ঘাটতি পূরণে টিকা কেনার চেষ্টায় ভারত?
করোনাভাইরাস মহামারি মোকাবিলায় এতদিন প্রধানত নিজস্ব উৎপাদিত টিকায় ভরসা করে ছিল ভারত। যদিও শতকোটি জনসংখ্যার চাহিদা মেটাতে শুরু থেকেই হিমশিম খেতে হয়েছে তাদের, তবে টিকা কেনায় বিশেষ আগ্রহ দেখা যায়নি নরেন্দ্র মোদির সরকারের। কিন্তু এবার হয়তো ভ্রম কেটেছে! দ্রুততম সময়ে বিশাল জনগোষ্ঠীর চাহিদা মেটানোয় শুধু উৎপাদনই যথেষ্ট নয়, তা বোধগম্য হয়েছে ভারতীয় কর্তৃপক্ষের। এ কারণে মহামারি শুরুর দেড় বছরেরও বেশি সময় পর ব্যাপকহারে টিকা কিনতে উদ্যোগী হয়েছে দেশটি।
বুধবার প্রভাবশালী মার্কিন দৈনিক দ্য ওয়াল স্ট্রিট জার্নাল সংশ্লিষ্ট সূত্রের বরাতে জানিয়েছে, ফাইজার-বায়োএনটেকের কাছ থেকে পাঁচ কোটি ডোজ টিকা কিনতে আলোচনা চালাচ্ছে ভারত সরকার।
এ বিষয়ে মন্তব্যের জন্য ভারতীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় ও ফাইজার কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়েছিল। তবে তাতে কেউ সাড়া দেয়নি। অবশ্য ভারতে নিজেদের টিকা ব্যবহারের জন্য এখনো অনুমতির আবেদন করেনি মার্কিন ফার্মাসিউটিক্যাল জায়ান্টরা।
করোনা মহামারি মোকাবিলায় চলতি বছরের শুরুতে বিশ্বের অন্যতম বৃহত্তম টিকাদান কর্মসূচি শুরু করে ভারত। এক্ষেত্রে তারা প্রধানত পুনের সিরাম ইনস্টিটিউটে উৎপাদিত অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকার টিকা ‘কোভিশিল্ড’ এবং ভারত বায়োটেকের আবিষ্কৃত ও উৎপাদিত ‘কোভ্যাক্সিন’ ব্যবহার করছে। পাশাপাশি, নিজস্ব উৎপাদন ক্ষমতায় আত্মবিশ্বাসী ভারত বাংলাদেশসহ বিশ্বের বেশ কয়েকটি দেশে টিকা রফতানির চুক্তি করে, এমনকি এর জন্য আগাম অর্থও নিয়েছিল তারা।
তবে করোনা মহামারির তৃতীয় ঢেউয়ে নিয়ন্ত্রণহীন সংক্রমণের মুখে গত এপ্রিলে বিদেশে টিকা রফতানি বন্ধ করে দেয় ভারত। মূলত নিজস্ব চাহিদা আগে মেটানোর লক্ষ্যে এই নিষেধাজ্ঞা দেয় তারা, যা আজও অব্যাহত রয়েছে। এতে চরম বিপাকে পড়েছে টিকার জন্য ভারতের ওপর নির্ভর করে থাকা দেশগুলো। সংকট মোকাবিলায় বাংলাদেশ ইতোমধ্যে চীনের কাছ থেকে কয়েক কোটি টিকা কেনার চুক্তি করেছে, পাশাপাশি জাতিসংঘের কোভ্যাক্স কর্মসূচির আওতায় বেশ কিছু টিকা পাওয়া গেছে।
এখন ঘাটতি পূরণে ভারতও কোভ্যাক্সের দিকে তাকিয়ে। দ্য ওয়াল স্ট্রিট জার্নালের খবর অনুসারে, দেশটি কোভ্যাক্স থেকে ৭০ লাখ ডোজ মডার্নার টিকা পাওয়ার আশা করছে। পাশাপাশি, ফাইজারের কাছ থেকে পাঁচ কোটি ডোজ কেনার চেষ্টা করছে।
এছাড়া, জনসন অ্যান্ড জনসনের সঙ্গে ভারত-ভিত্তিক প্রতিষ্ঠান বায়োলজিক্যাল ই’র চুক্তির মাধ্যমে ৬০ কোটির মতো ডোজ উৎপাদনের আলোচনা চালাচ্ছে ভারতীয় কর্তৃপক্ষ। অবশ্য জনসনের টিকা বিক্রির অনুমতি থাকছে না ভারতীয় প্রতিষ্ঠানটির।
গত সপ্তাহেই জনসন অ্যান্ড জনসনের এক ডোজের টিকা জরুরি ব্যবহারের অনুমতি দিয়েছে ভারত। এর আগে কেবল অ্যাস্ট্রাজেনেকা, ভারত বায়োটেক, রাশিয়ার গামালেয়া ইনস্টিটিউট ও যুক্তরাষ্ট্রের মডার্নার টিকার অনুমোদন দিয়েছিল দেশটি।
কেএএ/এমএস