শিয়া মসজিদে হামলার ঘটনায় আটক ৩ জন রিমান্ডে


প্রকাশিত: ০১:৪০ পিএম, ২৮ নভেম্বর ২০১৫

বগুড়ার শিবগঞ্জ উপজেলার হরিপুর গ্রামের শিয়া মসজিদে (মসজিদ-ই-আল মোস্তফা) গুলি ও হতাহতের ঘটনায় আটক ৩ জনকে জিজ্ঞাসাবাদের ৫ দিনের রিমান্ডে নেয়া হয়েছে।

এর আগে শনিবার সকালে তাদের আটক করেছে র্যাব-১২। আটকরা হলেন, শিবগঞ্জ উপজেলার গোপীনাথপুর গ্রামের হাফিজার রহমানের ছেলে মিনহাজ (১৮), আলাদীপুর গ্রামের আবুল হোসেনের ছেলে শাহিনুর রহমান (২১) ও আমতলী গ্রামের আবুল কালামের ছেলে রায়হান মিয়া (২৮)।
 
র‌্যাব-১২ বগুড়া ক্যাম্পের অধিনায়ক শনিবার সন্ধ্যায় মেজর আফম আজমল জিজ্ঞাসাবাদের জন্য তিনজনকে আটকের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

শিয়া মসজিদে হামলার ঘটনায় এ নিয়ে মোট ৬ জনকে গ্রেফতার ও আটক দেখানো হলো। বগুড়া গোয়েন্দা পুলিশের ওসি আমিরুল ইসলাম জানান, শুক্রবার রাতে আটক মোলামগাড়ি এমদাদুল উলুম মাদ্রাসার পরিচালক শামছুল আলমকে ওই হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় গ্রেফতার দেখানো হয়েছে। এছাড়া শুক্রবার ভোরে শিবগঞ্জ থানা পুলিশের হাতে আটক মাদ্রাসা ছাত্র জুয়েল ও মাঝিহট্ট ইউনিয়নের সৈয়দ দামগারা এলাকার সাবেক সেনা সদস্য ও জেএমবির ক্যাডার আনোয়ার হোসেনকেও গ্রেফতার দেখানো হয়েছে।
 
এই তিনজনকে শনিবার দুপুরে আদালতে পাঠিয়ে রিমান্ডের আবেদন জানানো হয়েছে। রাতে এই রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত রিমান্ড মঞ্জুর হয়নি।

এদিকে গত শুক্রবার বগুড়ার জেলা প্রশাসক আশরাফ উদ্দীন নিহত মোয়াজ্জেমের পরিবারকে ২০ হাজার টাকা এবং আহত ৩ জনকে ১০ হাজার টাকা করে আর্থিক সহায়তা প্রদান করেছেন। এছাড়াও স্থানীয় এমপি শরিফুল ইসলাম জিন্নাহ ব্যক্তিগত তহবিল থেকে নিহত ও  আহতদের আর্থিক সহায়তা দিয়েছেন।

বগুড়ার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আরিফুর রহমান মন্ডল জানান, অভিযুক্তদের শিবগঞ্জ থানায় জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে।
এদিকে দুর্বৃত্তদের গুলিতে মোয়াজ্জিন নিহত ও তিনজন আহত হওয়ার ঘটনায় ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেছে এলাকাবাসী। তারা যে কোনো মূল্যে এ ঘটনার সঙ্গে জড়িতদের গ্রেফতার করে সর্বোচ্চ শাস্তির দাবি জানান। দুর্বৃত্তের গুলিতে নিহত ও আহতদের স্বজন এবং এলাকাবাসীর সঙ্গে কথা বলে শনিবার এমনটায় জানা গেছে।  

নিহত মোয়াজ্জেমের ছেলে মো. শাহাজুল ইসলাম জানান, তার বাবা কোনো অন্যায় করেননি। তিনি কারো টাকা-পয়সাও মেরে নেননি। তার সঙ্গে জমিজমা নিয়েও কারো কোনো বিরোধ নেই। তিনি ধর্মের বাইরে কোনো কথা বলেননি। তিনি অন্য কোনো ধর্মের অবমাননাও করেননি। সব সময় তিনি ধর্ম-কর্ম নিয়ে ব্যস্ত থাকতেন। তবে তাকে কেন হত্যা করা হলো ? তার বাবার খুনিদের চেহারা তিনি দেখতে চান। একই সঙ্গে তাদের দৃষ্টান্তমূলক সর্বোচ্চ শাস্তির দাবিও করেন শাহাজুল।

নিহতের স্ত্রী কমেলা বিবি জানান, তার স্বামীর কোনো দোষ ছিল না। গ্রামের কারো সঙ্গে তার ঝগড়া-বিবাদ ছিলো না। শিয়া সম্প্রায়ের অনুসারী হয়ে সেই রীতি অনুযায়ী তিনি ইবাদত-বন্দেগি পালন করে আসছিলেন। কেন তারা গুলি করে নিরীহ এই মানুষটি হত্যা করলো ? এ সময় তিনি কান্নায় ভেঙে পড়েন।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বেশ ক’জন গ্রামবাসী আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর প্রতি অসন্তোষ প্রকাশ করে জানান, ঘটনার দীর্ঘ সময় পার হলেও আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী এখনও পর্যন্ত ঘটনার সঙ্গে সরাসরি জড়িত কাউকে গ্রেফতার করতে পারেনি।

বগুড়ার পুলিশ সুপার আসাদুজ্জামান জানান, পুলিশ তৎপর রয়েছে। অপরাধীদের খুব শিগগিরই গ্রেফতার করা সম্ভব হবে।

এমএএস/আরআইপি

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।