নিউইয়র্কে ‘বহুবচন’ এর সাহিত্য আয়োজন


প্রকাশিত: ০৩:৫৫ এএম, ০২ ডিসেম্বর ২০১৫

বিশুদ্ধ সাহিত্যই বেঁচে থাকে এবং তা পরখ করে মনন ও মহাকাল। মানুষ সেই সাহিত্যের আলোতেই নিজেকে খুঁজে। নিউইয়র্কে `বহুবচন` এর সাহিত্য আয়োজনে এমন কথাই বললেন আলোচকরা। রোববার সন্ধ্যায় জ্যামাইকার একটি অডিটোরিয়ামে অনুষ্ঠিত হয় এই আয়োজন। এবারের আয়োজনে মুখ্য কবি ছিলেন বুদ্ধদেব বসু, শক্তি চট্টোপাধ্যায়, আবিদ আজাদ ও আমেরিকান কবি শ্যারণ ওল্ডস।

অনুষ্ঠানের শুরুতেই ‘কি লিখি-কেন লিখি’ বিষয়ে মুখোমুখি হন অভিবাসের অন্যতম লেখক আবু রায়হান। তার সাথে কথোপকথনে অংশ নেন বিশিষ্ট নাট্যজন মুজিব বিন হক। আবু রায়হান বলেন, লেখককে মূল্যায়িত করতে হবে। লেখকের প্রাপ্য সম্মানি দিতে হবে। তিনি তার লেখার অভিজ্ঞতা বর্ণনা করেন বিশদভাবে। উঠে আসে তার সাম্প্রতিক বাংলাদেশ ভ্রমণের অভিজ্ঞতাও।

বুদ্ধদেব বসুর সাহিত্যকর্ম নিয়ে আলোচনা করেন কবি ইকবাল হোসেন। তিনি বলেন, বুদ্ধদেব বসু আমাদের আধুনিক মননে আলো ফেলেছেন খুব সাবধানে। তিনি আমাদেরকে বিদেশি সাহিত্যের সাথে পরিচয় করিয়েছেন নিজস্ব গরিমায়। বুদ্ধদেব বসুর কবিতা আবৃত্তি করেন সাঈদা পারভীন।

শক্তি চট্টপাধ্যায়ের কাব্যকর্ম নিয়ে কথা বলেন মুজিব বিন হক। তিনি বলেন, শক্তির শক্তি আমাদের বলীয়ান করেছে। শক্তি, কবিতাকে ছাড়তে চেয়েও পারেন নি। পারার সাধ্যও ছিল না তার। কারণ তিনি কবিতায় জীবনবাদকে বেছে নিয়েছিলেন। এরপর মুজিব বিন হক, শক্তির কবিতা পড়ে শোনান।

আবিদ আজাদের কবিতা নিয়ে কথা বলেন কবি ফকির ইলিয়াস। তিনি বলেন, আবিদ আজাদ ছিলেন বিশুদ্ধতম কবি। সেকথাই বলেছেন শামসুর রাহমান, আবদুল মান্নান সৈয়দ প্রমুখ। আবিদ বিশুদ্ধ ছিলেন বলেই আমাদের অনেকেই ওর কবিতা পড়েন ও পড়ান। তিনি বলেন, সাহিত্যে বিশুদ্ধতা ছিল, আছে এবং থাকবে। তা না থাকলে, খুব কম কবিতা লিখেই কেউ কেউ বিখ্যাত হতে পারতেন না।

কবি ফকির ইলিয়াস বলেন, আমাদের পরিশুদ্ধ পথেই এগোবার তাগিদ দিয়ে গেছেন কবি আবিদ আজাদ। আবিদ আজাদের কবিতা পড়েন মিতা কর্মকার।

আমেরিকান কবি শ্যারণ ওল্ডস এর কবিতা নিয়ে আলোচনা করেন কবি শামস আল মমীন। শ্যারণ কীভাবে খুব কাছে থেকে দেখা ঘটনা ও লোকাচারকে কবিতায় তুলে এনেছেন- সে বর্ণনা দেন শামস আল মমীন। শ্যারণ ওল্ডস এর কবিতা পড়েন প্রবাসের সৃজনশীল আবৃত্তিকার সাবিনা নীরু।

সৌদী আরবে মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত ফিলিস্তিনী কবি আরশাদ ফায়াদ এর কবিতা ও কাব্যভাবনা বিষয়ে কথা বলেন কবি শামস আল মমীন। তিনি এই কবির কয়েকটি কবিতাও পড়ে শোনান।

অনুষ্ঠানে স্বরচিত কবিতা পড়েন- স্বপ্ন কুমার, শামীম আরা আফিয়া, ছন্দা বিনতে সুলতান, ইকবাল হোসেন, লিয়াকত আলী, এবিএম সালেহউদ্দিন, আলম সিদ্দিকী, রওশন হাসান, শামস আল মমীন ও ফকির ইলিয়াস।

বুদ্ধদেব বসুর কবিতা আবৃত্তি করেন মুজিব বিন হক। শেষপর্বে পুঁথিপাঠ করেন আবু রায়হান। প্রায় তিনঘণ্টা স্থায়ী অনুষ্ঠানটি দর্শক-শ্রোতা নন্দিত হয়েছে বরাবরের মতোই।

এআরএস/পিআর

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।