মেলিন্ডার সঙ্গে বিচ্ছেদের পেছনে বিল গেটসের প্রাক্তন প্রেমিকা?

আন্তর্জাতিক ডেস্ক
আন্তর্জাতিক ডেস্ক আন্তর্জাতিক ডেস্ক
প্রকাশিত: ০৩:৪২ পিএম, ০৬ মে ২০২১

অডিও শুনুন

বিশ্বের সবচেয়ে ধনী ব্যক্তিদের একজন মাইক্রোসফটের প্রতিষ্ঠাতা বিল গেটস। তিনি সব সময়ই আলোচনায় থাকেন। তবে এবার ব্যতিক্রম ঘটনা নিয়ে সংবাদের শিরোনাম হয়েছেন বিল গেটস এবং তার স্ত্রী মেলিন্ডা গেটস।

সম্প্রতি দীর্ঘ ২৭ বছরের দাম্পত্য জীবনের ইতি টানার ঘোষণা দিয়েছেন এই ধনকুবের দম্পতি। এত বছর সংসার জীবনের পর তারা কেন এই সিদ্ধান্ত নিলেন তা পরিষ্কারভাবে জানা যায়নি। তবে বেশ কিছু গণমাধ্যম অবশ্য তাদের এই বিচ্ছেদের পেছনে বিল গেটসের প্রাক্তন প্রেমিকা অ্যান উইনব্ল্যাডকেই দায়ী করছে।

নিউইয়র্ক টাইমসের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, মেলিন্ডাকে বিয়ের পরেও প্রায় প্রতি বছরই নর্থ ক্যারোলিনার বীচে প্রাক্তন প্রেমিকার সঙ্গে সময় কাটিয়েছেন বিল গেটস। ১৯৯৪ সালে মেলিন্ডাকে বিয়ে করেন তিনি। সে সময়ই নাকি প্রাক্তন প্রেমিকার সঙ্গে সময় কাটানোর বিষয়ে মেলিন্ডার সঙ্গে বিল গেটসের অদ্ভূত এক চুক্তি হয়েছিল। ১৯৯৭ সালে নিজেই টাইম ম্যাগাজিনকে এ বিষয়টি পরিষ্কার করেন বিল গেটস।

এমনকি মেলিন্ডাকে বিয়ে করবেন কিনা সে বিষয়েও নাকি তিনি উইনব্ল্যাডের মতামত চেয়েছিলেন। এক সাক্ষাতকারে বিল গেটস বলেন, যখন আমি মেলিন্ডাকে বিয়ে করার কথা ভাবছিলাম তখন আমি উইনব্ল্যাডের মতামত জানতে চেয়েছিলাম। সে সময় মেলিন্ডাকে বিয়ের বিষয়ে ইতিবাচক সাড়া দিয়েছিল উইনব্ল্যাড।

এ বিষয়ে আগের স্মৃতি স্মরণ করতে গিয়ে উইনব্ল্যাড বলেন, আমি তাকে (বিল) বলেছিলামস সে (মেলিন্ডা) তোমার জন্য উপযুক্ত কারণ সে বেশ বুদ্ধিদীপ্ত একজন মানুষ।

গত সোমবার এক টুইট বার্তায় বিল গেটস এবং মেলিন্ডা গেটস তার ২৭ বছরের বিবাহিত জীবনের ইতি টানার ঘোষণা দেন। বিচ্ছেদের ঘোষণা দিতে গিয়ে তারা বলেন, আমরা যুগল হিসেবে আর পথ চলতে পারবো বলে আমাদের মনে হয় না। নিজেদের সম্পর্কের ওপর অনেক নিরীক্ষা ও চিন্তাভাবনার পর আমরা আমাদের সংসারের ইতি টানার সিদ্ধান্ত নিয়েছি।

১৯৮০-এর দশকের শেষ দিকে মেলিন্ডা বিল গেটসের মাইক্রোসফট কোম্পানিতে যোগ দিলে দুজনের পরিচয় হয়। পরে তারা প্রণয়ে জড়ান, সেই প্রণয় ১৯৯৪ সালে গড়ায় পরিণয়ে।

jagonews24

এই দম্পতি ২০০০ সালে বিল অ্যান্ড মেলিন্ডা গেটস ফাউন্ডেশন গঠন করেন। নিজেদের বেশির ভাগ সম্পত্তিই তারা এই সংস্থায় বিনিয়োগ করেন। ২০২০ সালের হিসাব অনুযায়ী এই সংস্থার মোট সম্পত্তির পরিমাণ ৫ হাজার ১০০ কোটি ডলার। এই দাতব্য প্রতিষ্ঠানটি দারিদ্র্য, রোগ-ব্যাধি এবং বৈষম্যের বিরুদ্ধে কাজ করে যাচ্ছে।

ফোর্বস ম্যাগাজিনের দেয়া তথ্য অনুযায়ী, বিশ্বের চতুর্থ ধনী ব্যক্তি হলেন বিল গেটস। তার সম্পদের পরিমাণ ১২৪ বিলিয়ন ডলার। এই দম্পতির বিচ্ছেদের খবরে অনেকেই হতবাক হয়ে গেছেন। তাদের দাম্পত্য জীবনে কখনও বড় ধরনের সমস্যা দেখা দেয়নি। বিভিন্ন সময় হাসি-খুশি ভাবেই এই দম্পতিকে এক সঙ্গে দেখা গেছে।

দীর্ঘ সময় ধরে এক সঙ্গে থাকার পর দুজনের এমন সিদ্ধান্ত স্বাভাবিকভাবেই সকলকে অবাক করেছে। তবে এর বাইরে আরও একটি বিষয় নিয়ে এখন মানুষের কৌতূহল দেখা দিয়েছে। আর সেটা হলো- বিল এবং মেলিন্ডার এই বিশাল সম্পদের কী হবে? এর ভাগ কে কতটুকু পাবেন?

ফোর্বসের তথ্য অনুযায়ী, প্রায় সাড়ে ১৩ হাজার কোটি ডলারের মালিক বিল গেটস। বিশ্বের চতুর্থ ধনী ব্যক্তি তিনি। এই সম্পত্তির মধ্যে আবার মেলিন্ডারও অংশ রয়েছে। বিল গেটস নিজ দেশ যুক্তরাষ্ট্রে বেসরকারিভাবে সবচেয়ে বেশি কৃষিজমির মালিক। তার মালিকানায় রয়েছে ২ লাখ ৪২ হাজার একর কৃষিজমি। তবে দেশটির ১৮টি অঙ্গরাজ্যে ছড়িয়ে থাকা এসব কৃষিজমিতে যৌথ মালিকানা রয়েছে মেলিন্ডারও। এর মধ্যে লুইজিয়ানায় ৬৯ হাজার ৭১ একর, আরকানসাসে ৪৭ হাজার ৯২৭ একর ও নেব্রাস্কায় ২০ হাজার ৫৮৮ একর কৃষিজমি রয়েছে।

এদিকে যৌথভাবে বিল এবং মেলিন্ডার মোট সম্পত্তির পরিমাণ ১৪ হাজার ৬০০ কোটি ডলার। যৌথ সম্পত্তি ছাড়াও তাদের নিজস্ব আলাদা সম্পত্তিও রয়েছে। তবে শুধুমাত্র যৌথ সম্পত্তিই দুজনে ভাগ করে নেবেন।

বিল এবং মেলিন্ডার পরিচিতজনরা বলছেন, বিচ্ছেদের পর এই বিশাল পরিমাণ সম্পত্তি দুজনের মধ্যে ভাগ করা মোটেই সহজ নয়। তাই বিল গেটসের সঙ্গে বিচ্ছেদের আপস-রফা হিসেবে মেলিন্ডা কী পাবেন, সে বিষয়ে চলছে জল্পনা।

কিং কান্ট্রি সুপিরিয়র কোর্টে এ নিয়ে দুজনে মামলাও করেছেন। যৌথ সম্পত্তি তাদের মধ্যে সমান ভাগ হবে বলে জানিয়েছেন এক আইনজীবী। তবে তার পরিমাণ কত হবে? তা এখনও পরিষ্কার নয়।

টিটিএন/জিকেএস

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।