ট্যুরিজম মেলা যেন পর্যটন কেন্দ্র
হরতাল থাকায় আগের দিন জমে ওঠেনি। শুক্রবার সকাল থেকেই অবস্থার পরিবর্তন। ভ্রমণপিপাসু মানুষদের ভিড়ে জমে ওঠে রাজধানীর বসুন্ধরার ইন্টারন্যাশনাল কনভেশন সিটি।
দর্শকদের পদচারণায় মেলার দ্বিতীয় দিনে পুরো কনভেনশন সিটি যেন মুখরিত। ভ্রমণপ্রিয় মানুষদের কেউ কেউ এককভাবে আবার কেউ কেউ দল বেঁধে যান মেলা প্রাঙ্গনে। মেলার বিষয়বস্তু তুলে ধরতে আয়োজকদের যেমন উৎসাহের কমতি নেই, আবার দর্শকরা নানা বিষয়ে জানতেও অতিউৎসাহী।
বৃহস্পতিবার থেকে বসুন্ধরায় ইন্টারন্যাশনাল কনভেশন সিটিতে তিন দিনব্যাপী শুরু হয়েছে বাংলাদেশ ট্রাভেল অ্যান্ড ট্যুরিজম ফেয়ার-২০১৫। তিনদিনের এই মেলায় অংশ নিয়েছে দেশি-বিদেশি ট্যুর অপরারেটর, ট্রাভেল এজেন্ট, বিমান সংস্থা, স্থানীয় ও আন্তর্জাতিক হোটেল, রিসোর্টসহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান। শনিবার পর্যন্ত চলা মেলায় এসব প্রতিষ্ঠানের ১৮০টি প্যাভেলিয়ান থাকছে।
ট্যুর অপারেটরস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (টোয়াব) ওই মেলার আয়োজন করে। মেলায় ঘুরতে আসা দর্শকদের মন যেন উড়ু উড়ু। আয়োজকদের উষ্ণ অভ্যর্থনা, লোভনীয় অফার, রঙ্গিন লিফলেট আর আকর্ষণীয় নানা পুরস্কার সহজেই মন কাড়ছে দর্শকদের।
মেলাকে প্রাণবন্ত করে তুলতে প্রায় প্রতিটি প্যাভেলিয়ানে অত্যাধুনিক প্রযুক্তিও ব্যবহার করা হচ্ছে, যাতে সহজেই দেশ এবং বিদেশের বিভিন্ন পর্যটনকেন্দ্র, আবাসিক হোটেল ও যোগাযোগ ব্যবস্থা সম্পর্কে ধারণা দেয়া যায়।
প্যাভেলিয়ানগুলো যেন একেকটি পর্যটন কেন্দ্র। প্যাভেলিয়ান ঘুরে ঘুরে দর্শকদের মাঝে পর্যটন বিষয়ে আগ্রহ বাড়ছে।
মেলায় ঘুরতে আসা নর্থ সাউথ ইউনিভার্সিটির আইন বিভাগের শিক্ষার্থী হৃদয় তালুকদার জাগো নিউজকে বলেন, ভাবতেই পারিনি মেলায় এসে ভ্রমণ সম্পর্কে এত কিছু জানতে পারব। সত্যিই অবাক লাগছে। ভ্রমণ আমার প্রিয় শখ। এখানে এসে সেই শখ আরো কয়েকগুণ বেড়ে গেছে। দেশ-বিদেশের বিভিন্ন পর্যটনকেন্দ্র এবং ভ্রমণ সম্পর্কে যেসব তথ্য এখানে পাওয়া যাচ্ছে, তাত ভ্রমণপ্রিয় মানুষদের অনেক উপকারে আসবে।’
হৃয়ের সঙ্গে থাকা একই ইউনিভার্সিটির ছাত্রী মোহনা বলছিলেন, এবার শীতে বন্ধুরা মিলে কক্সবাজার ঘুরতে যাবো। মেলায় এসে অনেক কিছু জানতে পারলাম, যা ভ্রমণে সহায়ক হবে। মেলায় এসে একটি কোম্পানির হয়ে বিশেষ ছাড়ে হোটেল বুকিংও দিয়ে ফেললাম। মেলায় এটি একটি বড় সুযোগ বলে মনে করি।
টোয়াব (ট্যুর অপারেটরস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ)-এর প্রথম ভাইস প্রেসিডেন্ট রাফিউজ্জামান জাগো নিউজকে বলেন, বাংলাদেশে ভ্রমণ দিনকে দিন জনপ্রিয় হয়ে উঠছে। বাংলাদেশ পর্যটনের দেশ। এখানে অনেক কিছুই পর্যটকদের মন কাড়ে, যা অনেক দেশেই নেই। বাংলাদেশের পর্যটন ক্ষেত্র বিদেশির কাছে তুলে ধরতে ১ জানুয়ারি থেকে শুরু হবে ‘ভিজিট বাংলাদেশ’।
ডিসেম্বর থেকে জানুয়ারি মাস হচ্ছে বাংলাদেশের ভ্রমণের উপযোগী সময়। সুতরাং এই সময় এমন একটি মেলা পর্যটকদের বিশেষ উপকারে আসবে বলে মনে করি।
প্রিয়ন্তি এডিট অ্যান্ড ইফেক্টস নামের ট্যুর এজেন্সির প্রধান নির্বাহী মনোয়ার হোসেন পাঠান বলেন, সুন্দর এবং মনোরম পরিবেশে মেলা অনুষ্ঠিত হচ্ছে। মেলায় ঘুরতে আসা দর্শকরাও এবারের মেলা এবং ভ্যেনু নিয়ে সন্তুষ্ট বলে মনে করি। প্রতিটি প্যাভেলিয়ান তাদের সর্বোচ্চ সুযোগ-সুবিধা নিয়ে এবারের মেলায় অংশ নিয়েছে। মেলায় অংশ নেয়া দর্শকরা ভ্রমণ সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য সংগ্রহ করতে পারবে বলে মনে করছি।
গ্লোরি হলিডে-এর প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা আনোয়ার হোসেন বলেন, হরতাল থাকার কারণে মেলার প্রথম দিন তেমন জমে ওঠেনি। তবে শুক্রবার সকাল থেকেই মেলা জমে উঠেছে। দর্শক এবং ভ্রমণপ্রিয়দের কাছ থেকে ব্যাপক সাড়া পাচ্ছি। গত ৫ বছরে আমার এজেন্সির মাধ্যমে প্রায় ৫০ হাজার পর্যটক ভ্রমণ করে। এবারে মেলা আমাদের সুনাম এবং কার্যক্রমকে আরো সমৃদ্ধ করবে।
এএসএস/এসএইচএস/পিআর