তালেবানের পুনরুত্থানে বিশ্ব নেতৃত্বের প্রতিক্রিয়া
আন্তর্জাতিক ডেস্ক আন্তর্জাতিক ডেস্ক
প্রকাশিত: ১০:০১ পিএম, ১৫ আগস্ট ২০২১
আফগানিস্তানের ক্ষমতায় প্রত্যাবর্তন ঘটতে চলেছে তালেবানের। এরই মধ্যে দেশ ছেড়ে পালিয়েছেন পশ্চিমাসমর্থিত আফগান প্রেসিডেন্ট আশরাফ গানি। ফলে তালেবান কাবুলের গদিতে বসা এখন সময়ের অপেক্ষা মাত্র। এ পরিস্থিতিতে ভিন্ন ভিন্ন প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে বিভিন্ন দেশ ও নেতারা।
একনজরে দেখে নেওয়া যাক বিশ্বের প্রতিক্রিয়া
জো বাইডেন
তালেবান কাবুলে প্রবেশের কিছু আগে মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন এক বিবৃতিতে বলেছেন, আফগান সামরিক বাহিনী যদি নিজেই তাদের দেশ রক্ষা করতে না পারে, তাহলে আফগানিস্তানে আরও এক বছর হোক বা পাঁচ বছর, যুক্তরাষ্ট্রের সামরিক উপস্থিতি থাকলেও তাতে কোনও লাভ হতো না। অন্য একটি দেশের গৃহযুদ্ধের মধ্যে সীমাহীন মার্কিন উপস্থিতি আমার কাছে কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়।
যুক্তরাষ্ট্র
নামপ্রকাশে অনিচ্ছুক এক মার্কিন কর্মকর্তা জানিয়েছেন, কাবুল দূতাবাস থেকে লোকজনকে সরিয়ে নেয়ার কার্যক্রমে তালেবান কোনও বাধা সৃষ্টি না করলে যুক্তরাষ্ট্রের সামরিক কৌশলে পরিবর্তন আনার সম্ভাবনা নেই। তিনি জানিয়েছেন, কাবুল দূতাবাস থেকে বিমানবন্দর পর্যন্ত তাদের সামরিক হেলিকপ্টার চলাচল করছে।
রাশিয়া
রুশ পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তা জামির কাবুলভ বলেছেন, আফগানিস্তান ইস্যুতে জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদে জরুরি বৈঠকের জন্য চেষ্টা করছে রাশিয়া। তিনি আরও জানিয়েছেন, রাশিয়াসহ অন্য দেশগুলোর দূতাবাসের নিরাপত্তার নিশ্চয়তা দিয়েছে তালেবান। এ কারণে আপাতত রুশ দূতাবাস খালি করার কোনও পরিকল্পনা নেই তাদের।
ভারত
ভারতীয় পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক কর্মকর্তা জানিয়েছেন, তাদের কাবুল দূতাবাস বন্ধ হচ্ছে না। তবে লোকজন সরিয়ে আনার কাজ চলছে।
পাকিস্তান
পাকিস্তানি পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র জাহিদ হাফিজ চৌধুরী বলেছেন, আমরা আফগানিস্তানের পরিস্থিতি নিয়ে উদ্বিগ্ন। তবে দূতাবাস বন্ধ করার মতো কোনও সিদ্ধান্ত হয়নি।
ইউরোপীয় ইউনিয়ন
ইউরোপীয় কমিশনের ভাইস প্রেসিডেন্ট মার্গারাইটিস শিনাস এক টুইটে বলেছেন, ইউরোপের অভিবাসন ও আশ্রয়ের নিয়মগুলো সম্পূর্ণ ঢেলে সাজাতে অপেক্ষা করার মতো সময় শেষ হয়ে গেছে।
যুক্তরাজ্য
আফগানিস্তানে ক্রমবর্ধমান সংকটের কারণে গ্রীষ্মকালীন ছুটির মধ্যেই সংসদীয় অধিবেশন আহ্বান করবেন ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন। সে সময় আফগান ইস্যুতে যুক্তরাজ্যের পরবর্তী করণীয় কী হতে পারে, এ নিয়ে আলোচনা হতে পারে।
অস্ট্রিয়া
অস্ট্রিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যালেক্সান্দার শ্যালেনবার্গের ভয়, আফগানিস্তানের অস্থিরতা ধীরে ধীরে গোটা ইউরোপেও ছড়িয়ে পড়বে। তার ভাষ্যমতে, এ অঞ্চলের সংঘর্ষ ও অস্থিতিশীলতা আজ হোক বা পরে পুরো ইউরোপে ছড়িয়ে পড়বে। এ জন্য একটি সহায়তা সম্মেলনের আহ্বান জানিয়েছেন তিনি।
সুইডেন
কাবুল দূতাবাস থেকে নিজেদের সব কর্মকর্তা-কর্মচারীকে সরিয়ে নেওয়ার ঘোষণা দিয়েছে সুইডেন।
আলবেনিয়া
আলবেনিয়ার প্রধানমন্ত্রী ইদি রামা জানিয়েছেন, পশ্চিমা বাহিনীর সঙ্গে কাজ করার কারণে তালেবানের হুমকিতে পড়া কয়েক হাজার আফগান নাগরিককে অস্থায়ীভাবে আশ্রয় দেবে তার দেশ। ফেসবুকের এক পোস্টে আলবেনীয় প্রধানমন্ত্রী বলেন, কিছু সংখ্যক আফগান অভিবাসীকে যুক্তরাষ্ট্রে নেওয়ার ট্রানজিট হিসেবে আলবেনিয়াকে ব্যবহার করতে দেওয়ার অনুরোধ জানিয়েছে মার্কিন প্রশাসন। আর তাতে সম্মতি দিয়েছে আলবেনীয় সরকার।
পোপ ফ্র্যান্সিস
আফগানিস্তানে সহিংসতা বন্ধে আলোচনায় বসার আহ্বান জানিয়েছেন পোপ ফ্র্যান্সিস। তিনি বলেছেন, আমি আফগানিস্তানের পরিস্থিতিতে উদ্বিগ্ন। আমি আপনাদের শান্তিদেবতার কাছে প্রার্থনা করতে অনুরোধ করছি, যেন অস্ত্রের দিন শেষ হয় এবং সংলাপের মাধ্যমে সমাধান পাওয়া যায়। কেবল এর মাধ্যমেই নারী, পুরুষ, বৃদ্ধ, শিশু সবাই বাড়ি ফিরতে এবং শান্তিতে বসবাস করতে পারে।
সূত্র: আল-জাজিরা
কেএএ/জেআইএম