মালয়েশিয়ায় বেড়েই চলেছে করোনায় আক্রান্ত-মৃত্যু
দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার দেশ মালয়েশিয়ায় করোনার অতিসংক্রামক নতুন ধরনের কারণে ভাইরাসটির মারাত্মক প্রকোপ শুরু হয়েছে। ফলে জুন থেকে কঠোর লকডাউন শুরু হয়েছে মালয়েশিয়ায়। একমাস লকডাউন থাকার পরও এখনো দৈনিক শনাক্তে রেকর্ড চলছে।
করোনার প্রকোপ ঠেকাতে পারছে না মালয়েশিয়া। বেড়েই চলেছে প্রাণহানি ও সংক্রমণের হার। টানা গত তিনদিন কোভিড আক্রান্ত হিসেবে শনাক্তের রেকর্ড হয়েছে। মালয়েশিয়ার স্বাস্থ্য কর্তৃপক্ষের দেয়া হিসেব অনুযায়ী, গত ২৪ ঘণ্টায় প্রাণহানি হয়েছে ১১৮ জনের। এ নিয়ে দেশটিতে মোট প্রাণহানি হয়েছে ৬ হাজার ৫০৩ জনের। একদিনে শনাক্ত হয়েছে ১১ হাজার ৬১৮ জন। মোট আক্রান্ত ৮ লাখ ৬৭ হাজার ৫৬৭ জন।
নতুন শনাক্তের অর্ধেক দেশটির ক্ল্যাং উপত্যকার। সেখানে সেলাঙ্গরে ৫ হাজার ৫১ জন এবং রাজধানী কুয়ালালামপুরে নতুন শনাক্ত হয়েছে ১ হাজার ৭৪৯ জন এবং প্রতিবেশী প্রদেশ নেগেরি সেমবিলান ১ হাজার ৫৩৭ জন আক্রান্ত হয়েছেন।
এছাড়া উপকূলীয় প্রদেশ মেলাকায় ৫১৬ জন, জোহর প্রদেশে ৩৯৬ জন এবং সাবা ২৮৬ ও সারওয়াক ২৮৯ জন আক্রান্ত হয়েছেন। ১৩ জুলাই মালয়েশিয়ায় দৈনিক রেকর্ড সর্বোচ্চ ১১ হাজার ৭৯ জন শনাক্ত হয়েছিল। পরদিন মঙ্গলবারের আক্রান্তের সেই রেকর্ডও ভাঙে।
চলতি সপ্তাহের শুরুতে দেশটির স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছিল, জরুরি চলাচল নিয়ন্ত্রণ আদেশের (ইএমসিও) অঞ্চল ও কারখানায় লক্ষ্যভুক্ত কোভিড-১৯ স্ক্রিনিংয়ের কারণে রাজধানী কুয়ালালামপুরসহ গোটা ক্ল্যাং উপত্যকায় নতুন করে আক্রান্তের সংখ্যা বৃদ্ধি পেয়েছে।
গত ২৯ মে প্রথমবার মালয়েশিয়ায় একদিনে ৯ হাজারের বেশি কোভিড রোগী শনাক্ত হওয়ার দুই দিন পর ১ জুন থেকে দেশজুড়ে লকডাউন নিষেধাজ্ঞা বলবৎ হয় মালয়েশিয়ায়। পরে দুই সপ্তাহ বাড়ানোর পর লকডাউন এখনো জারি রয়েছে।
এদিকে দুই শতাধিক স্বাস্থ্যকর্মী করোনা আক্রান্ত হিসেবে শনাক্ত হওয়ার পর মালয়েশিয়ায় এক কোভিড টিকাদান কেন্দ্র বন্ধ করে দেয়া হয়েছে। প্রকোপ ঠেকাতে গণটিকাদান কেন্দ্রের সংখ্যা বাড়িয়েছে মালয়েশিয়া। কিন্তু টিকা দিতে গিয়েও অনেক স্বাস্থ্যকর্মী আক্রান্ত হওয়ার বিষয়টি নিয়ে উদ্বেগ দেখা দিয়েছে। দেশটির প্রায় ১১ শতাংশ মানুষ টিকার দুই ডোজ নিয়েছেন। এক ডোজ নিয়েছেন প্রায় ২৫ শতাংশ।
মালয়েশিয়ায় করোনার সবচেয়ে বিপর্যস্ত প্রদেশ সেলানগড়ের একটি টিকাদান কেন্দ্র বন্ধ করে দেয়া হয়েছে। নমুনা পরীক্ষায় টিকাদান কেন্দ্রটির ২০৪ জন স্বাস্থ্যকর্মী ও স্বেচ্ছাসেবকসহ মোট ৪৫৩ জন কোভিড পজিটিভ হওয়ার পর সরকার সেটি বন্ধের সিদ্ধান্ত নেয়।
টিকাদান কর্মসূচির দায়িত্বপ্রাপ্ত মন্ত্রী খায়েরি জামাল উদ্দিন জানিয়েছেন, আক্রান্তদের কারোরই গুরুতর কোনো উপসর্গ নেই। টিকা দেয়া হলেও তাদের কি টিকা দেয়া হয়েছে তা জানানো হয়নি। দেশটি ফাইজার, সিনোভ্যাক ও অ্যাস্ট্রাজেনেকা টিকার অনুমোদন দিয়েছে।
মন্ত্রী খায়েরি জামাল উদ্দিন বলেছেন, ‘পজিটিভ রোগীর কারণে এই প্রথম আমাদের কোনো টিকাদান কেন্দ বন্ধ করে দিতে হলো, কিন্তু আমরা তড়িৎগতিতে ব্যবস্থা নিয়েছি। এতে করে আমাদের সার্বিক টিকাদান কর্মসূচির ওপর কোনো প্রভাব পড়বে না।’
এমআরএম/জেআইএম