শেয়ারবাজারে গড়ে লেনদেন কমেছে ৭১ কোটি টাকা
ধারাবাহিক দরপতনে গত সপ্তাহ পার করেছে দেশের শেয়ারবাজার। এসময় সব ধরণের মূল্য সূচকের পাশাপাশি কমেছে লেনদেন হওয়া বেশিরভাগ প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও মিউচুয়াল ফান্ডের ইউনিটের দর। একই সঙ্গে প্রতিদিন গড়ে লেনদেন কমেছে প্রায় ৭১ কোটি টাকা। ডিএসই ও সিএসই সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।
লেনদেন কমার কারণ হিসেবে বাজার সংশ্লিষ্টরা বলছেন, তালিকাভুক্ত ব্যাংকগুলোর তৃতীয় প্রান্তিকের প্রকাশিত আর্থিক প্রতিবেদনে মুনাফা অনেকটা কমতে দেখা গেছে। এছাড়াও অন্যান্য কোম্পানিগুলোর মুনাফার দিকে তাকিয়ে আছে বিনিয়োগকারীরা।
একদিকে বছরের শেষ সময়, অন্যদিকে পুঁজিবাজারে ব্যাংকের বিনিয়োগ (সিঙ্গেল বরোয়ার এক্সপোজার লিমিট) সমন্বয়ের সময়সীমা দুই বছর বাড়ানোর মৌখিক আশ্বাস পেলেও কাগজ কলমে কোনো সিদ্ধান্ত না হওয়ায় প্রাতিষ্ঠানিক বিনিযোগকারীরা বাজারে অনেকটা নিষ্ক্রিয় রয়েছে। আর এসব আস্থাহীনতার কারণে বিনিয়োগকারীরা নতুন করে বিনিয়োগে আসছে না। ফলে বাজারে কমছে লেনদেনের পরিমাণ।
সংশ্লিষ্টরা বলছেন, গত চার/পাঁচ বছরে বাজারে কোম্পানির সংখ্যা বাড়লেও লেনদেন আগের মতই আছে। ২০১১-১২ সালে যেখানে লেনদেন ৩০০ থেকে ৪০০ কোটি হতো, এখনো তাই হচ্ছে। আগের তুলনায় ব্রোকারেজ হাউসগুলোর ব্যয় বাড়লেও আয় বাড়েনি। তাই লোকসানের মুখে পড়েছে হাউসগুলো। বন্ধ হয়ে যাচ্ছে শাখা অফিস। অনেক ব্রোকারেজ হাউজও বন্ধের পথে।
বাজার বিশ্লেষণে দেখা গেছে, গত সপ্তাহে (৬ ডিসেম্বর থেকে ১০ ডিসেম্বর পর্যন্ত) দেশের দুই শেয়ারবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই) ও চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জ (সিএসই) মিলিয়ে মোট লেনদেন হয়েছে ২ হাজার ৩২২ কোটি ৫৯ লাখ টাকা। আগের সপ্তাহের (২৯ নভেম্বর থেকে ৩ ডিসেম্বর পর্যন্ত) দুই বাজারে লেনদেন হয়েছিল ২ হাজার ৬৭৭ কোটি ৪৩ লাখ টাকা। আগের সপ্তাহের চেয়ে গত সপ্তাহে লেনদেন কমেছে ৩৫৪ কোটি ৮৩ লাখ টাকা বা ১৩ দশমিক ২৫ শতাংশ। সেই হিসেবে প্রতিদিন গড়ে লেনদেন কমেছে ৭০ কোটি ৮০ লাখ টাকা।
গত সপ্তাহে দেশের প্রধান শেয়ারবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) লেনদেন হয়েছে ২ হাজার ১৬৭ কোটি ৯৭ লাখ টাকার। যা আগের সপ্তাহের চেয়ে ৩৪০ কোটি টাকা বা ১৩ দশমিক ৫৬ শতাংশ কম। আগের সপ্তাহের ডিএসইতে লেনদেন হয়েছিল ২ হাজার ৫০৮ কোটি ৩ লাখ টাকা।
দেশের অপর শেয়ারবাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে (সিএসই) গত সপ্তাহে টাকার অংকে লেনদেন হয়েছে ১৫৪ কোটি ৬২ লাখ টাকা। যা আগের সপ্তাহের চেয়ে ১৪ কোটি ৭৭ লাখ টাকা কম। আগের সপ্তাহের সিএসইতে লেনদেন হয়েছিল ১৬৯ কোটি ৩৯ লাখ টাকা।
এদিকে সপ্তাহ শেষে ডিএসইতে সব ধরনের সূচক কমেছে। এসময় প্রধান সূচক ডিএসইএক্স কমেছে ৫৭ পয়েন্ট বা ১ দশমিক ২৪ শতাংশ। ডিএস৩০ সূচক কমেছে ৩১ পয়েন্ট বা ১ দশমিক ৭৬ শতাংশ। আর শরিয়াহ বা ডিএসইএস সূচক কমেছে ১৮ পয়েন্ট বা ১ দশমিক ৬৮ শতাংশ।
গত সপ্তাহে ডিএসইতে তালিকাভুক্ত মোট ৩২৯টি কোম্পানি ও মিউচুয়াল ফান্ডের শেয়ার লেনদেন হয়েছে। এর মধ্যে দর বেড়েছে ১৪২টির, কমেছে ১৫০টির এবং অপরিবর্তিত রয়েছে ৩২টির। আর লেনদেন হয়নি ৫টি কোম্পানির শেয়ার।
দেশের অপর শেয়ারবাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জ (সিএসই) সিএএসপিআই সূচক কমেছে ১ দশমিক ৬৭ শতাংশ। সিএসই৩০ সূচক কমেছে দশমিক ৯০ শতাংশ এবং সার্বিক সূচক সিএসইএক্স কমেছে ১ দশমিক ৬৯ শতাংশ, সিএসই৫০ সূচক কমেছে ২ দশমিক ০১ শতাংশ এবং শরিয়াহ সিএসআই সূচক কমেছে ২ দশমিক ০৭ শতাংশ।
এসআই/একে/আরআইপি