রাশেদ রিন্টু-এর কবিতা
সন্মিত্রা
তোমাকে একটা নাম দিব ভাবছি
তোমার সাথে কি নাম যায় বলো তো?
তুমি কি জলের নিচে থাকো?
তবে নাম দিলাম ‘জলকন্যা’।
নাকি জলের নিচে ভেলকি-বাজিতে আসো-যাও?
তবে দিলাম ‘জলপরী’
নাকি সাত রঙে মন রাঙিয়ে, বেদনার রঙটুকুই গাঢ় করো?
তাহলে দিলাম ‘রঙধনু’; না, না, ‘নীলিমা’।
তুমি কি দূর আকাশের উজ্জ্বল নক্ষত্র?
তাহলে ‘অনুরাধা’
নাকি কৃষ্ণের বাঁশির সুরে ছুটে চলো?
না, তোমাকে আর ‘রাঁধা’ বলা যায় না।
(এটা পর জনমের জন্য তোলা রইলো)
তবে কি রবি ঠাকুরের দোয়াতের কালিতে আঁচড়ে পড়?
তাহলে দিলাম ‘মালঞ্চ’-এর নীরজা।
তুমি কি ঠাকুর ঘরে নিজেকে সঁপতে পারো?
তাহলে দিলাম ‘অঞ্চিতা’।
নাকি তুমি মা-দুর্গার মতো, যে কখনোই পরাজিত হওনি
তাহলে তো ‘অপরাজিতা’ দেওয়াই যায়।
না গো...
তোমাকে কোনো নামেই বেঁধে রাখা যায় না।
তুমি তো জ্যোৎস্না পান করা পাখি ‘চকোরী’, তুমি চৈত্র মাসের রবিশস্য ‘চৈতালী’
তুমি স্বরস্বতীদেবীর মতো ‘কাদম্বরী’, বিদ্যুতের ‘ঝিলিক’
তুমি আলো-আঁধারীর খেলায় মেতে ওঠা ‘সান্ধ্যলতা’
তুমি ‘দৃষ্টি’, তুমি ‘ধৃতি’ তুমি ‘নীলাঞ্জনা’
তুমি পরশের ‘প্রতিমা’ ফুলের ভারে লুটিয়ে পড়া ‘মাধবীলতা’
শেষ নেই তোমার, নামের শেষ নেই।
এতো কিছুর পরে তোমাকে নাম দিলাম, ‘সন্মিত্রা’
বেঁধে রেখো বন্ধনের মাত্রা।
দীক্ষা
আমি দীক্ষা চাই,
যে রুপ মেলে শুধু শিক্ষাই
যার বিকাশে ছড়াই কাশফুলে শুভ্র
ছোটে মন মাঝি এক দুই তিন সিংহল সমুদ্র
যে মেরুদণ্ডে দণ্ডি কাটে,
সংস্কৃতি আর শিক্ষা ।
মানুষ হয়ে জন্মে তবু সকলি শেকলে আটা
শেকল ছিঁড়ে সকল উজান ভাটায়
আমি দীক্ষা চাই,
শুধুই দীক্ষা।
আশা
সকালের সূর্য, তীব্র আলোক রশ্মি
তোমার জীবনে ছড়াক জ্যোতি।
শেষ বিকেলের মৃদু আলোয়,
ভালোবাসা জমুক ভালো।
মেঠো পথ আর রাখালের বাঁশি,
এসবই তোমারই জন্য
তোমারই মুখে ফোটাতে হাসি।
বৃষ্টিতেও বাজাইও ভালো লাগার সুর
সাথে বেদনাগুলো করো দূর
শীতের কুয়াশার চাদরের ভাঁজে
স্বপ্ন সাজিও মনের মাঝে
হ্যা, সন্মিত্রা...
তোমারই জন্য এই প্রকৃতি, সূর্য, চাঁদ, তারা
সবই এসেছে তোমার জীবনকে দিতে সাড়া।
রাঙিয়ে নিও
ভরিয়ে নিও
দু’হাত ভরে গায়ে মেখো অনন্ত সুখ,
তোমার জন্য এই ধরাই নেই কোনো দুখ।
এইচআর/এমএস