দেশ প্রতিনিধিত্বহীনভাবে পরিচালিত হচ্ছে
দেশ ‘প্রতিনিধিত্বহীনভাবে’ পরিচালিত হচ্ছে। সেজন্য উন্নয়নের পথ থেকে দূরে সরে যাচ্ছে দেশ। দেশে রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা না থাকলে নিরাপত্তা বিষয়ক নানা ধরনের জটিলতা ও বিপর্যয় নেমে আসতে পারে।
বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার সঙ্গে চীনের কমিউনিস্ট পার্টির বিশেষ কূটনৈতিক দূত এইচ ই চেন ফেংজিয়ানের বৈঠক চলাকালে এমন আশঙ্কার কথা উঠে এসেছে বলে জানিয়েছে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. আবদুল মঈন খান।
এইচ ই চেন ফেংজিয়ান ইন্টারন্যাশনাল ডিপার্টমেন্ট অব দ্যা কমিউনিস্ট পার্টি অব চায়নার (আইডিসিপিসি) ভাইস মিনিস্টার হিসেবেও রয়েছেন।
মঈন খান গণমাধ্যমের কাছে বলেন, ‘বৈঠকে সাম্প্রতিক পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনা হয়েছে। আজ বাংলাদেশে বিরোধী দলের যে পরিস্থিতি এবং দেশের রাজনীতির যে অবস্থা তাতে দেশ কিভাবে প্রতিনিধিত্বহীনভাবে পরিচালিত হচ্ছে তা আলোচিত হয়েছে।’
তিনি বলেন, ‘বর্তমান পরিস্থিতিতে বাংলাদেশ যে উন্নয়নের পথ থেকে দূরে সরে যাচ্ছে এবং রাজনৈতিক স্থিতিশীলতার অভাবে অর্থনীতি, সমাজনীতি এবং নিরাপত্তা বিষয়ক যে নানারকম জটিলতা দেখা যেতে পারে সেগুলো আলোচনায় উঠে এসেছে। এই বিষয়গুলোকে তাদের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছি।’
চীনের সঙ্গে বাংলাদেশের গভীর বন্ধুত্বের বিষয়টি স্মরণ করিয়ে দেয়া হয়েছে বলে জানান মঈন খান। তিনি বলেন, ‘বিএনপির পক্ষ থেকে যে কথাটি জোর দিয়ে বলা হয়েছে তা হলো- আধুনিক চীন এবং বাংলাদেশের ভেতরে যে নতুন করে সম্পর্কের সূত্রপাত হয়েছিলো, সেটি ছিলো শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের আমলে। তিনিই আজ থেকে ৪০ বছর আগে নতুন এই সম্পর্কের সূচনা করেছিলেন। তারই ধারাবাহিকতায় আজকে শুধু বাংলাদেশ এবং চীনের জনগণের মধ্যেই নয়, বিএনপি তথা কমিউনিস্ট পার্টি অব চায়নার মধ্যে একটি অত্যন্ত বিশ্বস্ত সম্পর্ক সৃষ্টি হয়েছে। যা দিন দিন গুরুত্বপূর্ণভাবে সামনের দিকে এগিয়ে চলেছে।’
বিএনপির এই নেতা বলেন, ‘বেগম জিয়া যখন প্রধানমন্ত্রী ছিলেন তখন চীনের সঙ্গে যে গুরুত্বপূর্ণ উন্নয়ন প্রকল্পগুলো নেওয়া হয়েছিলো, সেগুলো অত্যন্ত সফলতার সঙ্গে অনেকগুলো সমাপ্ত হয়েছে এবং বাকি উন্নয়ন প্রকল্প এখনও চালু রয়েছে। ভবিষ্যতে বিএনপি দেশ পরিচালনার দায়িত্ব পেলে চীনের সঙ্গে বাংলাদেশের এই উন্নয়নের সম্পর্ক আরো জোরদার করবে।’
কমিউনিস্ট পার্টি অব চায়না বিএনপির সঙ্গে থাকা দলগত সম্পর্ক তিনটি প্রক্রিয়ায় শক্তিশালী করার প্রস্তাব দিয়েছে বলে জানান মঈন খান।
তিনি বলেন, ‘তাদের এই প্রস্তাবে আমরা একমত হয়েছি। প্রথমত, দু’দেশের নেতাদের মধ্যে এক্সচেঞ্জ ভিজিট, দ্বিতীয়ত, দলের যারা কর্মী রয়েছেন তাদের মধ্যে চেইন ইন প্রোগ্রামের প্রচলন করা। তৃতীয়ত, আমরা যাতে চীনের উন্নয়ন প্রতিষ্ঠানগুলোতে গিয়ে লেখাপড়া করতে পারি, গবেষণা চালাতে পারি এবং থিঙ্কট্যাংক শক্তিশালী করতে পারি। প্রয়োজনে বেসরকারি যে প্রতিষ্ঠান রয়েছে, তার মাধ্যমে চায়না এবং বাংলাদেশ স্টাডি উন্নয়ন করতে পারি।’
‘চীনের সহযোগিতায় শহীদ জিয়াউর রহমানের সময়ে সামরিক বাহিনীর যে উন্নয়ন হয়েছিলো, খালেদা জিয়া রাষ্ট্রক্ষমতায় গেলে তা আরো জোরদার হবে’, এই বিষয়টিও চীনের বিশেষ দূতকে অবহিত করা হয়েছে বলে জানান মঈন খান।
এর আগে সন্ধ্যা ৬টায় বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার সঙ্গে বৈঠকে বসেন এইচ ই চেন ফেংজিয়ান। সন্ধ্যা ৭টায় বৈঠক শেষ হয়। এ সময় বিএনপি নেতাদের মধ্যে ড. আবদুল মঈন খান, ড. ওসমান ফারুক, সাবিহ উদ্দিন আহমেদ, রিয়াজ রহমান উপস্থিত ছিলেন।
আরএম/একে/পিআর