জলবায়ু চুক্তি শুধুই প্রতিশ্রুতি


প্রকাশিত: ১২:৪৪ পিএম, ১৩ ডিসেম্বর ২০১৫

প্যারিসে জাতিসংঘের ২১তম জলবায়ু সম্মেলনে ঐতিহাসিক চুক্তি সম্পন্ন হয়েছে। জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব মোকাবিলায় বিশ্বের বিভিন্ন দেশের নেতারা এ চুক্তিতে স্বাক্ষর করেছেন। কিন্তু প্যারিসের এ চুক্তিকে প্রতারণা ছাড়া অন্য কিছু বলতে নারাজ জলবায়ু পরিবর্তনে সচেতনতা তৈরির জনক হিসেবে বিশ্বব্যাপী পরিচিত প্রফেসর জেমস হ্যানসেন

নাসার সাবেক এই বিজ্ঞানী ব্রিটেনের প্রভাবশালী গণমাধ্যম দ্য গার্ডিয়ানকে বলেন, প্যারিসের জলবায়ু চুক্তি শুধুই প্রতারণা। কেননা চুক্তিতে কোনো পদক্ষেপ নেই, আছে প্রতিশ্রুতি। একইসঙ্গে প্যারিসের এই চুক্তিকে মূল্যহীন শব্দের সমাহার বলে মন্তব্য করেছেন তিনি।

শনিবার বিকেলে প্যারিসের জলবায়ু চুক্তিতে বিশ্ব নেতাদের স্বাক্ষরের পর হ্যানসেন বলেন,  বৈশ্বিক উষ্ণতা বৃদ্ধি দুই ডিগ্রি সেলসিয়াসের নিচে নামিয়ে আনার লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে এবং  প্রতি ৫ বছর অন্তর পর্যালোচনা করতে চেষ্টা করার কথা বলা হয়েছে। এগুলো সব মূল্যহীন কথা। কেননা জলবায়ু ইস্যুতে বিশ্ব নেতাদের প্রতিশ্রুতি ছাড়া কোনো পদক্ষেপ নিতে দেখা যায় না।

Paris
পরিবেশ আন্দোলনের এই জনক আরো বলেন, বৈশ্বিক তাপমাত্রা কমিয়ে আনার যে লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে তা প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের লোকজনের বেঁচে থাকার দাবির চেয়ে বেশি। কেননা তারা বৈশ্বিক তাপমাত্রা দেড় ডিগ্রি সেলসিয়াসের নিচে নামিয়ে আনার দাবি জানিয়েছে। বিশ্বনেতারা দেড় ডিগ্রি কমিয়ে আনার প্রতিশ্রুতি দিলেও সেখানে উল্লেখযোগ্য কোনো পদক্ষেপের কথা বলা হয়নি।

অতিরিক্ত পরিমাণে গ্রিন হাউজ গ্যাস নিঃসরণকারী দেশগুলোর জন্য কর নির্ধারণ ছাড়া জলবায়ু পরিবর্তনে প্যারিসের এই চুক্তিকে অর্থহীন বলে মন্তব্য করেছেন হ্যানসেন। কিংবদন্তি এই বিজ্ঞানীর বিশ্বাস, গ্যাস নিঃসরণ ঠেকাতে দ্রুত এবং একমাত্র সমাধান কর নির্ধারণ করা। তিনি বলেন, জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে বিশ্বের লাখ লাখ শরণার্থীদের কথা বলা হচ্ছে। আমরা এসব হতে দিতে পারি না।

ধরিত্রি বাঁচাতে প্যারিস চুক্তিকে সর্বোত্তম সুযোগ বলে মন্তব্য করার পর জলবায়ু হ্যানসেন এসব কথা বলেন। হ্যানসেন বলেন, জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব মোকাবিলায় বিশ্বকে দেখাতে হবে যে তাদের ইচ্ছা এবং সামর্থ্য আছে।

paris
গত ৩০ নভেম্বর ১৯৫টি দেশের প্রতিনিধিদের অংশগ্রহণে প্যারিসে জাতিসংঘের ২১তম জলবায়ু সম্মেলন শুরু হয়। বৈশ্বিক তাপমাত্রা বৃদ্ধি ও কার্বন নিঃসরণ কমানোর বিষয়ে একটি দীর্ঘমেয়াদি চুক্তিতে পৌঁছাতে দুই সপ্তাহ ধরে আলোচনার পর একটি চূড়ান্ত চুক্তি স্বাক্ষর হয়েছে।

এদিকে, গ্লোবাল জাস্টিস নাউ এর পরিচালক নিক ডিয়ারডেন বলেছেন, প্যারিস চুক্তিতে বিশ্বের সবচেয়ে অরক্ষিত জাতি গোষ্ঠীগুলোর অধিকারকে উপেক্ষা করা হয়েছে। ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য নিরাপদ ও বাসযোগ্য জলবায়ু নিশ্চিত করতে কোনো বাধ্যবাধকতা রাখা হয়নি। এরপরও এই চুক্তিকে সাফল্য হিসেবে বিশ্ব নেতারা দাবি করছেন, যা ভয়ানক।

এসআইএস/এএইচ/আরআইপি

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।