ভারতসহ ৫ দেশ থেকে ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞা তুলে নিচ্ছে জার্মানি
পাঁচ দেশের নাগরিকদের ওপর থেকে ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞা তুলে নিচ্ছে জার্মানি। বুধবার থেকে ব্রিটেন, পর্তুগাল, রাশিয়া, ভারত এবং নেপালের নাগরিকদের ওপর থেকে নিষেধাজ্ঞা তুলে নেয়া হচ্ছে। এসব দেশের যেসব পর্যটক ভ্যাকসিনের দু'টি ডোজই গ্রহণ করেছেন তাদের জার্মানিতে প্রবেশের পর কোয়ারেন্টাইনেও থাকতে হবে না। খবর বিবিসির।
তবে যারা ভ্যাকসিন গ্রহণ করেননি তাদের অবশ্যই ১০ দিনের কোয়ারেন্টাইনে থাকতে হবে। কিন্তু জার্মানিতে প্রবেশের পর কোয়ারেন্টাইনে থাকাকালীন সময়ে পঞ্চম দিনের মধ্যে যদি করোনার নেগেটিভ রিপোর্ট পাওয়া যায় তবে আর ১০ দিনের কোয়ারেন্টাইনে থাকতে হবে না।
এই পাঁচ দেশ এখন পর্যন্ত ‘ভাইরাস ভ্যারিয়েন্ট এরিয়া’ হিসেবে পরিচিত। কারণ এসব দেশে ডেল্টা এবং ডেল্টা প্লাস আশঙ্কাজনক হারে ছড়িয়ে পড়েছে। সর্বপ্রথম ভাইরাসের ডেল্টা ভ্যারিয়েন্ট ভারতে শনাক্ত হওয়ায় এটি করোনার ভারতীয় ধরন হিসেবেও পরিচিত। এখন পর্যন্ত করোনাভাইরাসের সবচেয়ে সংক্রামক ধরন এটি।
অন্য দেশ থেকে আসা জার্মান নাগরিকদের ওপর থেকেও নিষেধাজ্ঞা তুলে নেয়া হয়েছে। তবে তারা দেশে ফেরার পর তাদের অবশ্যই ১৪ দিনের কোয়ারেন্টাইনে থাকতে হবে বলে জানানো হয়েছে।
ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন আগামী ১৯ জুলাই থেকে করোনার বিধি-নিষেধ তুলে নেয়ার ঘোষণা দেয়ার কয়েক ঘণ্টা পরেই বিধি-নিষেধ শিথিলের ঘোষণা দিল জার্মানি।
জনসন বলেছেন, তার দেশ লকডাউন পুরোপুরি তুলে নেয়ার যে পরিকল্পনা করছে তাতে আগামী ১৯ জুলাইয়ের পর সেখানে কাউকে বাধ্যতামূলকভাবে মুখে মাস্ক পরতে হবে না এবং শারীরিক দূরত্বের বিধিও মানতে হবে না। বাড়ি থেকে কাজের যে নিয়ম গত ১৬ মাস ধরে চালু ছিল, সে সময় তাও বিলুপ্ত হয়ে যাবে।
ডাউনিং স্ট্রিটে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে বরিস জনসন বলেন, ‘আগামীতেও স্কুলগুলোকে নিরাপদ বলয়ে রাখা, ভ্রমণ এবং সেলফ আইসোলেশনের নিয়ম বলবৎ থাকবে।’ তিনি আরও বলেন, ‘টিকাদানে সাফল্যের কারণে সংক্রমণ এবং মৃত্যু কমিয়ে আনা সম্ভব হয়েছে। এ কারণেই স্বাস্থ্যবিধির আইনি বাধ্যবাধকতা তুলে নেয়া সম্ভব হচ্ছে।’
এর আগে এক বিবৃতিতে জনসন বলেন, করোনাভাইরাসকে সঙ্গে নিয়েই বেঁচে থাকা শিখতে হবে। করোনার দ্বিতীয় ঢেউয়ে ফের কাবু হয়ে পড়া ব্রিটেনে দীর্ঘ লকডাউনের পর পুরোদমে আনলকের আগে দেশবাসীর উদ্দেশে এমন বার্তা দেন এই ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী।
এই মুহূর্তে ব্রিটেনের ৬৪ শতাংশ প্রাপ্তবয়স্ককে দুই ডোজ করে টিকা নেওয়ার কাজ শেষ হয়েছে। অর্থাৎ ডেল্টা প্লাস ভ্যারিয়েন্টেকে সামলেই করোনাযুদ্ধে এগিয়ে যাওয়ার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে ব্রিটেন। করোনাভাইরাস সংক্রমণ এড়াতে আইনি বিধিনিষেধ আরোপ না করে বিষয়টিকে জনগণের ‘ব্যক্তিগত দায়িত্ব’ হিসেবে দেখতে চায় যুক্তরাজ্য সরকার। এমনকি মাস্ক পরা না পরার বিষয়টিও জনগণের বিবেচনার ওপরই ছাড়তে চায় কর্তৃপক্ষ।
ব্রিটিশ বার্তা সংস্থা বিবিসির সাংবাদিক অ্যান্ড্রু মারের উপস্থাপনার আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে উপস্থিত হয়ে এমন কথা জানান দেশটির আবাসন মন্ত্রী রবার্ট জেনরিক। তিনি মনে করেন, মাস্ক নিয়ে একেকজন একেক রকম প্রতিক্রিয়া দেখাতে পারেন কিন্তু আস্থাভাজন নাগরিকরা সুবিবেচনার পরিচয় দেবেন।
টিটিএন/এএসএম