পা ভাঙা নিয়ে এবার মমতাকে আব্বাসের কটাক্ষ
ভারতের পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী ও তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের পা ভাঙা নিয়ে সমালোচনায় মুখোর বিরোধীরা। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় পা ভাঙার ঘটনা নিয়ে নাটক করছেন বলে এবার অভিযোগ করেছেন ফুরফুরা শরিফের পিরজাদা আব্বাসউদ্দিন সিদ্দিকি। সোমবার (৫ এপ্রিল) বিকেলে হুগলির চাঁপদানিতে সংযুক্ত মোর্চার প্রার্থীদের সমর্থনে প্রচারে গিয়ে তিনি বলেন, ‘মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় পা নিয়ে নাটক করছেন। ব্যান্ডেজ বাঁধা পায়ের উপর পা তুলে দিয়ে নাচাচ্ছেন। তাতে তার মুখে কোনো প্রতিক্রিয়া দেখা যাচ্ছে না।’
আনন্দবাজার পত্রিকা জানায়, চাঁপদানির গুমোডাঙ্গায় ওই সভায় বিধানসভার বিদায়ী বিধায়ক তথা কংগ্রেস প্রার্থী আব্দুল মান্নান, শ্রীরামপুরের কংগ্রেস প্রার্থী অলোকরঞ্জন বন্দ্যোপাধ্যায় উপস্থিত ছিলেন।
এসময় ইন্ডিয়ান সেকুলার ফ্রন্টের (আইএসএফ) প্রধান আব্বাসউদ্দিন বলেন, ‘সামনে বাংলার জনগণ বসে আছেন। তাদের দিকে পা! তুলে দিয়েছেন, জেতালেও মুখে লাথি মারব, হারলেও মুখে লাথি মারব এমন ভাব তার। যারা এত বড় নাটক করেন, বাংলার মানুষকে বোকা ভাবেন, তারাই বোকা হবেন।’
বিধানসভা ভোটে তৃণমূল এবং বিজেপিকে ভোট না দেয়ার আবেদন জানিয়ে আব্বাস বলেন, ‘পার্কে লেখা থাকে ফুলে হাত দেবেন না। তেমনই ইভিএমে ঘাসফুল আর পদ্মফুলের বোতামে হাত দেবেন না। কিন্তু আমাদের হাত চিহ্নে হাত দিন, কোনো বারণ নেই। কাস্তে-হাতুড়িতে হাত দিন, কোনো বারণ নেই। ভাইজানের খামে হাত দিন, কোনো বারণ নেই। ওই হাত দিয়ে খামে চিঠি আসবে কর্মসংস্থানের। হাতুড়িতে শ্রমিকদের কাজ মিলবে।’
নন্দীগ্রাম জমি রক্ষা আন্দোলনে পুলিশি অভিযান প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘‘আমরা জানতাম, নন্দীগ্রামে সিপিএম মিথ্যা কথা বলছে। কিন্তু মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নিজে কী বললেন! নন্দীগ্রামের ঘটনা ঘটিয়েছেন, শুভেন্দু আর শুভেন্দুর বাবা। শুভেন্দু আর শুভেন্দুর বাবা তখন কোন দলে ছিলেন? সিঙ্গুরেও তাপসী মালিক হত্যাকাণ্ডের পেছনে এদেরই হাত আছে। তৃণমূল ১০ বছর ক্ষমতায় ছিল। সিপিএমের একটা লোককেও ধরতে পারল না। প্রমাণ করতে পারল না। এখন বলছে, সিঙ্গুরে কারখানা করবে ২০ কাঠা করে জমিতে। সুযোগ দিলে তো। আমাদের নিয়ে যারা খেলা করে, তাদের আমরা মাফ করব না।’
ফুরফুরা শরিফ প্রসঙ্গেও তৃণমূলনেত্রীর সমালোচনা করেছেন তিনি। বলেন বলেন, ‘আপনি একগাদা ঢপ (আশ্বাস) দিলেন আর আমরা বিশ্বাস করলাম। ফুরফুরার তাবিজ দেখিয়ে দেখিয়ে বেড়ালেন। আমার সব দাদাহুজুরের পাগলগুলো দিদি দিদি দিদি করছেন। আমরা ভাবছি, এ তো আপনজন এসে গেছে মনে হয়। ও বাবা আমার বাড়িতেই পুলিশ পাঠিয়েছে। আমি বাংলার নাগরিকদের সুপ্রিম কোর্টে যেতে বলেছি, এটা কি অন্যায় করেছি? আপনি যখন নেত্রী বলছেন নিজেকে, নাগরিকদের এতোটুকু মেজাজ সহ্য করতে পারছেন না। আপনার মতো এরকম মানসিক সমস্যাকে আর আর একুশে দায়িত্ব দেব না।’
এর আগে শনিবার (৩ এপ্রিল) দক্ষিণ ২৪ পরগনার রায়দিঘিতে প্রচারে গিয়ে ‘মিম’ প্রধান আসাদউদ্দিন ওয়েইসি এবং আব্বাসকে উদ্দেশ্য করে মমতা বন্দোপাধ্যায় বলেন, ‘হায়দরাবাদ থেকে বিজেপির এক বন্ধু এসেছেন। সঙ্গে ফুরফুরার এক চ্যাংড়াকে নিয়েছেন।’ রাজ্যে সংখ্যালঘু ভোট আদায়ে চক্রান্তের তার এই অভিযোগ যে আব্বােউদ্দিনের দিকে, সেটা স্পষ্টই ছিল তার বক্তব্যে।
এরপরই মমতাকে উদ্দেশ্যকে করে আব্বাস বলেছিলেন, ‘তিনি অহংকারী, মানুষকে মানুষ মনে করেন না। মুসলমানরা তার সঙ্গে নেই বলেই তিনি উল্টোপাল্টা বলছেন।’
ইএ/এমকেএইচ