রক্তবন্যার মধ্যেও জমকালো পার্টিতে ব্যস্ত মিয়ানমারের সেনাশাসকরা

আন্তর্জাতিক ডেস্ক
আন্তর্জাতিক ডেস্ক আন্তর্জাতিক ডেস্ক
প্রকাশিত: ০৫:৫৯ পিএম, ২৯ মার্চ ২০২১

অডিও শুনুন

মিয়ানমারে জান্তাপরিচালিত নিরাপত্তা বাহিনী গত শনিবার গুলি করে হত্যা করেছে শতাধিক গণতন্ত্রকামী মানুষকে। এর কয়েক ঘণ্টা পরেই সরকারি অভিযানের থাইল্যান্ডে পালিয়ে যেতে বাধ্য হয়েছেন কয়েক হাজার মানুষ। এসব ঘটনায় ব্যাপক সমালোচনা হচ্ছে বিশ্বজুড়ে। তবে তাতে দেশটির সামরিক শাসকরা খুব একটা কর্ণপাত করছেন বলে মনে হচ্ছে না। গত ১ ফেব্রুয়ারি সামরিক অভ্যুত্থানের পর থেকে যে দিনটিতে সবচেয়ে বেশি রক্তপাত হয়েছে, সেদিনই স্যুট-টাই পরে জমকালো পার্টিতে অংশ নিতে দেখা গেছে মিয়ানমারের জেনারেলদের।

গত শনিবার ছিল দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে জাপানি দখলদার বাহিনীর বিরুদ্ধে মিয়ানমারের সেনাবাহিনীর প্রতিরোধের বার্ষিকী। মিয়ানমার চন্দ্রবর্ষের শেষ দিনও ছিল সেটি। এদিন প্যাগোডায় যাওয়াসহ বিভিন্নভাবে উদযাপন করেন বৌদ্ধ ধর্মানুসারীরা।

তবে আনন্দঘন উদযাপনের বদলে ওই দিন যেন হত্যাযজ্ঞে মেতেছিল মিয়ানমার সামরিক বাহিনী! তাদের গুলিতে একদিনেই প্রাণ হারায় শিশুসহ অন্তত ১১৪ জন।

Myanmar

একদিকে যখন এই হত্যাযজ্ঞ চলছে, অন্যদিকে তখন আনন্দফূর্তিতে ব্যস্ত ছিলেন মিয়ানমারের সেনাশাসকরা। সশস্ত্র বাহিনী দিবস উপলক্ষে শনিবার সন্ধ্যায় বিলাসবহুল পার্টির আয়োজন করেছিল দেশটির সেনাবাহিনী। সেখানে হাস্যোজ্জ্বল অবস্থায় দেখা যায় সাদা স্যুট-কালো বো টাই পরা জান্তা সরকারের প্রধান সিনিয়র জেনারেল মিন অং হ্লাইংকে।

সেদিন সকালে মিয়ানমারের রাজধানী নেপিদোতে সামরিক বাহিনীর কুচকাওয়াজ অনুষ্ঠানে অংশ নিয়ে তিনি ঘোষণা দিয়েছিলেন, ‘গণতন্ত্রের জন্য’ লড়াই চালিয়ে যাবেন। অথচ জান্তাপ্রধানের এই ঘোষণার কিছুক্ষণ পরেই রক্তবন্যা শুরু হয়ে যায় গোটা দেশে। অন্তত ৪৪টি শহরে বিক্ষোভকারীদের ওপর গুলি চালায় নিরাপত্তা বাহিনী।

এখানেও শেষ হয়নি! হত্যাকাণ্ডের ভুক্তভোগী পরিবারগুলো যখন চোখের অশ্রু বিসর্জন দিচ্ছে, তখনও গুলি চালানো হয়েছে তাদের ওপর। রোববার বাগো এলাকায় নিহত এক শিক্ষার্থীর শেষকৃত্য অনুষ্ঠানে নিরাপত্তা বাহিনী গুলি চালিয়েছে বলে জানিয়েছে বার্তা সংস্থা রয়টার্স।

Myanmar

জান্তা সরকারের হত্যাযজ্ঞ থেকে দেশটির শিশুরাও রেহাই পাচ্ছে না। গত শনিবার নিহতদের মধ্যে অন্তত ছয়টি শিশু ছিল, যাদের বয়স ১০ থেকে ১৬ বছরের মধ্যে।

ইউনিসেফের তথ্যমতে, মিয়ানমারে এবারের জান্তাবিরোধী বিক্ষোভে অন্তত ৩৫ শিশু প্রাণ হারিয়েছে।

অ্যাসিসট্যান্স অ্যাসোসিয়েশন ফর পলিটিক্যাল প্রিজনার্স জানিয়েছে, গত রোববার নিরাপত্তা বাহিনীর গুলিতে ১৩ বিক্ষোভকারী নিহত হয়েছেন। এ নিয়ে সেখানে মৃতের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে অন্তত ৪৫৯ জন।

সূত্র: সিএনএন

কেএএ/এমএস

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।