পশ্চিমবঙ্গে লকডাউন : মদের দোকানে লম্বা লাইন

আন্তর্জাতিক ডেস্ক
আন্তর্জাতিক ডেস্ক আন্তর্জাতিক ডেস্ক
প্রকাশিত: ০৯:৪০ এএম, ১৬ মে ২০২১

ভারতের পশ্চিমবঙ্গে টানা ১৫ দিনের লকডাউন শুরু হচ্ছে আজ রোববার থেকে। শনিবার এই লকডাউন ঘোষণা করে রাজ্য সরকার। আর লকডাউন ঘোষণার পরপরই মদের দোকানগুলোতে হুমড়ি খেয়ে পড়েন অনেকে। মদের দোকানের ভিড় ছাড়িয়ে যায় নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের দোকানের ভিড়কে। স্বাস্থ্যবিধি উপেক্ষা করেই মদ কেনার জন্য ভিড় করতে থাকেন দোকানগুলোতে।

আনন্দবাজার পত্রিকা জানায়, বেশকিছু ক্ষেত্রে ছাড়সহ এই লকডাউন ঘোষণার পর শনিবার বিকেলে মাছ-মাংস, শাক-সবজি, মুদিখানা এবং ওষুধের দোকানে লাইন দিতে দেখা গেছে সাধারণ মানুষকে। কিন্তু মদের দোকানের লাইন যেন সবকিছুকে ছাপিয়ে গেল। অতি উৎসাহের জেরে কোথাও কোথাও বিশৃঙ্খলাও তৈরি হয়। তা সামাল দিতে পুলিশ নামাতে হয়। অনেকেই মদ কিনে বাড়ি ফেরেন মুখে বিজয়ীর হাসি নিয়ে। আবার কেউ কেউ অবশ্য হাতাশ হয়েছেন।

jagonews24

রোববার থেকে রাজ্যে ১৫ দিনের লকডাউন। সকাল ৭টা থেকে ১০টা পর্যন্ত শর্তসাপেক্ষে বাজার খোলা থাকবে। কিন্তু সেই তালিকায় মদের দোকান খোলার কোনো উল্লেখ নেই। ফলে শনিবার ঘোষণা শোনার পর থেকেই আচমকা মদ সরবরাহ বন্ধ হওয়ার আশঙ্কা করেন অনেকে। আগের বছরের লকডাউনে বন্ধ ছিল। এবারও বন্ধ থাকতে পারে, সেই আশঙ্কায় শনিবার মদের দোকানে মানুষের ভিড় ছিল উল্লেখ করার মতো।

এমন দৃশ্য শুধু কলকাতার নয়। পুরো রাজ্যেই একাধিক মদের দোকানে এমন চিত্র দেখা গেছে। হাওড়ার শিবপুরে একটি মদের দোকানের সামনে স্বাস্থ্যবিধি উপেক্ষা করেই ভিড় করেন অনেক মানুষ। কার আগে কে দোকানের জানালার সামনে পৌঁছবেন তা নিয়ে হুড়োহুড়ি বেধে যায়। পরিস্থিতি এমন হয় যে লাঠিচার্জ পর্যন্ত করতে হয় পুলিশকে।

jagonews24

একই ছবি ধরা পড়েছে হুগলির ব্যান্ডেল, চুঁচুড়া, চন্দননগর, শ্রীরামপুরসহ বিভিন্ন এলাকার মদের দোকানে। আশা-আশঙ্কার দোলাচলেই বিকেল ৫টা বাজার আগে থেকেই মদের দোকানে ভিড় জমান অনেক মানুষ।

এছাড়া পশ্চিম বর্ধমান জেলা, দক্ষিণ ২৪ পরগনা, পশ্চিম মেদিনীপুর, ঝাড়গ্রাম জেলা, উত্তর ২৪ পরগনার বিভিন্ন দোকানসহ জলপাইগুড়ি জেলার প্রায় সব মদের দোকানেই বেশ ভিড় ছিল।

স্বাস্থ্যবিধির তোয়াক্কা না করেই মদের দোকানে ক্রেতাদের ভিড় দেখা যায় কোচবিহারে। কোচবিহার শহরের একটি মদের দোকানের সামনে ভিড়ের মধ্যে থেকে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক ক্রেতা বললেন, ‘আগের বছর খুব অসুবিধা হয়েছিল। লকডাউনের জন্য মদের দোকান বন্ধ ছিল। তাই কালোবাজারে বেশি টাকা দিয়ে মদ কিনতে হয়েছিল। অনেক টাকা খরচ হয়েছিল। এবার তাই আর কোনো ঝুঁকি নিলাম না। বাড়তি মদ কিনে রেখেছি।’

jagonews24

লম্বা লাইন থাকা সত্ত্বেও অনেক জায়গায় সন্ধ্যা ৭টা বাজতেই মদের দোকান বন্ধ করতে নামাতে হয়েছে পুলিশ। তবে শেষ সময়ে মদ কিনতে না পেরে আক্ষেপ করতে দেখা গেছে অনেককে। অনেকেই আবার পুলিশ সদস্যদের অনুরোধ করে ১৫ মিনিট সময় বাড়ানোর।

এদিকে মদের দোকানের এই ভিড় সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে। এতে নানা রকমের মন্তব্য করেন নেটিজেনরা। মদ কেনার কষ্ট দেখে তাদের ‘সুরাসাধক’ আখ্যা দিয়েছেন অনেকে। কেউ কেই আবার বলেন, ‘এ তো আসলেই সাধনা!’

ইএ/এমকেএইচ

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।