সাত মাস ধরে গ্রাম থেকে বিচ্ছিন্ন একটি পরিবার
পূজার চাঁদা দিতে না পারায় নাটোরের বড়াইগ্রামে গত সাত মাস ধরে এক বিধবা পরিবারকে একঘরে করে রেখেছে স্থানীয় গ্রাম প্রধানরা। উপজেলার আদগ্রাম পূর্বপাড়ার বিধবা লতা রানী পরিবারের সদস্যদের কারো বাড়িতে যাতায়াত এমনকি কথা বলতে নিষেধাজ্ঞা থাকায় অসহায় জীবনযাপন করছে পরিবারটি।
সরেজমিনে জানা যায়, আদগ্রাম পূর্বপাড়ার মৃত প্রফুল্ল চন্দ্রের বিধবা স্ত্রী শ্রীমতি লতা রাণী (৬০) তার দুই অবিবাহিত মেয়ে কুমারী পার্বতী রাণী (৩০) ও কলেজ ছাত্রী কুমারী পূরবী রাণীকে (২৫) নিয়ে কোনো রকমে জীবনযাপন করেন। গত মে মাসের মাঝামাঝি সময়ে একটি আমগাছ নিয়ে বিরোধকে কেন্দ্র করে প্রতিবেশি প্রদীপ সরকারের লোকজন লতা রাণী ও তার ছোট মেয়েকে বেধড়ক পিটিয়ে আহত করে। এ ঘটনায় বড়াইগ্রাম থানায় স্থানীয় কয়েকজনের নামে মামলা দায়ের করে লতা রানী। পরে বিষয়টি গ্রাম্য সালিশে মিমাংসা করা হয়। কিন্তু থানায় মামলা হওয়ায় হিন্দু ধর্মাবলম্বী নের্তৃবৃন্দকে অপমান করা হয়েছে এমন অভিযোগ এনে গত সাত মাস বিধবা লতা রানী পরিবারটিকে একঘরে করে রাখা হয়েছে। এতে তাদেরকে ধর্মীয় কোনো আচার-অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করতে দেয়া হচ্ছে না। নিজেরাও একঘরে হওয়ার ভয়ে কেউ তাদের সঙ্গে কোন লেনদেন বা কথা-বার্তা পর্যন্ত বলেন না প্রতিবেশিরা।
একঘরে হওয়া শ্রীমতি লতা রাণী বলেন, আমার বিবাহযোগ্যা মেয়ে দুটির বিয়ের প্রস্তাব আসলেও একঘরে করে রাখায় তাদের বিয়ে হচ্ছে না। স্বামী নেই, কোনো ছেলে সন্তান নেই। আমাদের অসহায়ত্ব কাউকে বোঝাতে পারছিনা।
এ ব্যাপারে সমাজপতি শ্রী সনাতন চন্দ্র দাস বলেন, থানায় মামলাতো করেছেই, তাছাড়া বিভিন্ন পূজা-পার্বনে হাড়ি-চাঁদাও দেয় না তারা। এসব কারণে তাদেরকে একঘরে করে রাখা হয়েছে।
বড়াইগ্রাম থানা পুলিশের ওসি মনিরুল ইসলাম বলেন, পরিবারটিকে একঘরে করার বিয়ষটি জানা নেই। লিখিত অভিযোগ পেলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।
রেজাউল করিম রেজা/এমএএস/পিআর