লকডাউনের মধ্যে অভিজাতদের গোপন পার্টির ভিডিও ফাঁস

আন্তর্জাতিক ডেস্ক
আন্তর্জাতিক ডেস্ক আন্তর্জাতিক ডেস্ক
প্রকাশিত: ০৭:৫৭ পিএম, ০৬ এপ্রিল ২০২১

করোনাভাইরাস মহামারির কারণে গত বছর থেকে ফ্রান্সে সব ধরনের হোটেল, রেস্টুরেন্ট, বার বন্ধ। তবে দেশটির অভিজাত শ্রেণির লোকেরা আইনকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে গোপনে ঠিকই পার্টি করে চলেছেন। সম্প্রতি তাদের এ ধরনের পার্টির কিছু ভিডিও ফাঁস হয়েছে, যেখানে দাবি করা হচ্ছে, ফরাসি মন্ত্রীরাও এসব পার্টিতে অংশ নিয়েছেন। এরপর থেকেই বিষয়টি নিয়ে সমালোচনার ঝড় বয়ে যাচ্ছে দেশটিতে।

গোপন পার্টি কেলেঙ্কারির এ ঘটনা প্রথমে প্রকাশ্যে আসে স্থানীয় টিভি চ্যানেল এম৬-এর একটি প্রতিবেদনে। সেখানে গোপন ক্যামেরায় ধারণ করা ভিডিওতে দুটি বিলাসবহুল রেস্টুরেন্টে মাস্কবিহীন অতিথিদের পার্টি করতে দেখা যায়।

ভিডিওতে দেখা যায়, ছদ্মবেশী এক সাংবাদিক একটি বেসরকারি ক্লাবে প্রবেশ করছেন। সেখানে সাদা গ্লাভস পরা এক ওয়েটার তাকে স্বাগত জানান। এসময় ছদ্মবেশী সাংবাদিককে জিজ্ঞেস করা হয়, তিনি কার আমন্ত্রণে এসেছেন। তাকে আরও বলা হয়, একবার ভেতরে গেলে আর কোনও করোনা নেই।

ভিডিওতে হোটেল ব্যবস্থাপনার দায়িত্বে থাকা এক ব্যক্তিকে ব্যখ্যা করতে শোনা যায়, তাদের মেন্যু শুরু হয় জনপ্রতি ১৬০ ইউরো (১৬ হাজার টাকা প্রায়) থেকে। আর ৪৯০ ইউরো (৪৯ হাজার টাকা প্রায়) দিলে অতিথিরা ফোয়ি গ্রাসের (হাঁসের কলিজা থেকে তৈরি খাবার) পাশাপাশি জিঞ্জার সসে চুবিয়ে ট্রাফল (একধরনের ছত্রাক) ও নরওয়ে লবস্টার (একজাতীয় গলদা চিংড়ি) উপভোগ করতে পারবেন, সঙ্গে থাকবে শ্যাম্পেইনে গলা ভেজানোর সুযোগও।

Paris-2.jpg

সম্প্রতি করোনাভাইরাস মহামারির তৃতীয় ঢেউ শুরু হয়েছে ফ্রান্সে। সংক্রমণ ঠেকাতে সীমিতভাবে লকডাউনও দেয়া হয়েছে গত সপ্তাহে। এর মধ্যেই অভিজাতদের বিলাসবহুল পার্টির খবর সামনে আসার পর বিষয়টি নিয়ে নড়েচড়ে বসেছে কর্তৃপক্ষ।

প্যারিস প্রসিকিউটরের এক মুখপাত্র বলেন, আমরা মানুষকে বিপদগ্রস্ত করা এবং অননুমোদিত কাজের অভিযোগের বিষয়টি খতিয়ে দেখছি। স্বাস্থ্যবিধি অমান্য করে এই আয়োজন হয়েছিল কি-না আমরা তা যাচাই করব এবং আয়োজক ও অংশগ্রহণকারী কারা ছিলেন তা শনাক্ত করব।

ফাঁস হওয়া ভিডিওতে আরেকটি পার্টিতে অতিথিদের গালে গাল মিশিয়ে একে অপরকে চুম্বন করতে দেখা যায়।

একপর্যায়ে ওই পার্টির আয়োজককে বলতে শোনা যায়, এই সপ্তাহে আমি দুই বা তিনটি রেস্তোরাঁয়, তথাকথিত গোপন রেস্তোরাঁয় খেয়েছি। সেখানে বেশ কয়েকজন মন্ত্রীও ছিলেন।

পরিচিত সাজসজ্জা দেখে রেস্টুরেন্টটিকে পরে শনাক্ত করা হয়েছে। জানা যায়, পালাইস ভিভিয়েন নামে রেস্টুরেন্টটির মালিক পিয়েরে জ্যঁ-শ্যালেকন।

শ্যালেকনের আইনজীবী অবশ্য পরে স্বীকার করেছেন, ওই ভিডিওতে শুনতে পাওয়া কণ্ঠস্বর তার ক্লায়েন্টেরই। তবে পার্টিতে সরকারের মন্ত্রীরা থাকার বিষয়টি নাকি তিনি মজা করে বলেছিলেন।

ফ্রান্সে অভিজাতদের এই গোপন পার্টি কেলেঙ্কারি ফাঁস হওয়ার পর সমালোচনার ঝড় উঠেছে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমগুলোতে। গত সোমবারও দেশটিতে ‘অন ভেউত লেস নমস’ বা ‘আমরা নাম চাই’ হ্যাশট্যাগ ট্রেন্ডিং ছিল।

ফরাসি সরকারের মুখপাত্র গ্যাব্রিয়েল আত্তাল বলেছেন, কর্তৃপক্ষ অবৈধ পার্টির খবরগুলো কয়েক মাস ধরেই তদন্ত করছে এবং এ পর্যন্ত অন্তত ২০০ জন সন্দেহভাজনকে শনাক্ত করা হয়েছে। আইনভঙ্গ করায় তাদের কঠোর সাজা দেয়া হবে।

সূত্র: সিএনএন

কেএএ/এমএস

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।