করা হলেও তা খুব ভালোভাবে পরীক্ষা করা সম্ভব হয়নি।

আধুনিক প্রযুক্তির সহায়তায় ধারাবাহিকভাবে সেগুলোর খুঁটিনাটি বিশ্লেষণ করা হয়। তাছাড়া ঐতিহাসিক তথ্য উপাত্ত, স্যাটেলাইটের ছবি এবং মাঠ পর্যায়ে জরিপও চালিয়েছে গবেষক দলটি।

এসএনআর/এএ/জিকেএস

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।