মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে জর্জ ফ্লয়েডকে স্মরণ
যুক্তরাষ্ট্রে পুলিশের হাতে কৃষ্ণাঙ্গ যুবক জর্জ ফ্লয়েড হত্যার এক বছর উপলক্ষে মিনেসোটার রাস্তায় নেমেছেন হাজারো মানুষ। আগামী ২৫ মে ফ্লয়েডের প্রথম মৃত্যুবার্ষিকী। কিন্তু তার আগেই রাস্তায় সমাবেশ করছেন বহু মার্কিনি। তাদের দাবি, জাতিগত নিপীড়ন বন্ধ করতে হবে। একই সঙ্গে, নিপীড়নে অভিযুক্তদের দ্রুত বিচারের আওতায় আনতে হবে।
জর্জ ফ্লয়েড ছিলেন আফ্রিকান আমেরিকান, যিনি গত বছরের ২৫ মে মিনেসোটা শহরের মিনিয়াপোলিসে পুলিশ হাতে আটক অবস্থায় মারা যান। পরে কৃষ্ণাঙ্গ আমেরিকানদের সঙ্গে পুলিশি আরচরণের প্রতিক্রিয়ায় শুরু হয় বিক্ষোভ, যা ‘ব্ল্যাক লাইভস ম্যাটার’ আন্দোলন নামে বিশ্বজুড়ে ছড়িয়ে পড়ে।
জর্জ ফ্লয়েড ২০২০ সালে কোভিড-১৯ মহামারির সময় চাকরি হারান। তিনি জাল নোট ব্যবহার করে সিগারেট কেনার অভিযোগে আটক হন। আটকের সময় শ্বেতাঙ্গ পুলিশ কর্মকর্তা ডেরেক চাওভিন ফ্লয়েডের ঘাড়ের ওপর হাঁটু গেড়ে বসে থাকেন। এ অবস্থাতেই ফ্লয়েডের মৃত্যু হয়। মৃত্যুর সময় তিনি বারবার বলছিলেন, ‘প্লিজ, আই ক্যান নট ব্রিথ’। পরে এ লাইনটিও বিশ্বব্যাপী আন্দোলনের হাতিয়ার হয়।
জর্জ ফ্লয়েডের মৃত্যু ঘটনায় শ্বেতাঙ্গ সাবেক পুলিশ কর্মকর্তা ডেরেক চাওভিনকে হত্যার দায়ে দোষী সাব্যস্ত করেছেন ১২ সদস্যের জুরি বোর্ড। গত মাসে এ রায় দেন মার্কিন আদালত। ফ্লয়েডকে হত্যায় পুলিশ কর্মকর্তা চাওভিনের বিরুদ্ধে আনা তিনটি অভিযোগই আদালতে প্রমাণ হয়েছে। ফলে কারাগারেই থাকতে হচ্ছে চাওভিনকে। এ মামলার রায় প্রকাশকে যুক্তরাষ্ট্র তথা বিশ্বের বর্ণবাদবিরোধী আন্দোলনের ইতিহাসে মাইলফলক বলে মন্তব্য করেছেন অনেকে।
যুক্তরাষ্ট্রে জাতিগত বা ধর্ম সংক্রান্ত বিদ্বেষমূলক অপরাধের শিকার হয়ে থাকেন অনেকে। আফ্রিকানদের মতো এর শিকার এশীয়রাও। তবে এবার এশিয়ান-আমেরিকানদের বিরুদ্ধে বিদ্বেষমূলক এই অপরাধ ঠেকাতে আইন পাস করেছে মার্কিন কংগ্রেস।
এর আগে, প্রস্তাবটি প্রতিনিধি পরিষদে ৩৬৪-৬২ ভোটে বিল আকারে পাস হয়। এরপর প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের স্বাক্ষরের মাধ্যমে সেটি আইনে পরিণত হয়। আইনে এশিয়ান-আমেরিকান ও প্যাসিফিক আইল্যান্ডারদের (এএপিআই) বিরুদ্ধে অপরাধ বন্ধে বেশ কিছু ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে। এই আইনের মাধ্যমে বিদ্বেষমূলক অপরাধগুলো দ্রুত যাচাই করা যাবে। আইনটির নাম রাখা হয়েছে ‘কোভিড-১৯ হেট ক্রাইম অ্যাক্ট’।
প্রতিনিধি পরিষদের স্পিকার ন্যান্সি পেলোসি বলেন, আইনটি যুক্তরাষ্ট্রে বিদ্বেষমূলক অপরাধ কমাতে সাহায্য করবে। তিনি আরও জানান, ২০২০ সালের মার্চ থেকে ২০২১-এর মার্চ পর্যন্ত এএপিআইদের সঙ্গে ৬ হাজার ৬০০ বিদ্বেষমূলক অপরাধের ঘটনা ঘটেছে।
সূত্র: আল-জাজিরা
কেএএ/জেআইএম