কঠোর ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞা চীনে, টিকার আওতায় আসছে শিক্ষার্থীরা
চীনে সাম্প্রতিক সময়ে করোনা সংক্রমণ অনেক বেড়ে গেছে। একটি বিমানবন্দরের কর্মীদের মধ্যে ডেল্টা ভ্যারিয়েন্ট শনাক্ত হওয়ার পর থেকে প্রায় প্রতিদিনই সংক্রমণ বাড়ছে। নাটকীয়ভাবে করোনার প্রাদুর্ভাব নিয়ন্ত্রণে তাই কঠোর ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে বলে গার্ডিয়ানের এক প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে।
মাঝে অনেকদিন ধরেই সংক্রমণ সেভাবে দেখা না গেলেও সম্প্রতি চীনের ২৫টি শহরে নতুন করে ৪শ' জনের দেহে করোনা শনাক্ত হয়েছে। এমনকি করোনার উৎপত্তিস্থল উহানসহ ৩১টি প্রদেশের মধ্যে ১৭টিতে নতুনভাবে করোনা রোগী শনাক্ত হয়েছেন।
মঙ্গলবার দেশটিতে স্থানীয়ভাবে ৭১ জনের মধ্যে করোনায় আক্রান্তের খবর নিশ্চিত হওয়া গেছে। চীনের জাতীয় স্বাস্থ্য কমিশন জানিয়েছে, জানুয়ারির পর এটাই দৈনিক আক্রান্তের হারে সর্বোচ্চ। এমন পরিস্থিতিতে বুধবার বিকেলে চীন ঘোষণা করেছে তারা সীমান্তে চলাচল কঠোর করবে।
রাষ্ট্রীয় গণমাধ্যম জানিয়েছে, অপ্রয়োজনীয় এবং গুরুত্বহীন ভ্রমণ সাময়িকভাবে বন্ধ থাকবে। সরকার দেশটির ৩১ টি প্রদেশের সকল নাগরিকদের অপ্রয়োজনে স্থান ত্যাগ না করার নির্দেশ দিয়েছে। ডেল্টা ভ্যারিয়েন্টের ঝুঁকি আছে এমন এলাকা থেকেও দূরে থাকতে বলা হয়েছে।
রাষ্ট্র পরিচালিত সংবাদ সংস্থা শিনহুয়া জানিয়েছে, লকডাউনে বিভিন্ন বিধিনিষেধ ছাড়াও নানজিং এবং ইয়াংজু শহরে অভ্যন্তরীণ সব ফ্লাইট বাতিল করা হয়েছে। বেইজিং ১৩টি রেল লাইন বন্ধ করে দিয়েছে এবং ২৩টি স্টেশন থেকে দূরপাল্লার টিকিট বিক্রি বন্ধ করে দিয়েছে।
ইয়াংজু, উহান এবং বন্যা কবলিত ঝেংঝুর শহরজুড়ে করোনা পরীক্ষা শুরু হয়েছে। পাশাপাশি ঝেংঝুতে কেউ শহর ছাড়তে চাইলে করোনার নেগেটিভ সার্টিফিকেট দেখাতে বলা হয়েছে। বেইজিংয়ের ১০ হাজারেরও বেশি লোকের বাসস্থানসহ আবাসিক এলাকাগুলোতে গণহারে করোনা পরীক্ষার জন্য সিল করে দেয়া হয়েছে। কর্তৃপক্ষ উহানের এক কোটি ১০ লাখ বাসিন্দার করোনা পরীক্ষা শুরু করেছে।
চীনের স্বাস্থ্য বিভাগ জানিয়েছে, নিজস্ব উৎপাদিত ১.৭ বিলিয়ন ভ্যাকসিন মানুষকে দেয়া হয়েছে। দেশটির প্রাপ্ত বয়স্কদের মধ্যে কত শতাংশ ভ্যাকসিন নিয়েছে সরকারিভাবে সে পরিসংখ্যান না থাকলেও রাষ্ট্রীয় গণমাধ্যম গত মাসে জানিয়েছে এ সংখ্যা ৪০ শতাংশ।
গত মাসে গুয়াংজি অঞ্চল এবং জিংমেন শহরের কর্তৃপক্ষ জানিয়েছিল, তারা ১২ থেকে ১৭ বছরের শিশুদেরও ভ্যাকসিন দেয়া শুরু করবে। চীনের শীর্ষ সংক্রামক রোগ বিশেষজ্ঞ ঝং নানশান বলেন, ‘ডেল্টা ভ্যারিয়েন্টে আক্রান্তদের মধ্য হালকা লক্ষণ দেখা গেছে। তাছাড়া গবেষণায় দেখা গেছে, চীনা ভ্যাকসিন ডেল্টা ভ্যারিয়েন্টের তীব্রতা কমাতে কার্যকর।’
এদিকে শিক্ষার্থীদেরও ভ্যাকসিন কার্যক্রমের আওতায় আনতে যাচ্ছে চীন। দেশটির সর্বশেষ ভ্যাকসিন কর্মসূচিতে শিক্ষার্থীদের অন্তর্ভূক্ত করা হচ্ছে। গত কয়েক মাসে করোনা বাড়তে শুরু করায় ভ্যাকসিন কার্যক্রমের গতি আরও বাড়ানো হচ্ছে। ১২ থেকে ১৭ বছর বয়সীদের ভ্যাকসিনের আওতায় আনা হবে বলে জানানো হয়েছে।
এমএসএম/টিটিএন/এমএস