ভারতে ফের তীব্র হচ্ছে কৃষক আন্দোলন, রাজভবন ঘেরাওয়ের ডাক
ভারতে করোনার দ্বিতীয় ঢেউ ওঠার পর কিছুটা থিতিয়ে পড়েছিল কৃষক আন্দোলন। কিন্তু একেবারে থেমে যায়নি। তার প্রমাণও পাওয়া গেছে। কেন্দ্রের তিনটি নতুন কৃষি আইনের প্রতিবাদে এবার দেশজুড়ে রাজভবন ঘেরাও করার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন আন্দোলনকারী কৃষকরা।
পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দোপাধ্যায়ের সঙ্গে দু’দিন আগেই দেখা করেন কৃষক নেতা রাকেশ টিকায়েত। তারপরই শুক্রবার ৪০টি কৃষক সংগঠনের যৌথমঞ্চ ‘সংযুক্ত কিষান মোর্চা’ জানিয়েছে, আগামী ২৬ জুন দেশজুড়ে রাজভবন ঘেরাও করবেন তারা।
গত বুধবার নবান্নে মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করেন দিল্লি সীমানায় চলা কৃষক আন্দোলনের নেতা রাকেশ টিকায়েত। এই আন্দোলনকে প্রথম থেকেই সমর্থন জানিয়েছে তৃণমূল। সংসদীয় দলও আন্দোলনকারীদের সঙ্গে দেখা করেছিল। কৃষক বিরোধী কৃষি আইন নিয়ে মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে টিকায়েতের কথা হয়েছে। পরে টিকায়েত মুখ্যমন্ত্রীকে উদ্দেশ করে বলেন, ‘মমতা বিজেপির হাত থেকে বাংলাকে বাঁচিয়েছেন, এবার দেশকে বাঁচাতে হবে।’
এরপরই মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘কৃষকদের দাবিপূর্ণ না হওয়া পর্যন্ত এই আন্দোলনের পাশে থাকব। মোদি সরকারকে হটানোই এখন লক্ষ্য। এজন্য বিরোধী শাসিত রাজ্যগুলোর মুখ্যমন্ত্রীদের সঙ্গে কথা বলব। জোট বেঁধে কি করা যায় তা নিয়ে আলোচনা করতে হবে।’
বিক্ষোভ চলাকালীন রাজ্যপালদের কালো পতাকা দেখিয়ে কেন্দ্রের বিতর্কিত কৃষি আইনের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানাবেন কৃষকরা। তারপর রাজ্যপালের মাধ্যমে রাষ্ট্রপতি রামনাথ কোবিন্দের কাছে স্মারকপত্র পাঠানো হবে।
কৃষক নেতা ইন্দ্রজিৎ সিং বলেছেন, ২৬ জুন ‘লোকতন্ত্র বাঁচাও দিবস’ হিসেবে পালন করবেন তারা। তিনি বলেন, ২৬ জুন কৃষক আন্দোলনের ৭ মাস পূর্ণ হবে। ১৯৭৫ সালের ওই দিনই দেশজুড়ে জরুরি অবস্থা জারি করা হয়েছিল। কিন্তু এখন দেশে অঘোষিত জরুরি অবস্থা চলছে।
দীর্ঘদিন ধরেই আন্দোলন করছেন কৃষকরা। একাধিকবার কেন্দ্রের সঙ্গে কৃষক নেতারা বৈঠক করলেও সমাধান মেলেনি। কেন্দ্র অবশ্য পরিষ্কারভাবে জানিয়েছে যে, আইনে কিছুটা বদল করা হলেও কৃষি আইন প্রত্যাহার করা হবে না। আর কৃষকরাও নিজেদের দাবিতে অনড়। বিশ্লেষকদের মতে, আন্দোলনের শুরুর দিকে কয়েক দফা আলোচনা করলেও আপাতত মুখ খুলছে না কেন্দ্র।
এর আগে ভারতের প্রজাতন্ত্র দিবসে রাজধানী দিল্লিতে কৃষক আন্দোলনে টিয়ার গ্যাস এবং লাঠি-চার্জ করে পুলিশ।
সে সময় ট্রাক্টর নিয়ে বিক্ষোভে অংশ নেন কৃষকরা। ওই কর্মসূচির আগে দিল্লির সিংঘু সীমানায় পুলিশের ব্যারিকেড ভাঙার অভিযোগ ওঠে বিক্ষোভরত কৃষকদের বিরুদ্ধে।
টিটিএন/এমকেএইচ