মহাবিপর্যয়ে হাইতি: ত্রাণ নেই যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন, মৃত ২ হাজার পার
আমেরিকা মহাদেশের সবচেয়ে দরিদ্র দেশ হাইতি। কিছুদিন আগেই তাদের প্রেসিডেন্টকে গুলি করে হত্যা করেছে দুর্বৃত্তরা, যার কারণে চলছে মারাত্মক রাজনৈতিক সংকট। তার ওপর করোনাভাইরাস মহামারি তো রয়েছেই। এতগুলো ধাক্কা সামলে ওঠার আগেই গত সপ্তাহে ৭ দশমিক ২ মাত্রার শক্তিশালী ভূমিকম্প আঘাত হেনেছে হাইতিতে। এতে প্রায় মাটির সঙ্গে মিশে গেছে দেশটির দক্ষিণাংশ। ভূমিকম্পে মৃতের সংখ্যা দুই হাজার ছাড়িয়েছে। এখানেই শেষ নয়। ভূমিকম্পের আঘাতে খোলা আকাশের নিচে নেমে আসা মানুষগুলোর ওপর দিয়ে বয়ে গেছে ঘূর্ণিঝড়, প্রাণহানি হয়েছে তাতেও। সবমিলিয়ে এক মহাবিপর্যয়ে পড়েছে ক্যারিবীয় দেশটি।
এ অবস্থায় ত্রাণ সহায়তা বাড়ানোর প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন হাইতির প্রধানমন্ত্রী অ্যারিয়েল হেনরি। তবে তিনি স্বীকার করেছেন, প্রাকৃতিক দুর্যোগের পর মহাসংকটে রয়েছে তার দেশ। হেনরি বলেন, হাইতি হাঁটুভেঙে পড়েছে। ভূমিকম্প দেশের দক্ষিণাঞ্চলের বিশাল একটি অংশ ধ্বংস করে দিয়েছে। এটি আরও একবার প্রমাণ করেছে আমাদের সীমা কতটুকু, আমরা কতটা অরক্ষিত।
হাইতির কর্তৃপক্ষ বুধবার জানিয়েছে, গত ১৪ আগস্টের ভূমিকম্পে মৃতের সংখ্যা বেড়ে ২ হাজার ১৮৯ জনে পৌঁছেছে। এ দুর্যোগের পর ক্রমেই তাবুর শহরে পরিণত হয়েছে লেস কায়েস। তবে সেখানে অতিআবশ্যক ত্রাণ সহায়তা না পৌঁছানোর অভিযোগ করেছেন ভুক্তভোগীরা।
রুজভেল্ট মিলফোর্ড নামে স্থানীয় এক ধর্মযাজক জানিয়েছেন, তাদের কাছে খাদ্য, বিশুদ্ধ পানি ও বৃষ্টি থেকে বাঁচতে প্রয়োজনীয় সরেঞ্জামের অভাব দেখা দিয়েছে। ভূমিকম্পে পানির ট্যাংকগুলো ধ্বংস হয়ে গেছে বলে জানিয়েছে কর্তৃপক্ষ। এর মধ্যেই সেখানে আঘাত হেনেছে ঘূর্ণিঝড় গ্রেস। এতে অনেক তাবু উড়ে গেছে ও আশ্রয়স্থল প্লাবিত হয়েছে।
পোর্ট-অ্য-প্রিন্সের দক্ষিণে ম্যারিগোট এলাকার এক নেতা বলেন, ভূমিকম্পের ক্ষতি না কাটতেই ঘূর্ণিঝড় গ্রেসের পর আরও কয়েকশ ঘরবাড়ি পানিতে তলিয়ে গেছে। এতে অন্তত চারজন নিহত হয়েছে, নিখোঁজ রয়েছে কয়েকজন। কিন্তু কোনও সাহায্য আসেনি। এমনকি এনজিও থেকেও কেউ আসেনি।
এমন দুরবস্থার মধ্যে বিরল সুখবর হিসেবে হাইতির নাগরিক সুরক্ষা সংস্থার প্রধান জানিয়েছেন, গত দুইদিনে সেখানে ৩৪ জনকে জীবিত উদ্ধার করা হয়েছে। তবে বাকিদের আশা ক্রমেই ফিকে হয়ে আসছে।
সূত্র: রয়টার্স
কেএএ/জিকেএস