ফাঁসিতেই সমাধান নয় : ঠিক করতে হবে মগজ
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাউদ্দিন কাদের (সাকা) চৌধুরীর বিরুদ্ধে করা মানবতাবিরোধী অপরাধ মামলার অন্যতম সাক্ষী শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক মো. সালেহ উদ্দিন বলেছেন, কেবল কয়েকটা ফাঁসি দিয়েই সকল সমস্যার সমাধান হবে না। আমরা একটা বড় ধরনের বিপদের মধ্যে আছি। মানুষের মগজ ঠিক করতে না পারলে সঙ্কট থেকে উত্তরণ অসম্ভব।
যুদ্ধাপরাধী সাকার ফাঁসি কার্যকরের পর জাগো নিউজকে দেয়া এক প্রতিক্রিয়ায সিলেট মেট্রোপলিটন ইউনিভার্সিটির উপাচার্য অধ্যাপক সালেহ উদ্দিন এসব কথা জানান।
সাকা চৌধুরীর ফাঁসি কার্যকর প্রসঙ্গে তিনি বলেন, আমি খুশি। তবে উচ্ছ্বসিত নই। ফাঁসি কার্যকরের ফলে মিছিল করে উল্লাস প্রকাশ করার মতো কিছু নেই। কারণ আমাদের আরো অনেক কাজ বাকি আছে।
ড. সালেহ উদ্দিন বলেন, সাকা চৌধুরীর মামলার একজন সাক্ষী হিসেবে রায় কার্যকর হওয়ায় স্বাভাবিকভাবেই আমি খুশি। এতে নির্যাতিত পরিবারগুলো কিছুটা শান্তি পাবে। এছাড়া বিচারহীনতার যে সংস্কৃতি তা থেকেও উত্তরণ ঘটবে। কিন্তু এতে মৌলিক সমস্যার সমাধান হবে না। ১০/২০টা ফাঁসি দিয়ে এই গোষ্ঠিকে উৎখাত করা সম্ভব নয়।
তিনি আরো বলেন, অনেক বড় বিপদের মধ্যে আছি আমরা। এই সঙ্কট থেকে উত্তরণের জন্য অনেক দূরে যেতে হবে। মানুষের মগজ ঠিক করতে হবে। দেশের মানুষকে আধুনিক ও বিজ্ঞান শিক্ষায় শিক্ষিত করে তুলতে হবে। মানুষ শিক্ষিত না হলে, মগজ ঠিক না হলে ধর্মের অপব্যবহার আরো বাড়বে। তবে ধমান্ধরা যুক্তি ও বিজ্ঞান মানবে না। ভিন্নমত সহ্য করবে না। অশিক্ষিত-অন্ধকার সমাজেই ধর্ম নিয়ে হানাহানি বেশি হয়।
সত্তরের দশকে চট্রগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের মেধাবী ছাত্র সালেহ উদ্দিন বলেন, এখন কোনো কিছু বললেই যদি তা কোনোভাবে ধর্মের সঙ্গে সম্পৃক্ত হয়ে যায়, তখন তাকে নাস্তিক আখ্যা দেয়া হচ্ছে। ধর্মানুভূতিতে আঘাতের অভিযোগ তোলা হচ্ছে। হত্যা করা হচ্ছে। কেবল ফাঁসি দিয়ে তো এই সমস্যাগুলো সমাধান করা যাবে না।
উদাহারণ দিয়ে বলেন, আমি যদি এখন ইতিহাস নিয়েও লিখি আর তা যদি কোনোভাবে অন্য ধর্মের ইতিহাসের সঙ্গে সামান্যতম সাংঘর্ষিক হয় তখন আর রক্ষে নেই।
এই উগ্রধর্মান্ধতা মোকাবেলায় রাজনৈতিক দলগুলোর সদিচ্ছা নিয়েও প্রশ্ন তুলেন সালেহ উদ্দিন। এছাড়া বুদ্ধিভিত্তিতক গোষ্ঠির নির্লিপ্ততার বিষয়টি উল্লেখ করে তিনি বলেন, আমাদের কাছে নিজেদের প্রাণ বড় মায়ার জিনিস। কোনো কিছু বলে আমরা নিজের প্রাণটাকে ঝুঁকির মুখে ফেলতে চাই না। এছাড়া আমরা কার জন্য মরবো ? আমাদের কথা শোনার মতো রাজনৈতিক দল কই ?
ছামির মাহমুদ/এআরএ/পিআর