ওড়িশা থেকে ৬০ কিমি দূরে ইয়াস, দুপুরে আছড়ে পড়ার শঙ্কা

আন্তর্জাতিক ডেস্ক
আন্তর্জাতিক ডেস্ক আন্তর্জাতিক ডেস্ক
প্রকাশিত: ০৯:২৪ এএম, ২৬ মে ২০২১

বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট অতি প্রবল ঘূর্ণিঝড় ইয়াস-এর কেন্দ্রস্থল ভারতের ওড়িশার ধামরা থেকে মাত্র ৬০ কিলোমিটার দূরে অবস্থান করছে। আজ বুধবার (২৬ মে) দুপুরের দিকে এটি ওড়িশা উপকূলীয় অঞ্চলে আছড়ে পড়বে বলে জানিয়েছে দেশটির আবহাওয়া দফতর।

ভারতের আবহাওয়া দফতরের ভোর ৫টার বুলেটিনে জানানো হয়, অতি প্রবল ঘূর্ণিঝড় ইয়াস উত্তর এবং উত্তর-পশ্চিম দিক দিয়ে স্থলভাগের আরও কাছাকাছি চলে এসেছে। বঙ্গোপসাগরের ২০ ডিগ্রি ৭ মিনিট উত্তর অক্ষাংশ এবং ৮৭ ডিগ্রি ৪৫ মিনিট পূর্ব দ্রাঘিমায় তা অবস্থান করছে এটি।

আর পশ্চিমবঙ্গে দিঘা থেকে অতি প্রবল এই ঘূর্ণিঝড়ের কেন্দ্রস্থল মাত্র ১০০ কিলোমিটার দূরে অবস্থান করছে। তবে এটি সবচেয়ে বেশি কাছাকাছি অবস্থান করছে ওড়িশার। পারাদ্বীপ থেকে ৯০ কিলোমিটার পূর্ব এবং উত্তরপূর্বে রয়েছে ইয়াস।

আবহাওয়াবিদদের বরাত দিয়ে আনন্দবাজার পত্রিকার প্রতিবেদনে বলা হয়, অতি প্রবল ঘূর্ণিঝড় ইয়াস যে গতি নিয়ে স্থলভাগের দিকে এগিয়ে আসছিল, সর্বশেষ ৬ ঘণ্টায় তা আরও বেড়েছে। শেষ ৬ ঘণ্টায় ঘণ্টা প্রতি ১৫ কিলোমিটার বেগে ধেয়ে আসছে ইয়াস।

ফলে আছড়ে পড়ার সময় ইয়াসের সর্বোচ্চ গতিবেগ হতে পারে ১৫৫ কিলোমিটার। তবে আজ বুধবার ভোর সাড়ে ৫টা নাগাদ উত্তর বঙ্গোপসাগরে ঘূর্ণিঝড়ের গতিবেগ ছিল ১৩০ থেকে ১৪০ কিলোমিটার।

এদিকে, বাংলাদেশের আবহাওয়া অধিদফতর জানিয়েছে, উত্তর-পশ্চিম বঙ্গোপসাগর ও তৎসংলগ্ন এলাকায় অবস্থানরত অতি প্রবল ঘূর্ণিঝড় ‘ইয়াস’ আরও উত্তর-উত্তরপশ্চিম দিকে অগ্রসর হয়ে একই এলাকায় অবস্থান করছে।

দেশের সমুদ্রবন্দরগুলোর মধ্যে বাগেরহাটের মোংলা সমুদ্রবন্দরের সবচেয়ে কাছে রয়েছে ঘূর্ণিঝড়টি। মোংলা সমুদ্রবন্দর থেকে ৩২০ কিলোমিটার দক্ষিণ-দক্ষিণপশ্চিমে অবস্থান করছে ইয়াস।

আজ বুধবার (২৬ মে) সকালে ইয়াস সম্পর্কিত ১৫ নম্বর বিশেষ বুলেটিনে এসব তথ্য জানিয়েছে আবহাওয়া অধিদফতর।

তাতে বলা হয়েছে, অতি প্রবল ঘূর্ণিঝড় ইয়াস আজ ভোররাত ৩টায় (২৬ মে) চট্টগ্রাম সমুদ্রবন্দর থেকে ৫১৫ কিলোমিটার দক্ষিণপশ্চিমে, কক্সবাজার সমুদ্রবন্দর থেকে ৫০৫ কিলোমিটার দক্ষিণপশ্চিমে, মোংলা সমুদ্রবন্দর থেকে ৩২০ কিলোমিটার দক্ষিণ-দক্ষিণপশ্চিমে এবং পায়রা সমুদ্রবন্দর থেকে ৩৫০ কিলোমিটার দক্ষিণ-দক্ষিণপশ্চিমে অবস্থান করছিল। অতি প্রবল ঘূর্ণিঝড় কেন্দ্রের নিকট সাগর খুবই বিক্ষুব্ধ রয়েছে।

ঘূর্ণিঝড় কেন্দ্রের ৮৪ কিলোমিটারের মধ্যে বাতাসের একটানা সর্বোচ্চ গতিবেগ ঘণ্টায় ১৩০ কিলোমিটার, যা দমকা অথবা ঝড়ো হাওয়া আকারে ১৫০ কিলোমিটার পর্যন্ত বাড়ছে। ইয়াস আরও উত্তর-উত্তরপশ্চিম দিকে অগ্রসর হয়ে আজ দুপুর নাগাদ উত্তর উড়িষ্যা-পশ্চিমবঙ্গ উপকূল অতিক্রম করতে পারে। চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, মোংলা ও পায়রা সমুদ্রবন্দরকে ৩ নম্বর স্থানীয় সতর্ক সংকেত দেখাতে বলা হয়েছে।

অতি প্রবল ঘূর্ণিঝড় অতিক্রমের সময় খুলনা, সাতক্ষীরা, বাগেরহাট, পিরোজপুর, ঝালকাঠি, বরগুনা, পটুয়াখালী, বরিশাল, ভোলা, নোয়াখালী, লক্ষ্মীপুর, ফেনী, চাঁদপুর ও চট্টগ্রাম জেলাগুলোয় এবং তাদের অদূরবর্তী দ্বীপ ও চরগুলোয় ভারি থেকে অতি ভারি বৃষ্টিসহ ৮০ থেকে ১০০ কিলোমিটার বেগে দমকা অথবা ঝড়ো হাওয়া বয়ে যেতে পারে।

ইয়াস ও পূর্ণিমার প্রভাবে খুলনা, সাতক্ষীরা, বাগেরহাট, ঝালকাঠি, পিরোজপুর, বরগুনা, পটুয়াখালী, বরিশাল, ভোলা, নোয়াখালী, লক্ষ্মীপুর, ফেনী, চাঁদপুর ও চট্টগ্রাম জেলাগুলোর নিম্নাঞ্চল স্বাভাবিক জোয়ারের চেয়ে ৩ থেকে ৬ ফুট অধিক উচ্চতার জোয়ারে প্লাবিত হতে পারে।

উত্তর বঙ্গোপসাগরে অবস্থানরত সব মাছ ধরার নৌকা ও ট্রলারকে পরবর্তী নির্দেশ না দেয়া পর্যন্ত নিরাপদ আশ্রয়ে থাকতে বলা হয়েছে বলেও বিশেষ বুলেটিনে উল্লেখ করা হয়েছে।

এএএইচ/জেআইএম

টাইমলাইন  

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।