ইসলামে সুদ হারাম


প্রকাশিত: ১০:৩১ এএম, ২১ নভেম্বর ২০১৫

সুদের আরবি হচ্ছে ‘রিবা’। রিবা শব্দের আভিধানিক অর্থ হচ্ছে অতিরিক্ত, বর্ধিত ইত্যাদি। মূলধনের অতিরিক্ত কিছু গ্রহণ করাকে সুদ বলে। ইসলামী অর্থ ব্যবস্থায় সমাজ ও রাষ্ট্রের জন্য সুদ একটি মারাত্মক অভিশাপ। মুমিনের পারস্পরিক সহানুভূতি নষ্ট হয়, ধ্বংস হয় মানবতা, সীমাহীন অর্থলিপ্সা ও স্বার্থপরতা জন্ম নেয়। লোভ-লালসার মাত্রা এতটাই বেড়ে যায় যে, সুদি কারবারীরা মানুষের জানমাল ও ইজ্জত নিয়ে ছিনিমিনি খেলতেও দ্বিধা করে না। যাতে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয় সাধারণ জনগণ। দুঃখজনক হলেও সত্য, বর্তমান যুগে সুদ মহামারী আকার ধারণ করেছে। সমগ্র বিশ্ব আজ এর রাহুগ্রাসে পতিত। সুদের কুফল সমাজের সর্বত্র বিরাজমান। সুতরাং সুদ থেকে বেঁচে থাকা অতীব জরুরি।এ কারণেই ইসলামে সুদকে হারাম ঘোষণা করা হয়েছে।

এ প্রসঙ্গে মহান রাব্বুল আলামিন কুরআনে কারিমে ইরশাদ করেন, ‘আমি ব্যবসায়কে হালাল করেছি এবং সুদকে হারাম ঘোষণা করেছি।’ (সুরা বাক্বাবারা : আয়াত ২৭৫)

অন্য আয়াতে এসেছে, ‘হে ঈমানদারগণ! তোমরা চক্রবৃদ্ধি হারে সুদ খেয়ো না আর আল্লাহকে ভয় করতে থাকো, যাতে তোমরা কল্যাণ অর্জন করতে পারো।’ (সুরা আল-ইমরান : আয়াত ১৩০)।

সুদের ভয়াবহতার ব্যাপারে আল্লাহ বলেন, ‘যারা সুদ খায় তারা কিয়ামতে দণ্ডায়মান হবে, যেভাবে দণ্ডায়মান হয় ওই ব্যক্তি, যাকে শয়তান আসর করে মোহাবিষ্ট করে দেয়। তাদের এ অবস্থার কারণ এই যে, তারা বলেছে ক্রয়-বিক্রয়ও তো সুদের মতোই। অথচ আল্লাহ তায়ালা ক্রয়-বিক্রয় বৈধ করেছেন এবং সুদ হারাম করেছেন। অতঃপর যার কাছে তার পালনকর্তার পক্ষ থেকে উপদেশ এসেছে এবং সে বিরত হয়েছে, আগে যা হয়ে গেছে, তা তার। তার ব্যাপার আল্লাহর ওপর নির্ভরশীল। আর যারা পুনরায় সুদ নেয়, তারাই জাহান্নামে যাবে। তারা সেখানে চিরকাল অবস্থান করবে, (সুরা বাক্বাবারা : আয়াত ২৭৫)।

কোনো মানুষ সুদের কার্যক্রম পরিহার না করা মানে ইসলামের সঙ্গে যুদ্ধ ঘোষণার শামিল। আল্লাহ অন্যত্র বলেন, ‘হে মুমিনগণ! তোমরা আল্লাহকে ভয় করো এবং সুদের যেসব বকেয়া আছে, তা পরিত্যাগ করো, যদি তোমরা ঈমানদার হয়ে থাকো। অতঃপর যদি তোমরা পরিত্যাগ না করো, তবে আল্লাহ ও তাঁর রাসুলের সঙ্গে যুদ্ধ করতে প্রস্তুত হয়ে যাও। কিন্তু যদি তোমরা তাওবা করো, তবে তোমরা নিজের মূলধন পেয়ে যাবে। তোমরা কারো প্রতি অত্যাচার করো না এবং কেউ তোমাদের প্রতি অত্যাচার করবে না, (সুরা বাকারা : আয়াত ২৭৮-২৭৯)

উপরিউক্ত আলোচনা থেকে জানা যায় সুদ ইসলামে বড়ধরণের গোনাহ। তাইতো আল্লাহ তাআলা ব্যক্তি, পরিবার, সামাজিক, অর্থনৈতিক ও রাষ্ট্রীয় পর্যায়ের সবক্ষেত্রে সুদসহ যাবতীয় শোষণ প্রক্রিয়াকে ইসলামে হারাম ঘোষণা করেছে। বিধায় সুদ থেকে বেঁচে থাকা প্রত্যেক মুমিন মুসলমানের ঈমানি দায়িত্ব। আল্লাহ তাআলা সমগ্র মুসলিম উম্মাহকে সুদের ভয়াবহতা থেকে হিফাজত করুন। আমিন।

ইসলামে লেখা পাঠাতে ই-মেইল : [email protected]

জাগোনিউজ২৪.কমের সঙ্গে থাকুন। কুরআন-হাদিস মোতাবেক আমলি জিন্দেগি যাপন করে আল্লাহর নৈকট্য অর্জন করুন। আমিন, ছুম্মা আমিন।

এমএমএস/আরআইপি

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।